ভারতের পর এবার চীনও বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করার জন্য অপেক্ষা করছে। জাতীয় নির্বাচনে যে দলই ক্ষমতায় আসুক, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক সুসংহত করতে চীন ধীরে চলার নীতি গ্রহণ করেছে। এর ফলে তিস্তা উন্নয়ন প্রকল্পসহ অন্য বড় প্রকল্পের অর্থায়ন ও চুক্তি এখন স্থগিত রয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্র জানায়, তিস্তা মহাপরিকল্পনার চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য দুদেশের মধ্যে আলোচনা চলছে, তবে চুক্তি এখনও স্বাক্ষরিত হয়নি। চলতি মাসে চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও তা আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। কারণ এটি একটি বড় প্রকল্প এবং এতে বড় বিনিয়োগ করতে হবে। চীনের পক্ষ থেকে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করা হলে প্রকল্পে বিনিয়োগের ঝুঁকি কম হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের নিয়মিত কাজগুলো চলছেও বড় কোনো উদ্যোগ বা দ্বিপক্ষীয় ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) বৈঠক এখন হচ্ছে না। ঢাকার প্রস্তাব থাকলেও চীনের আগ্রহ দেখা যায়নি। নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসলে বৈঠকটি আয়োজনের ইঙ্গিত দিয়েছে বেইজিং।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৩ জুন বেইজিংয়ে ১৩তম ফরেন অফিস কনসালটেশন অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কানেক্টিভিটি এবং গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি নবায়নের বিষয়গুলো আলোচিত হয়। পদ্মা সেতু, মৈত্রী সুপারথার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টসহ অন্যান্য সংযোগ প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী এ বছর ১৪তম কনসালটেশন ঢাকায় হওয়ার কথা থাকলেও চীনের ধীরে চলার নীতির কারণে তা স্থগিত হয়েছে।
সূত্র জানায়, গত বছর ৫ আগস্টের পর ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে চীনের আগ্রহ কিছুটা কমেছে। চীন মনে করছে, বড় প্রকল্প শুরু করলে পরবর্তী নির্বাচিত সরকার সেটি নেগেটিভভাবে দেখতে পারে, যা বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলবে।
এদিকে, ভারতের পক্ষও বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী। পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রির ঢাকা সফরে ভারত জানিয়েছে, গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের প্রতি তারা সমর্থন রাখে এবং পারস্পরিক আস্থা ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে ইতিবাচক সম্পর্ক গড়তে চায়।

