দেশের শহরাঞ্চলে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা গত এক দশকে বেড়েছে প্রায় ৫ লাখ। ২০১০ সালে শহরে গরিব মানুষের সংখ্যা ছিল ৭৪ লাখ। ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৯ লাখে।
এই তথ্য উঠে এসেছে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘ন্যাশনাল কনফারেন্স অন সোশ্যাল প্রোটেকশন ২০২৫’-এর দ্বিতীয় দিনে। মঙ্গলবার সম্মেলনের শহুরে দারিদ্র্যবিষয়ক সেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদী। গবেষণা উপস্থাপন করেন রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড)-এর চেয়ারম্যান এম এ রাজ্জাক।
অধিবেশনে জানানো হয়, গত এক যুগে দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ২১ লাখ। তবে শহরে দারিদ্র্য দ্রুত বাড়লেও সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ সেভাবে বাড়েনি। দেশের সামাজিক সুরক্ষা বাজেটের প্রায় ৮০ শতাংশ খরচ হয় গ্রামাঞ্চলে।
এম এ রাজ্জাক উপস্থাপনায় বলেন, “গ্রামে মানুষ কমছে, বাড়ছে শহরে। ২০৪০ সালের মধ্যে শহরের জনসংখ্যা গ্রামকে ছাড়িয়ে যাবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে সামাজিক সুরক্ষার ৮০ শতাংশ ব্যয় হচ্ছে গ্রামে। শহরে খোলা বাজারে পণ্য বিক্রি ছাড়া তেমন কোনো উদ্যোগ নেই।”
তিনি আরও জানান, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে শহরের দরিদ্রদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ ছিল মাত্র ৪ শতাংশ। গ্রামীণ এলাকায় বরাদ্দ ছিল ২৭ শতাংশ এবং গ্রাম-শহর উভয়ের জন্য ছিল ৬৮ শতাংশ।
প্রধান অতিথি সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন, “আমাদের ৩৩০টি পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনসহ মোট ৫৬০টি আরবান সেন্টার আছে। এসব এলাকায় জনসংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও নদীভাঙনের কারণে মানুষ শহরমুখী হচ্ছে। ফলে বস্তিবাসীর স্বাস্থ্যসেবা ও পয়োনিষ্কাশন নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ছে।”
তিনি আরও জানান, এই আরবান সেন্টারগুলোতে সামাজিক সুরক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ খাতে সরকার বছরে প্রায় এক বিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে। অথচ বাস্তব প্রয়োজন ৭ থেকে ৮ বিলিয়ন ডলার। সচিব বলেন, “শহরের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্যও আমরা কাজ করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি।”

