ক্ষুদ্র ও ছোট উদ্যোক্তাদের কাছে ঋণ পৌঁছে দেওয়া সহজ কাজ নয়। সফল হতে হলে দেশজুড়ে একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক ও সশরীরে উপস্থিতি থাকতে হবে। কারণ এই খাতে ঋণ তত্ত্বাবধান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্যগুলো জানিয়েছেন ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) তারেক রেফাত উল্লাহ খান। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে তিনি ব্যাংকটির শীর্ষ দায়িত্বে নিয়োগ পেয়েছেন। ২০১৭ সাল থেকে তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছেন।
তার তিন দশকের ব্যাংকিং ক্যারিয়ারে ইস্টার্ন ব্যাংক, এবি ব্যাংক ও আইএফআইসি ব্যাংকেও কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। সম্প্রতি বণিক বার্তার ‘সেরা ব্যাংক র্যাংকিং-২০২৪’-এ ব্র্যাক ব্যাংক প্রথম স্থান অর্জন করেছে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি ব্যাংকের সাফল্যের কারণ ও দেশের ব্যাংক খাতের বর্তমান চ্যালেঞ্জ নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন।
অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় আপনাদের ব্যাংক এখন অনেক ভালো করছে। ‘বণিক বার্তা’র ব্যাংক র্যাংকিংয়েও অন্য সবাইকে ছাড়িয়ে দেশসেরা স্বীকৃতি পেয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক। এ সাফল্যের পেছনে মূল নিয়ামক কী ছিল?
তারেক রেফাত উল্লাহ খান: ব্র্যাক ব্যাংকের সাফল্যের কারণ খুঁজতে হলে ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠার পটভূমির দিকে তাকাতে হবে। ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ দেখেছিলেন ক্ষুদ্র ঋণের উদ্যোক্তারা ধীরে ধীরে বড় হচ্ছেন, কিন্তু তাদের জন্য উপযুক্ত কোনো ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান নেই। তখন এ দেশে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের পরবর্তী ধাপে অর্থাৎ এসএমই খাতে সহায়তা করার জন্য কোনো ব্যাংক ছিল না। এই ‘মিসিং মিডল’ তথা এসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের অর্থায়নের সুযোগ তৈরি করে দেয়ার লক্ষ্যেই ব্র্যাক ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে তালিকাভুক্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক হওয়ায় আমরা ধীরে ধীরে করপোরেট ও রিটেইল ব্যাংকিংয়ের দিকেও বিস্তৃত হয়েছি। আমাদের ব্যবসায়িক মডেল এখন দেশের সেরা উদাহরণগুলোর একটি।
আমাদের পোর্টফোলিও খুবই বৈচিত্র্যময়। বিতরণকৃত ঋণের প্রায় ৫০ শতাংশ সিএসএমই, ৩৫ শতাংশ করপোরেট, আর ১০-১৫ শতাংশ রিটেইল খাতে। এ বৈচিত্র্যায়ণ শুধু আর্থিক ঝুঁকি কমায় না, ব্যবসায় স্থিতিশীলতাও আনে। কোনো খাত খারাপ করলে আমরা অন্য খাতের মাধ্যমে ভারসাম্য রক্ষা করতে পারি। আবার এসএমই পোর্টফোলিওর মধ্যেও প্রায় অর্ধেকই খুবই ক্ষুদ্র ব্যবসায় দেয়া হয়েছে। এ বিচিত্র পদ্ধতির কারণেই আমাদের নন-পারফর্মিং লোন বা খেলাপি ঋণ কম। বিশেষ করে ছোট ঋণে খেলাপির হার মাত্র ৩ শতাংশেরও কম, যা দেশের ব্যাংক খাতে অন্যতম সেরা অবস্থান।
দেশের ব্যাংকাররা প্রায়ই বলেন, এসএমই ঋণে খেলাপির ঝুঁকি বেশি। অথচ আমরা দেখছি, ব্র্যাক ব্যাংকের ক্ষুদ্র ঋণে খেলাপির হার ৩ শতাংশেরও নিচে। যেখানে পুরো ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের হার ৩০ শতাংশেরও বেশি। এটি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করলেন?
তারেক রেফাত উল্লাহ খান: ক্ষুদ্র ও ছোট উদ্যোক্তাদের কাছে ঋণ পৌঁছানো সহজ কাজ নয়। এখানে সফল হতে হলে দেশজুড়ে নেটওয়ার্ক ও সশরীরে উপস্থিতি দরকার। কারণ এ ব্যবসায় ঋণ তত্ত্বাবধান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিনিয়োগকৃত টাকা সঠিকভাবে ব্যবহার হচ্ছে কিনা তা ঘনিষ্ঠভাবে দেখতে হয়। এসবের জন্য আমাদের প্রায় ১০ হাজার ২০০ স্থায়ী কর্মী আছে। এর বাইরে আরো সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষ আমাদের সঙ্গে কাজ করে। এ কর্মী বাহিনীর বড় অংশই এসএমই খাতে নিয়োজিত। এতে আয়-ব্যয় অনুপাত তুলনামূলক বেশি হলেও এটাই আমাদের সাফল্যের মূল ভিত্তি। দেশব্যাপী নেটওয়ার্ক, প্রশিক্ষিত জনবল, সঠিক পণ্য ও তত্ত্বাবধান—এ তিন উপাদান একসঙ্গে কাজ করলেই এসএমই ব্যাংকিংয়ে সফল হওয়া যাবে। শুরুতে এ খাতে বিনিয়োগে অনেকে ভয় পেলেও সময়ের সঙ্গে দক্ষতা বাড়লে খরচ কমে আসবে। তখনই মডেলটা লাভজনক হবে।
ব্র্যাক ব্যাংকের বিতরণকৃত ঋণের অর্ধেকই ছোট ঋণ, যেখানে অন্য ব্যাংক একজন গ্রাহককেই ৫০০-১০০০ কোটি টাকা দিয়ে দিচ্ছে। তার পরও আমরা দেখছি, আপনাদের রিটার্ন বেশি। এ সাফল্য কীভাবে অর্জন করলেন?
তারেক রেফাত উল্লাহ খান: রিটার্ন বেশি হওয়ার মূল কারণ হলো আমাদের খেলাপি ঋণ অনেক কম। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপির হার ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। তার মানে আমাদের প্রায় ৯৬ শতাংশ সম্পদ (ঋণ) সঠিকভাবে রিটার্ন দিচ্ছে। আমাদের কর্মীরাও অত্যন্ত নিবেদিতপ্রাণ। তারা শুধু পেশাগত দায়িত্ববোধ নয়, দেশের জন্য কিছু করার মানসিকতা নিয়ে কাজ করছেন। এ ব্যাংকের বৃহৎ শেয়ারহোল্ডার বিশ্বের বৃহত্তম এনজিও ব্র্যাক। ব্র্যাক ব্যাংকের ৪৬ শতাংশের বেশি শেয়ার তাদের হাতে। ব্যাংকের দেয়া ডিভিডেন্ড ব্র্যাকের মাধ্যমে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ জনগণের উন্নয়নে ব্যবহার হয়। ব্র্যাক ব্যাংকে কাজ করা মানে দেশের মানুষের জন্য কাজ করা—এ মনস্তত্ত্ব নিয়েই আমাদের কর্মীরা কাজ করেন। এ কারণে আমাদের রিটার্ন বেশি আসে।
তার মানে মালিকানার কাঠামো ও প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যই ব্র্যাক ব্যাংককে এতটা সফলতা এনে দিয়েছে? সাফল্যের জন্য দেশের অন্য ব্যাংকগুলো কি এ মডেল গ্রহণ করতে পারে?
তারেক রেফাত উল্লাহ খান: বিষয়টি এ রকম সহজ-সরল নয়। আমাদের এখানে হয়তো সামাজিক কল্যাণ ও বাণিজ্যিক সাফল্য একসঙ্গে যুক্ত হয়েছে। তবে কোনো প্রতিষ্ঠান ভালো করার জন্য মূল শর্ত হলো সুশাসন নিশ্চিত থাকা। ব্র্যাক ব্যাংক পর্ষদে কেবল একজন পরিচালক মনোনীত, বাকি সবাই স্বতন্ত্র। নিজ নিজ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ এ পরিচালকরা শুধু ব্যাংকের নীতিনির্ধারণে ভূমিকা রাখেন, দৈনন্দিন ব্যবস্থাপনায় কোনো হস্তক্ষেপ করেন না। এতে সুশাসন ও স্বচ্ছতা দুই-ই নিশ্চিত হয়।
শেয়ারহোল্ডারদের দৌরাত্ম্য কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক এখন ব্যাংকগুলোয় স্বতন্ত্র পরিচালক বাড়াতে বলছে। কিন্তু আমরা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে বিপরীত চিত্রও দেখছি। এ ব্যাংকগুলোর নিয়োগপ্রাপ্ত সব পরিচালকই বলতে গেলে স্বতন্ত্র। ব্যাংকগুলোয় তাদের কোনো ব্যক্তিস্বার্থও নেই। তার পরও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর পরিস্থিতি খুবই নাজুক। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উপায় কী?
তারেক রেফাত উল্লাহ খান: ব্যাংকে স্বতন্ত্র পরিচালক বাড়ানো নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। তবে শুধু মালিকানা কাঠামো ভালো হলেই হবে না, এর পাশাপাশি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা—সব জায়গায়ই ভারসাম্য আনতে হবে। শুধু একটা উপাদান দিয়েই ভালো করা কঠিন। সুশাসনের জন্য কাঠামোগত পরিবর্তনসহ নীতিগত সংস্কৃতি গড়ে তোলা প্রয়োজন। ব্যাংক খাতে স্বচ্ছতা, পেশাদারত্ব ও জবাবদিহি একসঙ্গে বাড়াতে না পারলে কাগজে-কলমে যতই সংস্কার আনা হোক না কেন বাস্তবে তার প্রভাব খুব একটা দেখা যাবে না।
বণিক বার্তার র্যাংকিংয়ে সেরা হওয়ার ক্ষেত্রে ব্র্যাক ব্যাংকের সর্বনিম্ন খেলাপি ঋণ, সর্বোচ্চ নিট মুনাফা, মূলধন সক্ষমতা ও শাখাপ্রতি পরিচালন মুনাফা বড় ভূমিকা রেখেছে। এ চার সূচকেই আপনার ব্যাংক সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে। কিন্তু আরওএ, আরওই ও এনএভির ক্ষেত্রে ব্র্যাক ব্যাংক কিছুটা পিছিয়ে আছে। সেটি কেন?
তারেক রেফাত উল্লাহ খান: ব্যাংকের যেসব তথ্য আমরা প্রকাশ করি, সেটি একদম স্বচ্ছভাবে করি—কোনো কিছু লুকাই না। আমাদের এনপিএল গত বছরও কম ছিল। এ বছর কিছুটা বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি ঋণের মেয়াদ গণনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক চর্চায় ফিরেছে। এ কারণে আমাদের এনপিএলে কিছুটা প্রভাব পড়েছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক রাইট-অফের (মন্দ ঋণ অবলোপন) কিছু বিধিনিষেধ উঠিয়ে নিয়েছে। নতুন নীতি অনুযায়ী প্রভিশন ঠিক থাকলে রাইট-অফের জন্য তিন বছর অপেক্ষা করতে হবে না। আমাদের পর্যাপ্ত প্রভিশন রাখা হয়েছে। এতে আগামী বছর আমাদের এনপিএল আরো কমে আসবে। এছাড়া আমাদের ঋণ আদায় বিভাগ এসএমই, করপোরেট ও রিটেইল—তিন জায়গায়ই কাজ করছে। আমরা প্রতি বছর অবলোপনকৃত ৭০-৮০ কোটি টাকার ঋণ আদায় করছি। অবলোপনকৃত ঋণ থেকে এ পরিমাণ আদায় অন্য কোনো ব্যাংকে হয় না।
আর শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্যে কিছুটা পিছিয়ে থাকার কারণ হলো দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি। ব্র্যাক ব্যাংকের প্রতি গ্রাহকের আস্থা বেশি থাকায় আমরা প্রচুর আমানত পাই। কিন্তু বেসরকারি খাতে সার্বিক ঋণ প্রবৃদ্ধি মাত্র ৬ শতাংশ। যদিও আমরা তুলনামূলকভাবে কিছুটা এগিয়ে আছি। আমাদের বর্তমান ঋণ প্রবৃদ্ধি ১০-১২ শতাংশ হলেও বছর শেষে তা ১৫ শতাংশে পৌঁছে যাবে বলে আশা করছি। এখন ব্যাংকগুলোর আয়ের বড় উৎস ট্রেজারি বন্ড। বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের সুযোগ কম থাকায় বন্ডে বিনিয়োগ করা ছাড়া খুব একটা সুযোগও নেই। তবে এটি কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। বেসরকারি খাত ঘুরে দাঁড়ানোর আগ পর্যন্ত আমরা এটিকে স্বল্পমেয়াদি সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাচ্ছি। তবে আমরা এরই মধ্যে তিনটি বিভাগেই নতুন ও উদ্ভাবনী পণ্য নিয়ে কাজ করছি। আগামী বছর ভিন্ন ভিন্ন গ্রাহক শ্রেণীর জন্য নতুন সেবা ও প্রডাক্ট আসবে। আমরা বিশ্বাস করি, ব্যবসা পুনরুজ্জীবিত হলে নতুন সুযোগও তৈরি হবে।
ব্র্যাক ব্যাংকের অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোর কী অবস্থা, বিশেষ করে বিকাশ?
তারেক রেফাত উল্লাহ খান: বিকাশ অসাধারণ কাজ করছে। এখন প্রায় আট কোটি মানুষ বিকাশের আওতায় এসেছে। অর্থাৎ দেশের প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠী বিকাশ পরিবারের সদস্য। স্যার আবেদের উদ্দেশ্যই ছিল আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়ানো। যারা আগে ব্যাংকিং সেবার বাইরে ছিল, তাদের এ ব্যবস্থার মধ্যে নিয়ে আসা। বিকাশ সেটা সফলভাবে করেছে। আশা করি, তারা সামনের দিকে গ্রাহকদের জন্য আরো বৈচিত্র্যময় সেবা নিয়ে আসবে।
গত বছর ব্র্যাক ব্যাংক দেশের ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ নিট মুনাফা করেছে। এ বছরও কি একই ধারা অক্ষুণ্ন থাকবে?
তারেক রেফাত উল্লাহ খান: এটা সংবেদনশীল তথ্য, তাই নির্দিষ্ট করে বলতে পারছি না। তবে আমরা আমাদের লক্ষ্য অনুযায়ী এগোচ্ছি। কাজের যৌক্তিক ফল হিসেবে আমরা মুনাফা দেখতে পাব। সঠিকভাবে কাজ করলে স্বাভাবিকভাবেই মুনাফা আসবে। আশা করছি, চলতি বছর নিট মুনাফা আগের বছরকেও ছাড়িয়ে যাবে।
অনেকের অভিযোগ, ব্র্যাক ব্যাংক আমানতকারীদের কম সুদ দিচ্ছে। বিপরীতে এসএমই ঋণগ্রহীতাদের কাছ থেকে বেশি সুদ আদায় করছে। এ কারণে আপনাদের স্প্রেডও বেশি। বেশি মুনাফা না করে গ্রাহকদের সুদহার আরেকটু কমানোর সুযোগ আছে কিনা?
তারেক রেফাত উল্লাহ খান: ব্র্যাক ব্যাংকের সুদহার ব্যাংক খাতের গড় সুদহারের মধ্যেই রয়েছে। মনে রাখা দরকার, আমরাই একমাত্র ব্যাংক যারা অনেক ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাকে কোনো জামানত ছাড়াই ‘আনসিকিউরড লোন’ দিই। গ্রামের অনেক জায়গায় এখনো মহাজনি প্রথা চলছে, যেখানে ১০০ থেকে ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত সুদ দিতে হয়। আমাদের কাজ হচ্ছে সেই সুদপ্রথাকে ভেঙে দেয়া। সেজন্য আমরা ১৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ সুদে ক্ষুদ্র ঋণ দিচ্ছি। তাই তুলনামূলকভাবে আমাদের হার কমই রয়েছে। আর ব্র্যাক ব্যাংকের স্প্রেডও খুব বেশি নয়।
আপনি সম্প্রতি ব্র্যাক ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। দেশের সেরা ব্যাংকের নেতৃত্বে আসার অনুভূতি কী? এ ব্যাংক নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাই?
তারেক রেফাত উল্লাহ খান: আমরা ভালো কাজ করতে চাই। এর মাধ্যমে কেবল ব্যাংকের ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়ানো নয়, দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার উন্নতিতেও অবদান রাখতে চাই। আমাদের দায়িত্ব আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে আরো ত্বরান্বিত করা এবং আনব্যাংকড মানুষের কাছে পৌঁছানো। আমরা বিভিন্নভাবে এ কাজ করেও যাচ্ছি। আমাদের সিএসআর কার্যক্রমের আওতায় প্রায় দেড় লাখ মানুষকে কোনো না কোনোভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে বলি, আমরা প্রায় ৮০ হাজার মানুষকে বিনামূল্যে চোখ পরীক্ষা ও চশমা বিতরণ করেছি, যাদের বড় অংশই গার্মেন্টস কর্মী। এতে তাদের উৎপাদনশীলতা বেড়েছে। প্রায় দেড় হাজার মানুষকে কৃত্রিম অঙ্গ প্রদান, শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেয়া, বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন প্রকল্পেও আমরা যুক্ত আছি। যদিও এসব আমরা প্রচার করি না, কিন্তু নিয়মিতভাবে করে যাচ্ছি। এর মাধ্যমেই আমরা সমাজে ভূমিকা রাখতে চাই।
গ্রাহকদের উদ্দেশে কিছু বলতে চান?
তারেক রেফাত উল্লাহ খান: গ্রাহকের অর্থের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেয়াই আমাদের প্রতিশ্রুতি। আমরা উদ্ভাবন ও সেবা নিয়ে ক্রমাগত কাজ করছি। বিশ্বাস, উদ্ভাবন ও অন্তর্ভুক্তি—এ তিন স্তম্ভের ওপর ভরসা করে এগিয়ে যেতে চাই আমরা। আশা করি, গ্রাহকরা অতীতের মতো ভবিষ্যতেও আমাদের পাশে থাকবেন। সূত্র: বনিক বার্তা

