দীর্ঘদিন ধরে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর তথ্য জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া ছিল জটিল ও সময়সাপেক্ষ। একই ধরনের তথ্য বারবার ছাপিয়ে আলাদা আলাদা স্টক এক্সচেঞ্জে জমা দিতে হতো। এতে সময় নষ্ট হতো, খরচ বাড়ত এবং তথ্য ব্যবস্থাপনাতেও জটিলতা তৈরি হতো।
এই সমস্যার সমাধানে সম্প্রতি সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক স্মার্ট সাবমিশন সিস্টেম বা এসএসএস চালু করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। নতুন এই ব্যবস্থার মাধ্যমে কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডগুলো মূল্য সংবেদনশীল ঘোষণা, আর্থিক প্রতিবেদনসহ সব ধরনের রেগুলেটরি তথ্য কাগজ ছাড়াই অনলাইনে জমা দিতে পারছে। ফলে সময় ও ব্যয় কমার পাশাপাশি তথ্য ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা বেড়েছে। একই সঙ্গে তথ্য জমার প্রতিটি ধাপ সহজে ট্র্যাক করা যাচ্ছে।
ডিএসই সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়া এই প্ল্যাটফর্ম ধাপে ধাপে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। সর্বশেষ দুটি নতুন মডিউল যুক্ত হওয়ায় এখন একই ডিজিটাল গেটওয়ের মাধ্যমে তথ্য জমা দেওয়া যাচ্ছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) ও ডিএসই—দু’জায়গাতেই। এর ফলে আলাদা আলাদা এক্সচেঞ্জে একই তথ্য জমা দেওয়ার ঝামেলা প্রায় পুরোপুরি শেষ হয়েছে।
এ বিষয়ে ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে কাগুজে নথির ওপর নির্ভরতা পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। তার ভাষায়, ডিজিটাল সাবমিশন কেবল একটি সুবিধা নয়। এটি বাজারে শৃঙ্খলা আনা এবং সময়ানুবর্তিতা নিশ্চিত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোগত পরিবর্তন।
ডিএসই আরও জানায়, চায়নিজ কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে কাজ করে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা অর্জনের পর সিস্টেমটি নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তৈরি করা হয়েছে। এতে ভবিষ্যতে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী নতুন ফিচার যোগ করা সহজ হবে বলে আশা করছে সংস্থাটি।
প্রযুক্তিগত দিক ব্যাখ্যা করে ডিএসইর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা ড. মো. আসিফুর রহমান বলেন, একক ডিজিটাল সাবমিশন পয়েন্ট চালু হওয়ায় ম্যানুয়াল হস্তক্ষেপজনিত ভুল অনেক কমে যাবে। একই সঙ্গে তথ্য জমার প্রতিটি ধাপ থাকবে ডিজিটালি যাচাইযোগ্য।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উদ্যোগের প্রভাব শুধু স্টক এক্সচেঞ্জের কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ থাকবে না। ধীরে ধীরে এটি দেশের পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

