বিদেশে পাচার হওয়া সম্পদ ফেরত আনার উদ্যোগে আরও জোর দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১৫ বছরে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তি ও বড় ব্যবসায়িক গোষ্ঠী—এস আলম গ্রুপ সহ—যেসব সম্পদ বাইরে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ আছে, সেগুলো উদ্ধারে আন্তর্জাতিক ল’ ফার্ম নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মানসুর।
গতকাল আট ব্যাংকের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন,
আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞদের হাতেই এসব অর্থের উৎস অনুসন্ধান, প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে তা প্রমাণ করা এবং বিদেশি আদালতের মাধ্যমে সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার মতো জটিল কাজগুলো সফলভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব।
টিবিএসকে তিনি বলেন, “এক-দুটি ব্যাংক ইতোমধ্যে বিদেশি ল’ ফার্মের সঙ্গে চুক্তি করেছে। বাকি ব্যাংকগুলোকেও দ্রুত চুক্তি করতে হবে, এ কারণেই তাদের ডাকা হয়েছিল।”
গভর্নর স্পষ্ট করেন, দাবি দায়ের না করলে বিদেশ থেকে অর্থ ফেরত আনা সম্ভব নয়। এই দাবি উত্থাপন করবে আন্তর্জাতিক আইনজীবী প্রতিষ্ঠানগুলোই। তারাই আইনি প্রক্রিয়ায় সম্পদ উদ্ধার করে দেবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, যেসব ব্যাংকের টাকা পাচার বা আত্মসাৎ করা হয়েছে, তাদের দ্রুত বিদেশি ল’ ফার্ম নিয়োগ দিতে বলা হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি ব্যাংক ‘লিড ব্যাংক’ হিসেবে কাজ করবে, আর বাকিরা সহযোগিতা দেবে।
বৈঠকে উপস্থিত এক ব্যাংকের চেয়ারম্যান জানান,
বিদেশি ল’ ফার্ম নিয়োগে ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত ব্যয় হবে না, কারণ প্রতিষ্ঠানগুলো সফলভাবে সম্পদ উদ্ধার করতে পারলে সেখান থেকেই একটি অংশ পাবে—অতিরিক্ত ফি লাগবে না।
তিনি আরও বলেন, গভর্নর পুরো পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন এবং দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন, কারণ অনেক ব্যাংকের এখনও এসব গোষ্ঠীর কাছে বড় অঙ্কের ঋণ বাকি রয়েছে।
তবে তিনি এটিও স্বীকার করেন যে, বিদেশি আদালত ও আইনি প্রক্রিয়ার জটিলতার কারণে পুরো প্রক্রিয়া ধীরগতির হতে পারে।

