মার্কিন ডলারের দর স্থিতিশীল রাখতে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে আবারও ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল সোমবার নিলামে ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা দরে ১২৯ দশমিক ৫০ মিলিয়ন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
চলতি বছরের জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত নিলামে মোট ১ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর একই দরে ৩৫৩ মিলিয়ন ডলার কেনা হয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, ১২১ টাকা ৭৫ পয়সাই এখন ব্যাংকগুলোর জন্য ডলারের রেফারেন্স রেট।
ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ডলারের দরে ভারসাম্য রাখা জরুরি। দর হঠাৎ বেড়ে যাওয়া যেমন সমস্যার, তেমনি কমে যাওয়া অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। তাই নিলামের মাধ্যমে ডলার কেনা হচ্ছে। এতে একদিকে দর স্থিতিশীল থাকছে, অন্যদিকে রেমিট্যান্স প্রেরক ও রপ্তানিকারকরা সুবিধা পাচ্ছেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভও বাড়ছে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন মনে করেন, নিলামের মাধ্যমে ডলার কেনা সঠিক পদক্ষেপ। এতে বাজার স্থিতিশীল থাকে, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। তিনি বলেন, হঠাৎ করে ডলারের দর উঠানামা করলে আমদানিকারক ও ব্যবসা খাতে সমস্যা তৈরি হয়। তাই দর নিয়ন্ত্রণে ভারসাম্য বজায় রাখা প্রয়োজন।
ব্যাংকাররা বলছেন, মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে এ খাতে এলসি খোলা প্রায় ২৫ শতাংশ কমেছে। এতে ডলারের চাহিদাও আগের তুলনায় হ্রাস পেয়েছে। একটি বেসরকারি ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধান জানান, আমদানি কমায় ডলারের চাহিদা কমেছে। আরেক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহে আমদানি দায় শোধ করা সম্ভব হয়েছে, বিশেষত জ্বালানি খাতে। এতে আমদানির চাপ কমেছে এবং জোগান বেড়ে যাওয়ায় ডলারের দর কিছুটা নিচে নেমেছে।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, বাজারভিত্তিক পদ্ধতিতেই ডলারের দর নির্ধারণ করা হচ্ছে। নিলামে ডলার কিনে রিজার্ভ বাড়ানো হচ্ছে। আবার সংকট হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার ছাড়বে। এতে বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে। তার মতে, সামান্য ওঠানামা স্বাভাবিক হলেও হঠাৎ বড় ধরনের পরিবর্তন অর্থনীতিকে অস্থির করে তোলে।

