ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড দীর্ঘদিন ধরে লোকসানে রয়েছে। চলতি ২০২৫ হিসাব বছরের প্রথম ৯ মাসে (জানুয়ারি–সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটির ক্ষতির পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় প্রায় আড়াই গুণ বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) আজ রবিবার (৯ নভেম্বর) প্রকাশিত তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই–সেপ্টেম্বর) প্রতিবেদনে দেখা যায়, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এই সময়ে নিট লোকসান করেছে ১৪৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আগের বছর একই সময়ে লোকসান ছিল ৬৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ বছরে লোকসান বেড়েছে ৮৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা বা ৫৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ (২ দশমিক ৩৫ গুণ)। প্রতি শেয়ারে লোকসানের পরিমাণও বেড়েছে। চলতি বছরের ৯ মাসে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৬ টাকা ৭১ পয়সা, যা গত বছর ছিল ২ টাকা ৮৬ পয়সা।
দীর্ঘ মেয়াদী লোকসানে কোম্পানির আর্থিক অবস্থাও গুরুতর। ৩০ জুন পর্যন্ত কোম্পানির রিজার্ভ ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৯৩১ কোটি ৩১ লাখ টাকা। সংরক্ষিত মুনাফা তহবিলে ঘাটতির পরিমাণ ৫ হাজার ১১২ কোটি ২১ লাখ টাকা। শেয়ারহোল্ডার ইক্যুইটির বিপরীতে মোট ঘাটতি ৪ হাজার ৮৪৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। ফলে প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) ঋণাত্মক ২১৮ টাকা ৪২ পয়সা—অর্থাৎ প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে কোম্পানির সম্পদ ঘাটতি ২১৮ টাকার বেশি।
২০০৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এই কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ২২১ কোটি ৮১ লাখ টাকা এবং শেয়ার সংখ্যা ২২ কোটি ১৮ লাখ। এর মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৩৬ দশমিক ৫২ শতাংশ শেয়ার। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে ২১ দশমিক ৯২ শতাংশ, আর উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে ৪১ দশমিক ৫৫ শতাংশ শেয়ার।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক ইন্টারন্যাশনাল লিজিংসহ ৯টি এনবিএফআই বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদি এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়, আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী শেয়ারহোল্ডাররা কোনো অর্থ ফেরত পাবেন না। তবে সরকার চাইলে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে পারে।

