উত্তরা ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেডের (উত্তরা ফাইন্যান্স) মূলধন ঘাটতি প্রায় ৭১২ কোটি টাকা। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরের আর্থিক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে আজ সোমবার কোম্পানিটির নিরীক্ষক এই তথ্য প্রকাশ করেছেন। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত উত্তরা ফাইন্যান্সের ২০২০ সালের আর্থিক প্রতিবেদন দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশিত ছিল না। ফলে কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা বহু বছর ধরে অনেকটা অন্ধকারে ছিলেন। আজ (সোমবার) ডিএসইর মাধ্যমে নিরীক্ষক কোম্পানির ২০২০ সালের হিসাব বছরের ওপর তার মতামত প্রকাশ করেছেন।
নিরীক্ষক জানিয়েছেন, ২০২০ সালে কোম্পানির সুদ বাবদ লোকসান হয়েছে ৬১ কোটি ১৮ লাখ টাকা। একই বছরে মোট পরিচালন লোকসান দাঁড়িয়েছে ১০৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা। অন্যান্য ব্যয় বাদ দিয়ে শেয়ারপ্রতি ৩৩ টাকা ১৩ পয়সা হারানোর পর কর পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ৪৩৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। নিরীক্ষক আরও জানিয়েছেন, ২০২০ সালে কোম্পানির মূলধন ঘাটতি ৭১১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে যোগ্য মূলধন ঘাটতি ৫৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকা এবং ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের ওপর ভিত্তি করে প্রয়োজনীয় মূলধন ঘাটতি ৬৫২ কোটি ২১ লাখ টাকা।
২০২০ সালে উত্তরা ফাইন্যান্স তার সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইউএফআইএল ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডকে ১৪৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া আরও ১ হাজার ৩৭৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোম্পানি লেনদেন অনুমোদন, ঋণগ্রহীতার সতর্কতা ও অভ্যন্তরীণ নীতি অনুসরণ না করে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিধান লঙ্ঘন করেছে। ২০২০ সাল পর্যন্ত কোম্পানিটির অনুমোদনহীন বকেয়া লেনদেনের পরিমাণ ১ হাজার ৬৫৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এর মধ্যে বেশির ভাগই স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছে। অনুমোদনহীন ও দীর্ঘ বছর সমন্বয় না হওয়ার কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক কোম্পানির বিপরীতে ২ হাজার ১৫০ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্লক দায় রেকর্ড করেছে।
ডিএসইকে নিরীক্ষক আরও জানিয়েছেন, ২০২০ সালের ৩ আগস্ট ব্যাংকের জারি করা এফআইডি সার্কুলার নম্বর ৮ অনুযায়ী, বকেয়া সম্পদ এক বছরের বেশি সময় সমন্বয়হীন থাকলে তার বিপরীতে ১০০ শতাংশ সঞ্চিতি গঠন করতে হয়। তবে উত্তরা ফাইন্যান্স এ ক্ষেত্রে কোনো সঞ্চিতি গঠন করেনি।
১৯৯৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত উত্তরা ফাইন্যান্সের অনুমোদিত মূলধন ৫০০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ১৩১ কোটি ৪৮ লাখ ২০ হাজার টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ১৩ কোটি ১৪ লাখ ৮১ হাজার ৫০৪টি। এর মধ্যে ৫৫.৫৬ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারী, বিদেশি বিনিয়োগকারী ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছে।