এ কে এম মিজানুর রহমান, যিনি সনদধারী হিসাববিদদের সংগঠন ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএবি) দণ্ডপ্রাপ্ত সদস্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনে এনআরবি ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। গত মার্চে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের সময় তাকে এই পদে বসানো হয়।
তবে নিয়োগের পরই তার বিরুদ্ধে ব্যাংকের নীতিমালার বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপ ও বিভিন্ন সুবিধা গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, তিনি শুধুমাত্র সভায় অংশ নেওয়ার জন্য যে গাড়ির সুবিধা পাবেন, তা ছাড়িয়ে বিভিন্ন সময়ে ব্যাংকের গাড়ি ব্যবহার করেছেন এবং সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করছেন।
আইসিএবির অনুসারে, এ কে এম মিজানুর রহমানকে পেশাগত অসদাচরণের দায়ে দুই দফায় শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ছিল আর্থিক জরিমানা, ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন সিস্টেমে প্রবেশাধিকার বন্ধ এবং সদস্যপদ স্থগিত। ২০১৯ ও ২০২৩ সালে এই শাস্তিগুলো কার্যকর হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানিয়েছেন, ‘সরকার পরিবর্তনের পর স্বল্প সময়ে ১৪টি ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। সব বিষয়ে যথাযথ তথ্য যাচাই করা সম্ভব হয়নি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, তাদের বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আইসিএবির সভাপতি এন কে এ মবিন বলেন, ‘স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র অভিজ্ঞতা নয়, সততা ও স্বচ্ছতা নিয়েও বিচার করা উচিত। শাস্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে নিয়োগ দিলে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।’
এ বিষয়ে এ কে এম মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিয়ম ভাঙার জন্য শাস্তি পেয়েছিলাম। তবে ব্যাংকের গাড়ি ব্যবহার নিয়ে অভিযোগ সত্য নয়। আমি নিজস্ব গাড়ি না থাকায় সাময়িকভাবে গাড়ি নিয়েছি। অন্য কোনো অনৈতিক সুবিধা নেই।’
এ ঘটনায় এনআরবি ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা অস্বস্তিতে পড়েছেন। ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ও কর্মকর্তারা বলছেন, স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ায় কেউ তার বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ করতে সাহস পাচ্ছেন না।

