গত সপ্তাহে ঢাকার পুঁজিবাজারে সূচক ও বাজার মূলধনের পতন ধরা পড়েছে। বিশেষ করে শেয়ারশূন্য বিও (BO) অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া গেছে। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগের আগে বুঝেশুনে সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গত সপ্তাহে প্রায় ১৩৩ পয়েন্ট কমে ৫,২৮৩ পয়েন্টে নেমেছে। এটি ২২ জুলাইয়ের পর সর্বনিম্ন অবস্থান। সেই সময় সূচক ছিল ৫,২৭০ পয়েন্টে।
সূচকের সঙ্গে সঙ্গে বাজার মূলধনও কমেছে। সপ্তাহ শেষে ডিএসইর বাজারমূল্য দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ১৭ হাজার ১২৬ কোটি টাকায়, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ৭,৯৩৬ কোটি টাকা কম।
দিনে দিনে লেনদেনের ভিন্নতা দেখা গেছে। সপ্তাহের সর্বোচ্চ তৃতীয় কার্যদিবসে দৈনিক লেনদেন ৭৮৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকায় পৌঁছালেও সপ্তাহ শেষে এটি নেমেছে ৫৩০ কোটি ১৮ লাখ টাকায়। তুলনা করলে, এক মাস আগে ৭ সেপ্টেম্বর দৈনিক লেনদেন ১,৪৪১ কোটি টাকার বেশি ছিল।
বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পতন কোন দীর্ঘমেয়াদি সংকেত নয়। পুঁজিবাজার সংস্কার কমিটির সদস্য আল আমিন জানান, “যেসব কোম্পানি সম্প্রতি ভালো গ্রোথ দেখিয়েছে, সেই কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দর এখন কমছে। তাই বিনিয়োগের আগে যাচাই-বাছাই ও সতর্ক বিশ্লেষণ জরুরি।”
তিনি আরও যোগ করেন, “বাজারে দ্রুত সুশাসন ও আস্থা ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। এর জন্য নীতি-নিয়ম, ব্যাংক ও এনবিআরের সমন্বিত সহায়তা জরুরি। প্রয়োজনে কিছু রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকেও বাজারে যুক্ত করা যেতে পারে। বিএসইসি ইতোমধ্যেই কিছু অগ্রগতি দেখিয়েছে। এসব বাস্তবায়ন হলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসবে।”
সরকারি হিসাব সংরক্ষণকারী সংস্থা সিডিবিএল বলেছে, সূচক পতনের কারণে শেয়ারশূন্য বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে ডিএসইর সাপ্তাহিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দরবৃদ্ধির শীর্ষে থাকা ১০ কোম্পানির মধ্যে ৯টি ‘এ’ ক্যাটাগরির।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ:
-
ঝুঁকি এড়াতে বিনিয়োগের আগে ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করা।
-
বাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনতে নীতিগত সহায়তা ও সরকারি সমন্বয় জরুরি।
-
অল্প সময়ে দ্রুত দরপতন হলে হঠাৎ সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।