বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) দুই যুগ পুরনো মিউচুয়াল ফান্ড বিধিমালা সংস্কার করে নতুন খসড়া প্রকাশ করেছে। নতুন বিধিমালায় বিদ্যমান মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডগুলোকে সংখ্যাগরিষ্ঠ ইউনিটহোল্ডারের মতামতের ভিত্তিতে অবসায়ন বা রূপান্তরের সুযোগ রাখা হয়েছে। খসড়া নিয়ে অংশীজনদের মতামত নেওয়ার পর এটি চূড়ান্ত করা হবে।
নতুন খসড়া বিধিমালায় ‘বিদ্যমান মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড’ নামে একটি অধ্যায় সংযোজন করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সরকারি গেজেট প্রকাশের পর নতুন কোনো মেয়াদি স্কিম চালু করা যাবে না। ভবিষ্যতে শুধুমাত্র বেমেয়াদি স্কিম অনুমোদনযোগ্য হবে। বিদ্যমান মেয়াদি স্কিমের জন্য রাখা হয়েছে বিশেষ বিধান। গেজেট প্রকাশের ছয় মাসের মধ্যে কোনো স্কিমের ইউনিটপ্রতি গড় লেনদেনমূল্য স্কিমের ক্রয়মূল্য বা বাজারে ঘোষিত নিট সম্পদমূল্যের তুলনায় ২৫ শতাংশের বেশি কমে গেলে, ইউনিটহোল্ডারের স্বার্থ রক্ষায় ট্রাস্টি বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) আহ্বান করতে পারবে। ইজিএমে উপস্থিত ভোটদাতা ইউনিটহোল্ডারের তিন-চতুর্থাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট এবং বিএসইসির অনুমোদনের মাধ্যমে স্কিমটি বেমেয়াদিতে রূপান্তর বা অবসায়ন করা যাবে। ছয় মাস শেষে ৩০ দিনের মধ্যে রেকর্ড ডেট ঘোষণা করতে হবে এবং ২১ দিনের মধ্যে ইজিএম অনুষ্ঠিত হবে।
ইজিএমে উপস্থিত কমপক্ষে তিন-চতুর্থাংশ ইউনিটহোল্ডার রূপান্তরের পক্ষে ভোট দিলে বিএসইসির অনুমোদন সাপেক্ষে ফান্ডটি বেমেয়াদি স্কিমে রূপান্তর হবে। রূপান্তর প্রক্রিয়া কমিশনের আদেশ অনুযায়ী সম্পন্ন করতে হবে। সভায় সিদ্ধান্তের সঙ্গে ফান্ড-সংক্রান্ত পক্ষের বহাল থাকা বা পরিবর্তনের বিষয়টিও নির্ধারণ করতে হবে। মেয়াদি স্কিমের অবসায়ন সাধারণত নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হলে হবে। তবে বিশেষ কারণে কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে ট্রাস্টি স্কিম অবসায়ন করতে পারবে। স্কিমের ৭৫ শতাংশ ইউনিটহোল্ডার যদি অবসায়নের পক্ষে ভোট দেন অথবা বিএসইসির নির্দেশে ইউনিটহোল্ডারের স্বার্থ রক্ষায় অবসায়ন করা যেতে পারে।
মিউচুয়াল ফান্ড বা এর স্কিমের অর্থ শুধুমাত্র স্টক এক্সচেঞ্জের মূল বোর্ডে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করা যাবে। এছাড়া প্রাথমিক গণপ্রস্তাব, পুনরায় গণপ্রস্তাব , রাইট শেয়ার এবং সরকারি সিকিউরিটিজেও বিনিয়োগ করা যাবে। তবে মূল বোর্ড থেকে তালিকাচ্যুত সিকিউরিটিজ, এটিবি প্ল্যাটফর্মের সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ নিষিদ্ধ। বিনিয়োগের পর কোনো সিকিউরিটিজ তালিকাচ্যুত হলে বা এটিবি বোর্ডে স্থানান্তরিত হলে ছয় মাসের মধ্যে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করতে হবে। ফান্ডের অর্থ কোনো ক্রেডিট রেটিংযুক্ত বন্ড, ডেট সিকিউরিটিজ বা ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক সিকিউরিটিজেও বিনিয়োগ করা যাবে না।
বিধিমালা লঙ্ঘন করলে বিএসইসি বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে। এর মধ্যে রয়েছে জরিমানা, নিবন্ধন স্থগিত বা বাতিল, নতুন স্কিম বা মিউচুয়াল ফান্ড গঠনে নিষেধাজ্ঞা, ট্রাস্টি ও সম্পদ ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব থেকে অপসারণ, এবং সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের জন্য পুঁজিবাজারে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা।