বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, কোনো ব্যাংকের মূলধন ও ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের অনুপাত ১০ শতাংশের নিচে হলে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেওয়া হবে না। তিনি এই তথ্য দিয়েছেন গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত সেন্টার ফর নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশী (এনআরবি) আয়োজিত আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে।
ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ, আসন্ন নির্বাচন, প্রবাসীদের অংশগ্রহণ, আগামীর অর্থনীতি’ শীর্ষক সভায় অংশ নিয়ে গভর্নর বলেন, ‘আমরা আইন করে দিয়েছি, কোনো ব্যাংক খেলাপি ঋণের বিপরীতে শতভাগ সঞ্চিতি সংরক্ষণ না করলে লভ্যাংশ দিতে পারবে না। যদি কোনো ব্যাংকের সিআরএআর ১০ শতাংশের নিচে হয়, তারা লভ্যাংশ দিতে পারবে না। এমন ব্যাংকগুলোর লাভ মূলধন বাড়াতে এবং সঞ্চিতি সংরক্ষণে ব্যবহার করতে হবে।’
ড. আহসান জানান, ‘গত এক মাসে বাজার থেকে ১ বিলিয়ন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে দামের কোনো বড় বৃদ্ধি হয়নি। দেশে ডলার সংকট না থাকলেও টাকার সংকট রয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কাজ চলছে, আরও কাজ করতে হবে। আগস্টে চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে। তবে এটিকে ৫ শতাংশের নিচে নামাতে হবে।’
পাঁচ ব্যাংকের একীভূতকরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জুনের খেলাপি রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে ৩০ শতাংশ ঋণ খেলাপি হওয়ার আশঙ্কা আছে। সরকারের সঙ্গে শরিয়াহ ভিত্তিক পাঁচটি ব্যাংককে একীভূত করার আলোচনা আজ থেকে শুরু হবে। আশা করি, একীভূত হওয়া ব্যাংক এক-দুই বছরের মধ্যে ভালো করবে। এটি ব্যাংকের কর্মকর্তা ও আমানতকারীদের জন্যও সুবিধাজনক হবে।’
বাংলাদেশের অর্থনীতির সামগ্রিক স্থিতিশীলতার দিকে দৃষ্টি রেখে গভর্নর বলেন, ‘গত কয়েক বছরে অর্থ ব্যবস্থায় ঝুঁকি তৈরি হয়েছিল। আমরা তা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি। আংশিক হলেও সফল হয়েছি। রেমিট্যান্স প্রবাহ ২৭ শতাংশ বেড়ে দেশের বৈদেশিক লেনদেন ভারসাম্যসহ সব সূচক উদ্বৃত্তে আছে। সংকটের মধ্যেও রফতানি বাড়ছে।’
রেমিট্যান্স ও রিজার্ভ বৃদ্ধির কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘হুন্ডি কমেছে। আগে রেমিট্যান্সের ৩০ শতাংশ লিকেজ হতো, এখন কমে এসেছে। আমদানি কমে না গেলেও এর খরচ কমেছে। মূল্য বাড়িয়ে পাচার করার লোক এখন দেশে নেই। ফলে দেশের ব্যয় কমেছে। অর্থ পাচার কমানোর পেছনে সুশাসন কাজ করছে। এজন্য রিজার্ভ বেড়েছে।’

