দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে (২ থেকে ৬ নভেম্বর) বড় দরপতন হয়েছে। পুরো সপ্তাহে লেনদেন হওয়া শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে বেড়েছে মাত্র ৪০টির দাম, বিপরীতে ৩৪০টির দাম কমেছে অর্থাৎ, দর বাড়ার তুলনায় সাড়ে আট গুণ বেশি শেয়ার ও ইউনিটের দর কমেছে। এতে বাজারের সব সূচকই বড় ধরনের পতনের মুখে পড়ে।
সপ্তাহের ব্যবধানে সূচকগুলো সর্বনিম্ন ২ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। বাজারে অধিকাংশ সিকিউরিটিজের দরপতনের প্রভাবে ডিএসইর সার্বিক বাজারমূলধন কমেছে ৮ হাজার ৬৩১ কোটি টাকা বা ১ দশমিক ২৩ শতাংশ। তবে, সামান্য হলেও লেনদেনে গতি বেড়েছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে ৩৮৯টি কোম্পানির শেয়ার, করপোরেট বন্ড ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৪০টির, কমেছে ৩৪০টির, আর ৯টির দর অপরিবর্তিত ছিল।
প্রধান সূচক ডিএসইএক্স এক সপ্তাহে কমেছে ১৫৪ পয়েন্ট বা ৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে ৫ হাজার ১২২ পয়েন্টে থাকা সূচকটি এখন দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৯৬৮ পয়েন্টে। ডিএসই-৩০ সূচক ৪৭ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৩৭ শতাংশ কমে ১ হাজার ৯৪১ পয়েন্টে নেমেছে, যা আগের সপ্তাহে ছিল ১ হাজার ৯৮৮ পয়েন্ট। ডিএসইএস সূচক ৪৩ পয়েন্ট বা ৪ শতাংশ কমে ১ হাজার ৩৯ পয়েন্টে এসেছে; আগের সপ্তাহে ছিল ১ হাজার ৮৩ পয়েন্টে।
সপ্তাহ শেষে বৃহস্পতিবার ডিএসইর বাজারমূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৯০ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহ শেষে এটি ছিল ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৫৪৭ কোটি টাকা। সূচক পতনের পরও গত সপ্তাহে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। পাঁচ কার্যদিবসে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৪২২ কোটি ২৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ২৮৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকার। অর্থাৎ, সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ১৩৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা বা প্রায় ৬ শতাংশ। প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪৮৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৪৫৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।
অন্যদিকে, দেশের দ্বিতীয় পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকগুলোতে পতন ঘটেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রধান সূচক সিএএসপিআই ২ দশমিক ২৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৯৫৯ পয়েন্টে। সিএসসিএক্স সূচক কমেছে ২ দশমিক ৪০ শতাংশ, এখন অবস্থান করছে ৮ হাজার ৬১৬ পয়েন্টে। সিএসআই সূচক ২ দশমিক ৬৬ শতাংশ কমে ৮৭৫ পয়েন্টে, সিএসই-৫০ সূচক ১ দশমিক ৭৮ শতাংশ কমে ১ হাজার ৭০ পয়েন্টে এবং সিএসই-৩০ সূচক ১ দশমিক ৮৮ শতাংশ কমে ১২ হাজার ৪১৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ৩০০টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৬৭টির, কমেছে ২১২টির, আর অপরিবর্তিত ছিল ২১টির। গত সপ্তাহে সিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৯৭ কোটি ২০ লাখ টাকা, যা আগের সপ্তাহের ৯৮ কোটি ২৪ লাখ টাকার তুলনায় সামান্য কম।

