সম্প্রতি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি কোম্পানির শেয়ারের দর অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কোম্পানিগুলো হলো—জেনেক্স ইনফোসিস পিএলসি, সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস লিমিটেড, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট লিমিটেড ও প্রগতি ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূত্রে গতকাল বুধবার এই তথ্য জানা গেছে। তথ্য অনুযায়ী, কোনো ধরনের মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়া শেয়ারের দাম বৃদ্ধি পেয়ে কোম্পানিগুলোর কর্তৃপক্ষ এ তথ্য চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে জানিয়েছে। সিএসই ২৯ সেপ্টেম্বর সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস ও সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট, ৩০ সেপ্টেম্বর জেনেক্স ইনফোসিস এবং ৬ অক্টোবর প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর অস্বাভাবিকভাবে বাড়ার কারণ জানতে চিঠি পাঠায়। কোম্পানিগুলো জানিয়েছে, কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই শেয়ার দর বৃদ্ধি পেয়েছে।
জেনেক্স ইনফোসিস পিএলসি: জেনেক্স ইনফোসিস বাংলাদেশের বৃহত্তম কল সেন্টার পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। ২০১৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ডিএসই গত ২৯ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরি থেকে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করেছে। স্থানান্তরের মূল কারণ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৩ শতাংশ লভ্যাংশ বিতরণ।
- পরিশোধিত মূলধন: ১২০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা
- শেয়ার সংখ্যা: ১২ কোটি ৪ লাখ ৫০ হাজার ২১
- শেয়ার হোল্ডিং: উদ্যোক্তা পরিচালক ৩০.০৫%, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ১৯.৯৮%, বিদেশি বিনিয়োগকারী ০.০৯%, সাধারণ বিনিয়োগকারী ৪৯.৮৮%
শেয়ার দর: ২১ সেপ্টেম্বর ২৩ টাকা ৯০ পয়সা, ৭ অক্টোবর ৩০ টাকা ৫০ পয়সা। ১৫ কার্যদিবসে দর বেড়েছে ৬ টাকা ৬০ পয়সা বা ২৭.৬২ শতাংশ।
সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস লিমিটেড: উনুস গ্রুপের প্রতিষ্ঠান সোনালী পেপার ১৯৭৭ সাল থেকে কাগজ ও বোর্ড পণ্য উৎপাদন করছে। ২০২২-২৩ প্রথম প্রান্তিকে রাজস্ব বেড়েছে ১৭%, নিট মুনাফা বেড়েছে ৯০%। অপারেশনাল আয় ৩০% বেড়ে ৪ কোটি ৮২ লাখ টাকা, অন্যান্য আয় ১১২% বেড়ে ২৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। কর ও প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ড পরিশোধের পর নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ২৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
শেয়ার দর: ২১ সেপ্টেম্বর ২৪৯ টাকা ২০ পয়সা, ৭ অক্টোবর ২৯৫ টাকা ৩০ পয়সা। ১৫ কার্যদিবসে বেড়েছে ৪৬ টাকা ১০ পয়সা বা ১৮.৫০%। সোনালী পেপার নিয়ে কারসাজির দায়ে ১৬ সেপ্টেম্বর জেনেক্স ইনফোসিসের চেয়ারম্যান আদনান ইমামসহ ৯ জনকে বিএসইসি জরিমানা করেছে।
প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড: ২০০৬ সালে পুনঃতালিকাভুক্ত এ ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা, পরিশোধিত মূলধন ৩২ কোটি ৫৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ৩১ জুলাই পর্যন্ত শেয়ার হোল্ডিং: উদ্যোক্তা পরিচালক ৪০.৬২%, প্রাতিষ্ঠানিক ২২.৬৮%, সাধারণ বিনিয়োগকারী ৩৬.৭০%।
শেয়ার দর: ২২ সেপ্টেম্বর ৫৭ টাকা ৩০ পয়সা, ৭ অক্টোবর ৮০ টাকা ৭০ পয়সা। ১৫ কার্যদিবসে বেড়েছে ৪০ টাকা ৮৪ পয়সা বা ৪৩%।
সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট লিমিটেড: সেবা ও আবাসন খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি ২০০৮ সালে পুঁজিবাজারে প্রবেশ করে। ২০২৩-২৪ হিসাববছরে ১৫% নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। সমন্বিত ইপিএস ১ টাকা ৭৫ পয়সা, এনএভিপিএস ৩৩ টাকা ৭১ পয়সা।
শেয়ার দর: ৯ সেপ্টেম্বর ৩১ টাকা ১০ পয়সা, ৭ অক্টোবর ৪৪ টাকা ১০ পয়সা। ১৫ কার্যদিবসে বেড়েছে ১৩ টাকা বা ৪১.৮০%। ডিএসই কর্তৃপক্ষ চার কোম্পানির শেয়ার দর বৃদ্ধিকে অস্বাভাবিক হিসেবে উল্লেখ করেছে। পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিনিয়োগকারীরা সতর্ক থাকলে ভালো। মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই হঠাৎ দর বৃদ্ধি ঝুঁকির ইঙ্গিত দিতে পারে।