স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ. এফ. হাসান আরিফ এক প্রেস ব্রিফিং-এ জানিয়েছেন যে, গত ৫৩ বছরে বাংলাদেশের মশক নিধন কার্যক্রমে কোনো বিশেষজ্ঞের মতামত গ্রহণ করা হয়নি। এমনকি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত কোনো কমিটিও গঠন করা হয়নি। রোববার ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বংশাল এলাকার নাজিরাবাজারে মশক নিধন কার্যক্রম পরিদর্শনের সময় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও জানান, মশক নিধন কার্যক্রমে প্রথমবারের মতো বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করে দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন।
উপদেষ্টা বলেন, মশক নিধনের জন্য সুনির্দিষ্ট একটি এলাকায় কতটুকু কীটনাশক বা লার্ভিসাইড প্রয়োগ করলে কার্যকর হবে তা নির্ধারণে বিশেষজ্ঞের সহযোগিতা প্রয়োজন। এছাড়া, ব্যবহৃত কীটনাশক বা লার্ভিসাইড প্রয়োগের পর ঠিক কতটা মশা নিধন হয়েছে, তা নির্ভুলভাবে মূল্যায়ন করাও বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণ ছাড়া কঠিন। নতুন গঠিত এই কমিটিগুলো মশক নিধনের ক্ষেত্রে বিশ্লেষণ ও পরামর্শ প্রদান করবে, যা কার্যক্রমকে আরও ফলপ্রসূ করবে।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে এ. এফ. হাসান আরিফ বলেন, ডেঙ্গু মোকাবেলায় স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, উভয় পরিকল্পনায় বিশেষজ্ঞদের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে। এছাড়া ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশক নিধন কার্যক্রমের ওপর সঠিক মনিটরিং নিশ্চিত করতে হবে। তিনি এদিন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় পরিদর্শনের মাধ্যমে মশক নিধন কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন এবং বলেন যে, আগের চেয়ে কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
পরিদর্শন শেষে তিনি দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নগর ভবনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষেও যান। সেখানে তিনি কর্পোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় ফগিং ও লার্ভিসাইড প্রয়োগের অনলাইন পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম সরাসরি দেখেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমানসহ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
উপদেষ্টা এ. এফ. হাসান আরিফের এই বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর মশক নিধনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণে অবহেলা করা হয়েছে, যা বর্তমান ডেঙ্গু পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। তবে নতুন গঠিত কমিটিগুলোর মাধ্যমে মশক নিধনে কার্যকর উদ্যোগ ও মনিটরিং চালানোর অঙ্গীকারের ফলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।