রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে গতকাল সোমবার বিকেল ৫টা ৩৩ মিনিটে আদালতে তোলা হয়। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাঁকে হাজির করা হয়।
রিমান্ড শুনানিতে আনিস আলমগীর আদালতে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, তিনি একজন সাংবাদিক। দীর্ঘ দুই যুগ ধরে ক্ষমতাকে প্রশ্ন করে আসছেন। তাঁর কাজ কখনোই কারও কাছে নতজানু হওয়া নয়। তাঁকে নির্দিষ্ট কোনো দলের ‘গোলাম’ বানানোর চেষ্টা করা হলে সেটি সংশ্লিষ্টদের সমস্যা বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আদালতে তিনি আরও বলেন, তাঁর ফেসবুকে দেওয়া সব বক্তব্যই প্রকাশ্য। সেখানে গোপন বা অপ্রকাশিত কিছু নেই। তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের বাড়িতে হামলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। বলেন, ৩২ নম্বরে হামলার ঘটনা প্রতিহিংসার রাজনীতির অংশ। এই রাজনীতি আবার ফিরে আসতে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। জুলাইয়ের আন্দোলনের চেতনা কীভাবে এগোবে, সেটিও তিনি বলেছেন। এসব বক্তব্যে নিজের কোনো ভুল তিনি দেখছেন না বলে আদালতকে জানান। তাঁর সঙ্গে কারও যোগসূত্র নেই বলেও দাবি করেন আনিস আলমগীর। তিনি বলেন, ড. ইউনূস চাইলে পুরো বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—এমন কথাও তিনি বলেছেন।
এ মামলায় পুলিশ আনিস আলমগীরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান রিমান্ড আবেদন করেন। এর আগে বিকেল ৫টা ৮ মিনিটে আনিস আলমগীরকে আদালতের হাজতখানায় আনা হয়।
এর আগে গত রোববার সন্ধ্যার পর তাঁকে রাজধানীর মিন্টো রোডে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে আনা হয়। এ বিষয়ে আনিস আলমগীর জানান, তাঁকে ধানমন্ডি এলাকার একটি জিম থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত আটটার দিকে তিনি ডিবি কার্যালয়ে পৌঁছান। সেখানে তাঁকে জানানো হয়, ডিবিপ্রধান তাঁর সঙ্গে কথা বলবেন।
গতকাল সোমবার বেলা ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে ডিবিপ্রধান মো. শফিকুল ইসলাম জানান, সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা একটি মামলায় সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পরে জানা যায়, ‘জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্স’ নামের একটি সংগঠনের কেন্দ্রীয় সংগঠক আরিয়ান আহমেদ গত রবিবার রাত ২টার দিকে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলাটি করেন। মামলায় সাংবাদিক আনিস আলমগীর, অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনসহ মোট পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।

