দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেছেন, যে উপদেষ্টার পক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। তাকে দায়িত্বে রাখা কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়। তিনি দাবি করেছেন, তার জায়গায় একজন যোগ্য ও দক্ষ ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া হোক। যাতে দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা যায়।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণশক্তি সভা আয়োজিত ‘জনদুর্ভোগ ও স্থানীয় সরকার বিভাগ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ঘরে বসে উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। আইনশৃঙ্খলার অবনতি এতটাই প্রকট যে, মানুষ স্বাভাবিকভাবে ঘর থেকে বের হতেও ভয় পাচ্ছে। দীর্ঘ ১৬ বছর পর কিছু বড় অর্জন হলেও, সেগুলো এখন দুর্বল হয়ে পড়ছে। তিনি বলেন, “শুধু অর্থনীতির কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে কিন্তু অন্য কোনো খাতে কাঙ্ক্ষিত উন্নতি আসেনি।”
তিনি আরও বলেন, “দেশের মানুষ এখন কথা বলার সুযোগ পেলেও কেউ সেই কথা শুনছে না। এভাবে চলতে থাকলে জনগণের মতামত গুরুত্বহীন হয়ে পড়বে।”
বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব কিনা, সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, “এ সরকারকে দিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন, ফ্যাসিবাদের অবসান বা জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটানো সম্ভব নয়।”
তিনি আরও বলেন, “দেশে যদি আইনশৃঙ্খলা না থাকে। তাহলে কীভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে? বর্তমান উপদেষ্টা দায়িত্বে থাকলে নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে না। গত ছয় মাসে পুলিশের কোনো সংস্কার হয়নি। নতুন দলগুলোর মধ্যেও দাঙ্গা-হাঙ্গামা লেগেই আছে। সারাদেশে অস্থিরতা চলছে, যা আমাদের আরও বড় সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।”
দেশের সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতির জন্য কাঞ্চন প্রয়োজনীয় সংস্কারের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, “দেশবাসী যে সংস্কার চেয়েছিল, তা হয়নি। বরং আগের অবস্থাই রয়ে গেছে।”
তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে বলেন, “জনগণের কথা শুনুন এবং সেই অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা করুন।”
ইলিয়াস কাঞ্চনের বক্তব্য দেশজুড়ে চলমান রাজনৈতিক ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে নতুন করে ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনগণের প্রত্যাশা, দায়িত্বশীলদের সচেতনতা ও কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে এই সংকট উত্তরণের পথ বের হবে।