দেশের পুঁজিবাজারে দীর্ঘমেয়াদি আস্থা ফিরিয়ে আনতে নীতি, আইন ও বিধিমালায় ঘন ঘন পরিবর্তন বন্ধ করা এবং স্থিতিশীল কর কাঠামো বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতির (বিএপিআই) নেতারা। তাদের মতে, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে সরকারের উচিত নীতিমালার ধারাবাহিকতা রক্ষা করা এবং কোন খাতে পরিবর্তন আনা হবে না তা স্পষ্টভাবে ঘোষণা করা। কর কাঠামোর সামঞ্জস্য ও নীতিগত স্থিতিশীলতা বজায় থাকলে বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তাদের আস্থা পুনরুদ্ধার সম্ভব।
গতকাল বুধবার রাজধানীর গুলশানে বিএপিআই কার্যালয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতির নির্বাহী কমিটির মধ্যে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তারা। সভায় জানানো হয়, দেশে বর্তমানে ২৫৭টি লাইসেন্সপ্রাপ্ত ওষুধ কোম্পানি রয়েছে। বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি দেশে বাংলাদেশি ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে। বর্তমানে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ কোম্পানির সংখ্যা ২০টি।
ডিএসই চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, দেশের পুঁজিবাজারকে কার্যকর, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও প্রবৃদ্ধিমুখী করার লক্ষ্যে ডিএসই এখন একটি ‘রূপান্তর যাত্রায়’ রয়েছে। তিনি জানান, ব্লু-চিপ কোম্পানির আইপিও আবেদন দুই মাসের মধ্যে বিবেচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তার ভাষায়, পরিবর্তন এককভাবে নয়, বরং সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সম্ভব। নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করলে বিনিয়োগবান্ধব পুঁজিবাজার গড়ে তোলা যাবে। ঔষধ শিল্প সমিতির সভাপতি ও ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মুক্তাদির বলেন, তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার প্রায় অতালিকাভুক্ত কোম্পানির সমান হয়ে গেছে, ফলে তালিকাভুক্ত হওয়ার প্রণোদনা কমে গেছে।
বিএপিআই মহাসচিব ও ডেল্টা ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. জাকির হোসেন বলেন, পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির স্বচ্ছতা বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ায়। রেগুলেটরি কমপ্লায়েন্স শুধু আইনি বাধ্যবাধকতা নয়, এটি সামাজিক ও ব্যবসায়িক মর্যাদাও এনে দেয়। রেনাটার সিইও সৈয়দ এস কায়সার কবির বলেন, তালিকাভুক্তি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কোম্পানির স্বীকৃতি বাড়ায় এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনে সহায়তা করে।
হেলথকেয়ার ফার্মার সিইও মোহাম্মদ হালিমুজ্জামান বলেন, বড় কোম্পানিগুলো যদি ব্যাংকের পরিবর্তে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করে, তবে ব্যবসা সম্প্রসারণের খরচ ও ঝুঁকি কমবে। ডিএসই পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, ভালো উদ্যোক্তারা যদি বাজারে না আসে, দুর্বল প্রতিষ্ঠানগুলো তখন সুযোগ নেবে। তাই এখন সময় সৎ ও সক্ষম উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার।

