পুঁজিবাজারে স্টক এক্সচেঞ্জের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হলেও প্রতিষ্ঠান ও বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আস্থার সম্পর্ক এখনো পুরোপুরি গড়ে ওঠেনি। তবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) বিদ্যমান সংস্কৃতি পরিবর্তন করে আরও কার্যকর, স্বচ্ছ ও দায়িত্বশীল ভূমিকা নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করছে।
ডিএসইর অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে (এটিবি) রেনাটা পিএলসির প্রেফারেন্স শেয়ারের লেনদেন শুরু উপলক্ষে গতকাল আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম।
ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, রেনাটার প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যু দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এর দীর্ঘ কমপ্লায়েন্স ইতিহাস, শক্তিশালী করপোরেট গভর্ন্যান্স ও সুসংগঠিত শেয়ারহোল্ডিং কাঠামো। তবে বিএসইসি ও ডিএসইর সম্মিলিত অনুমোদন প্রক্রিয়ায় কিছুটা সময় লেগেছে। ভবিষ্যতে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন, প্রক্রিয়াগত সংস্কার ও ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে এটি আরও দ্রুত ও সহজ করা হবে।
তিনি বলেন, কভিড-১৯ পরবর্তী ধাক্কা, ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা, মুদ্রার অবমূল্যায়ন ও সুদের হার বৃদ্ধির কারণে অনেক সুপরিচালিত প্রতিষ্ঠান আর্থিক চাপে পড়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য ব্যাংক নির্ভরতা কমিয়ে পুঁজিবাজারকে আরও সক্রিয়ভাবে ব্যবহার করা জরুরি। রেনাটার প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যু সেই দিক থেকে ইতিবাচক উদাহরণ।
চেয়ারম্যান আরও জানান, ভবিষ্যতে এ ধরনের ইন্সট্রুমেন্ট ইস্যুর ক্ষেত্রে বাজার কর্তৃপক্ষ রিপ্লেসমেন্ট কমপ্লায়েন্সের দায়বদ্ধতা মূল্যায়ন করবে। পাশাপাশি মূল বোর্ডের পাশাপাশি এটিবিকে কার্যকর প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গড়ে তুলতে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হবে।
রেনাটার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ এস কায়সার কবির বলেন, প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যুর পেছনে একটি জটিল প্রক্রিয়া কাজ করে। আকস্মিক ও বড় পরিসরে মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে রেনাটার বিনিয়োগ ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। শুরুতে ১ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ পরিকল্পনা থাকলেও মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে তা বেড়ে প্রায় ১,৫০০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। ফলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে রেনাটাকে ঋণনির্ভর হতে হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রেফারেন্স শেয়ারের লভ্যাংশ হার ট্রেজারি বন্ডের রেফারেন্স রেটের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি নতুন হওয়ায় প্রায় নয় মাস সময় লেগেছে। এ সময়ের মধ্যে ট্রেজারি বন্ডের সুদ হার কমলেও প্রেফারেন্স শেয়ারের কার্যকর রিটার্ন প্রায় ১৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য আকর্ষণীয়। এক-দুই বছরের মধ্যে রেনাটার আর্থিক অবস্থার দৃশ্যমান উন্নতি হবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএসইর প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত এমডি মোহাম্মদ আসাদুর রহমান, রেনাটার প্রধান অর্থ কর্মকর্তা মোস্তফা আলিম আওলাদ, কোম্পানি সেক্রেটারি মো. জুবায়ের আলম, এবং ইস্যু ম্যানেজার সিটি ব্যাংক ক্যাপিটালের এমডি ও সিইও মো. সোহেল হক।

