শতাধিক বাংলাদেশি ওয়েবসাইটে সাইবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং ঢাকা ওয়াসাসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ওয়েবসাইট লক্ষ্যবস্তু ছিল।
হ্যাকাররা নিজেদের মধ্যে ‘ট্রোজান ১৩৩৭’ ও ‘দ্য রেড ঈগল’ নামের দুটি গোষ্ঠী হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। সূত্রে জানা যায়, এই দুই হ্যাকার গ্রুপের সঙ্গে আরও কয়েকটি আন্তর্জাতিক হ্যাকার গ্রুপ যুক্ত ছিল। ‘ট্রোজান ১৩৩৭’ নিজেদের ভারতীয় বলে দাবি করেছে এবং ভারতের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা জানান, শুক্রবার দুপুর থেকে পরিকল্পিতভাবে এসব হামলা শুরু হয়। হ্যাকাররা বিভিন্ন টেলিগ্রাম গ্রুপে আগেই হামলার ঘোষণা দিয়েছিল। টেলিগ্রামে তারা জানিয়েছে, প্রায় ১০০টি ওয়েবসাইটে সফলভাবে আক্রমণ চালানো হয়েছে এবং কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটের ঠিকানাও প্রকাশ করেছে।
কিছু ওয়েবসাইট এখনও অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে, আবার কিছু ওয়েবসাইটে হ্যাকারদের বার্তা ভেসে উঠছে। রাজধানীর রূপনগর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দারুস সালাম সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ‘ট্রোজান ১৩৩৭’ নিজেদের ভারতীয় হ্যাকার হিসেবে পরিচয় দিয়ে হামলার বিষয়টি জানিয়েছে।
‘দ্য রেড ঈগল’ গোষ্ঠী প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করার দাবি করেছে এবং প্রমাণ হিসেবে কিছু স্ক্রিনশট প্রকাশ করেছে। এছাড়া তারা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে হামলার কথাও জানিয়েছে। ঢাকা ওয়াসার ওয়েবসাইটে হামলা চালিয়ে তথ্য উপাত্ত নিয়ে ১ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও অপর হ্যাকার গ্রুপের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়। তবে শুক্রবার সন্ধ্যার পর এসব ওয়েবসাইট সচল দেখা গেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই দুই প্রতিষ্ঠানে হামলা তুলনামূলকভাবে দুর্বল ডিডস আক্রমণের ধরন ছিল। ফলে তা দ্রুত মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ আরিফ মঈনুদ্দীন বলেন, “এই আক্রমণগুলো মূলত ওয়েবসাইট ডিফেইসমেন্ট ধরনের। হ্যাকাররা হোমপেইজ পরিবর্তন করে নিজেদের পরিচয় ও বার্তা প্রকাশ করে। তবে যেখানে নিরাপত্তা দুর্বল, সেখানে তারা ডাটাবেইজে প্রবেশ করে সংবেদনশীল তথ্য চুরি করতে পারে।” তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন ও আবেদনসহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এসব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। হ্যাকাররা যদি এগুলো দখল করতে পারে, তাহলে তা ডার্ক ওয়েবে বিক্রি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
এ পর্যন্ত সরকারি কোনো সংস্থা এই ঘটনার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক মন্তব্য দেয়নি।

