এক যুগ আগে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) প্রায় ২৯ কোটি টাকার ঋণখেলাপি মডার্ন প্লাস্টিক অ্যান্ড অ্যাকসেসরিজ। কয়েক দফা পুনঃতপশিল ও পুনর্গঠনের পরও ঋণ আদায় সম্ভব হয়নি। সাত বছর আগে ব্যাংক বিষয়টি নিয়ে অর্থঋণ আদালতে মামলা করেন।
তবে ঋণ পরিশোধ না করে প্রতিষ্ঠানটির মালিক বন্ধকি রাখা সম্পত্তি ব্যবহার করে আসছিলেন। আদালত ঋণের বিপরীতে বন্ধক রাখা ছয় তলা ভবনে ঢাকার উত্তরা পশ্চিম থানার ওসিকে রিসিভার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। ইউসিবির আবেদনপত্রের ভিত্তিতে গত রবিবার অর্থঋণ আদালত-৫ এর বিচারক মুজাহিদুর রহমান এই আদেশ দেন।
জানা গেছে, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের নয়াবাজার শাখায় মডার্ন প্লাস্টিক অ্যান্ড অ্যাকসেসরিজের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২৮ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন এবং চেয়ারম্যান আল-আমিন আরা খানম চৌধুরী। ঋণের বিপরীতে ৫.৩৮ শতাংশ জমিতে ছয় তলা ভবন বন্ধক রাখা রয়েছে। ২০১৮ সালের আগস্টে ব্যাংক ঋণ আদায়ের জন্য অর্থঋণ আদালতে মামলা করেন। ২০২০ সালে মামলাটি নিষ্পত্তির পর্যায়ে গেলে ও ঋণগ্রহীতার বারবার সময়ের আবেদন ও নানা কৌশলের কারণে তা শেষ পর্যন্ত সম্পন্ন হয়নি।
ব্যাংকের আবেদনে বলা হয়েছে, সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও খেলাপি প্রতিষ্ঠান ঋণ পরিশোধ করছেন না। বন্ধক রাখা ভবন থেকে মাসিক ভাড়া আয়ের পরিমাণ বিপুল হলেও এক যুগের পুরোনো ঋণ পরিশোধ না করে মালিক দেশ-বিদেশে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন। এই অবস্থায় বন্ধক সম্পত্তির আয় থেকে ঋণ সমন্বয়ের সুবিধার্থে রিসিভার নিয়োগ করা জরুরি।
আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, অর্থঋণ আদালত আইনে ১২০ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির বিধান থাকলেও অতিরিক্ত মামলাজটের কারণে তা সম্ভব হয়নি। মালিক ভাড়া আদায় করলেও ব্যাংকে এক টাকাও জমা করছেন না। তাই বন্ধক ভবনে রিসিভার নিয়োগ করা সমীচীন। আদেশে ভারতের মুম্বাই হাইকোর্টের একটি মামলার উদাহরণও উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া বনাম ট্রেড এইড পেপার অ্যান্ড অ্যালাইড প্রোডাক্ট মামলায় বলা হয়েছে, বন্ধক সম্পত্তিতে রিসিভার নিয়োগ করা আদালতের কর্তব্য।
আদালতের নির্দেশে ভবনটিতে গতকালই সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছে। এখন থেকে ভাড়া আদায় করবেন আদালত নিযুক্ত রিসিভার। সব ব্যয় মেটানোর পর বাকি টাকা পেঅর্ডারের মাধ্যমে আদালতে জমা দেওয়া হবে।

