জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধন নিয়ে নাগরিকদের হয়রানি আগের চেয়ে অনেকটাই কমেছে বলে দাবি করেছেন নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। বুধবার (৩ জুলাই) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, এনআইডি সংশোধনের জন্য নেওয়া ‘ক্র্যাশ প্রোগ্রাম’ সফলভাবে এগোচ্ছে, যার ফলে নাগরিকদের ভোগান্তি সুস্পষ্টভাবে কমে এসেছে।
ইসি সচিব বলেন, “আগে প্রতি মাসে গড়ে ১ লাখ আবেদন আসতো, এখন তা কমে ৮০ হাজারে নেমেছে। ১ জানুয়ারি পর্যন্ত যেসব অনিষ্পন্ন আবেদন ছিল—তাও উল্লেখযোগ্য হারে নিষ্পন্ন হয়েছে। আশা করছি, আগামীতে এনআইডি নিয়ে হয়রানির অভিযোগ আর থাকবে না।”
ব্রিফিংয়ে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত অনিষ্পন্ন ছিল ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৮০৬টি আবেদন। এরপর ছয় মাসে নতুন আবেদন জমা পড়ে ৬ লাখ ৫ হাজার ৫২০টি। সব মিলিয়ে আবেদন দাঁড়ায় ৯ লাখ ৮৪ হাজার ৩৫৬টি, যার মধ্যে ৯ লাখ ৭ হাজার ৬৬২টি ইতিমধ্যেই নিষ্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে অনিষ্পন্ন আবেদন রয়েছে মাত্র ৭৬ হাজার ৬৯৪টি।
এছাড়াও ২০২০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৫৪ লাখ ৭৬ হাজার ১১টি এনআইডি সংশোধনের আবেদন জমা পড়ে, যার মধ্যে নিষ্পন্ন হয়েছে ৫৩ লাখ ৯৯ হাজার ৪২০টি।
আখতার আহমেদ আরও বলেন, “আমরা চারটি ক্যাটাগরিতে আবেদনের জটিলতা বিবেচনায় কাজ করছি। তথ্য যাচাই, প্রয়োজনীয় দলিল যাচাই ও শুনানির মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংশোধনের চেষ্টা করছি।”
তবে সম্প্রতি ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর কিছু রাজনীতিবিদসহ অনেকের এনআইডি ‘লক’ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এই প্রসঙ্গে ইসি সচিব বলেন, “নানা কারণে এনআইডি লক করা হয়ে থাকে, বিশেষ করে অপব্যবহার রোধে। এমনকি আমার টাও নাকি লক করা আছে। তবে কারো ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে মন্তব্য করা সমীচীন নয়।”
ইসির এই উদ্যোগ এবং স্বচ্ছতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা নাগরিক সেবা ব্যবস্থার মানোন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সচিব আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “আরও কয়েক মাস গেলে এনআইডি সংশোধনের ক্ষেত্রে নাগরিক ভোগান্তি প্রায় সম্পূর্ণরূপে দূর হয়ে যাবে।”