প্রকৌশল খাতের বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেডের চলতি ২০২৫ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) বিক্রি বেড়েছে ১৫.২০ শতাংশ। তবে একই সময়ে কোম্পানিটি লোকসান করেছে। তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে সিঙ্গার বাংলাদেশের বিক্রি হয়েছে ১,৭৮১ কোটি টাকা। আগের হিসাব বছরে একই সময়ে বিক্রি ছিল ১,৫৪৬ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ১১৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরে কর-পরবর্তী নিট মুনাফা ছিল ৫ কোটি ৫ লাখ টাকা। তিন প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১১ টাকা ৪২ পয়সা। আগের হিসাব বছরে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ৫১ পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৩ টাকা ৩৯ পয়সায়।
লোকসানের কারণ হিসেবে কোম্পানির কর্মকর্তারা জানিয়েছে, উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেলেও প্রতিযোগিতার কারণে পণ্যের দাম বাড়ানো যায়নি। বিভিন্ন অফার, ছাড় ও প্রচারণা কার্যক্রমে ব্যয় বেড়েছে। পাশাপাশি পরিচালন ব্যয় ও সুদ ব্যয় বাড়ায় লোকসান হয়েছে। কোম্পানিটি আরও জানিয়েছে, নতুন কারখানা চালু হলে উৎপাদন ক্ষমতা তিন গুণ বৃদ্ধি পাবে। এতে উৎপাদন ব্যয় কমবে এবং আগামী বছরগুলোতে কোম্পানিটি আবার লাভজনক অবস্থায় ফিরে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সর্বশেষ ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। আলোচ্য হিসাব বছরে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৪ টাকা ৯১ পয়সা। আগের হিসাব বছরে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ৫ টাকা ২৪ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ শেষে কোম্পানির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ২৫ টাকা ৮১ পয়সায়।
৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ সমাপ্ত হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ৩৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদান করা হয়েছিল। আলোচ্য হিসাব বছরে ইপিএস হয়েছে ৫ টাকা ২৪ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৭৩ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ শেষে এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ৩৪ টাকা ৩ পয়সায়। ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ সমাপ্ত হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানি। আলোচ্য বছরে ইপিএস হয়েছে ৭৩ পয়সা, আগের বছর ৫ টাকা ২০ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ শেষে এনএভিপিএস ছিল ২৯ টাকা ৯৭ পয়সা।
সিঙ্গার বাংলাদেশের সর্বশেষ ঋণমান দীর্ঘমেয়াদে ‘ট্রিপল এ’ ও স্বল্পমেয়াদে ‘এসটি ওয়ান’ হিসেবে নির্ধারণ করেছে ইমার্জিং ক্রেডিট রেটিং লিমিটেড (ইসিআরএল)। এটি ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্যের ভিত্তিতে প্রত্যয়ন করেছে।
১৯৮৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিঙ্গার বাংলাদেশের অনুমোদিত মূলধন ২৫০ কোটি টাকা, পরিশোধিত মূলধন ৯৯ কোটি ৭০ লাখ ৩০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ১৫৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ৯ কোটি ৯৭ লাখ ২ হাজার ৮৩৮। এর মধ্যে ৫৭ শতাংশ শেয়ার উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৯.৯১ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ১৩.০৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

