বাংলাদেশের পুঁজিবাজার ইতিহাসে এক অভূতপূর্ব পদক্ষেপ হিসেবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) তার সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে পুঁজিবাজারের সব ধরনের কার্যক্রম থেকে আজীবন নিষিদ্ধ করেছে। একই রকম শাস্তি পেয়েছেন এলআর গ্লোবাল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান নির্বাহী ও প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা রিয়াজ ইসলামও।
গতকাল মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিএসইসির বর্তমান চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কমিশনের ৯৭৮তম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে কমিশনের মুখপাত্র ও পরিচালক মো. আবুল কালাম এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেন।
বিএসইসির ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, পদ্মা প্রিন্টার্স অ্যান্ড কালার লিমিটেডে বিনিয়োগ প্রক্রিয়া এবং কোয়েস্ট বিডিসি লিমিটেডের মূলধন ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা থেকে ৫০ কোটি টাকায় উন্নীত করার প্রক্রিয়ায় শিবলী রুবাইয়াত ও রিয়াজ ইসলামের মধ্যে অনৈতিক যোগসাজশ ও স্বার্থের সংঘাতের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তদন্তে এসব অসঙ্গতি স্পষ্ট হওয়ার পরই কমিশন তাদের বিরুদ্ধে এই কঠোর ব্যবস্থা নেয়।
এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মূলত একটি বার্তা দেওয়া হয়েছে— পুঁজিবাজারের শীর্ষ পদে থেকে কেউ অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হলে তার জন্য কোনো ছাড় নেই। বিএসইসি বলছে, বাজারের স্বচ্ছতা ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা বজায় রাখতে এমন কঠোর ব্যবস্থা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ২০২০ সালে বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন এবং ২০২৪ সালে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তিনি অবসর নেন। তার নেতৃত্বে পুঁজিবাজারে কিছু ইতিবাচক উদ্যোগ এলেও, সাম্প্রতিক এই অভিযোগ তার পুরো মেয়াদকেই এখন নতুনভাবে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে।
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত স্বল্পমেয়াদে আলোড়ন তুললেও, দীর্ঘমেয়াদে এটি পুঁজিবাজারে দায়বদ্ধতা ও সততার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে সহায়ক হতে পারে।