চট্টগ্রাম নগরে চার বছরের একটি শিশুকে অপহরণের অভিযোগে সাত বছরের এক শিশুর নামে মামলা হয়েছে। পুলিশ অভিযোগ দায়েরের সঙ্গে সঙ্গে শিশুটিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। বর্তমানে শিশুটি গাজীপুরের টঙ্গীতে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে (বালক) রয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত সাত মাস আগে। বাদী আনোয়ারা বেগমের চার বছরের ছেলে রামিম চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে নিখোঁজ হয়। দীর্ঘ অনুসন্ধান করেও তার সন্ধান না মেলায় ৫ ডিসেম্বর তিনি অপহরণ মামলা করেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, হাসপাতালের বারান্দা থেকে খেলার কথা বলে তাকে সাত বছরের শিশুটি এবং তার মা নিয়ে গিয়েছিলেন।
তবে শিশু আইন অনুযায়ী ৯ বছরের কম বয়সী শিশুকে গ্রেপ্তার বা আটক করা যায় না। এ বিধি অমান্য করে পাঁচলাইশ থানার পুলিশ শিশুটিকে তার মায়ের সঙ্গে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করে।
মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি মফিজুল হক ভূঁইয়া বলেন, শিশুটিকে আদালতে আনা হলেও এজলাসে উপস্থিত করা হয়নি। একটি অন্তর্বর্তী আদেশে তাকে টঙ্গীতে পাঠানো হয়। পরে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে বিচারক আদেশ দেন শিশুটিকে অবিলম্বে তার বাবার জিম্মায় হস্তান্তর করতে।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সোলায়মানও স্বীকার করেন ৯ বছরের নিচে শিশুকে নেওয়ার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, ‘৯ বছরের নিচে শিশুর অপরাধ, অপরাধ নয়। ভুলবশত মামলা নেওয়া হয়েছে। শিশুটিকে জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।’
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবদুস সাত্তার জানিয়েছেন, শিশু আইন ২০১৩–এর ৪৪(১) ধারার অধীনে ৯ বছরের কম বয়সী শিশুকে গ্রেপ্তার বা আটক করা যাবে না।
নিখোঁজ চার বছরের রামিমের কোনো সন্ধান এখনো মেলেনি। পুলিশ বলেছে, ঘটনা যাচাই-বাছাই চলছে এবং পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

