বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে যাওয়ায় বাজারে টাকার সরবরাহ কিছুটা বাড়েছে। তবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে টাকা ছাপানো ছাড়া মুদ্রা সরবরাহ বাড়ানো জরুরি।
তিনি এ কথা বলেন গতকাল সোমবার কক্সবাজারে বাংলাদেশ ব্যাংকের আয়োজিত এক জনসচেতনতামূলক আলোচনায়, যা ক্যাশলেস লেনদেন প্রচারণার অংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংক নগদ টাকার লেনদেন কমানোর লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সচেতনতা মূলক কর্মসূচি চালাচ্ছে। কক্সবাজারে দুই দিনের এই কর্মসূচিতে লিড পার্টনার ছিল এসএসএল কমার্জ। বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে রাজধানী ঢাকার বাইরে মোট ১১টি স্থানে এই ধরনের প্রচারণা চালানো হয়েছে।
গভর্নর বলেন, রেমিট্যান্স, বিদেশি ঋণ ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ বাড়ালে ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকার পরিমাণও বাড়বে। এতে পুরো ব্যাংক খাতের উন্নতি হবে। তিনি বলেন, আগে দেশের বাইরে অনেক অর্থ চলে গিয়েছিল। এখন তা দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হবে।
ড. আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, ক্যাশলেস লেনদেন চালু করতে প্রত্যেকের হাতে স্মার্টফোন থাকা জরুরি। এজন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি ব্যাংকগুলোর প্রতি আহ্বান জানান, ডেবিট কার্ডের পাশাপাশি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের উপর জোর দিতে হবে এবং ক্রেডিট কার্ডের সীমাও বাড়াতে হবে। গভর্নর আশা প্রকাশ করেন, প্রচলিত ব্যাংকগুলো ভবিষ্যতে ডিজিটাল ব্যাংকে রূপান্তরিত হবে, যা সম্ভবত ১০ থেকে ১৫ বছর সময় নেবে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগের পরিচালক রাফেজা আক্তার কান্তা ও অতিরিক্ত পরিচালক মো. পারওয়েজ আনজাম মুনির।
এসএসএল কমার্জের এমডি সাইফুল ইসলাম বলেন, পর্যটক এলাকায় ক্যাশলেস লেনদেনের অনেক সুযোগ রয়েছে। ভ্যান, ছোট দোকান, এমনকি সমুদ্রতটে বসার চেয়ারের ভাড়াও ডিজিটাল পদ্ধতিতে নেওয়া যেতে পারে।
ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি তারেক রেফাত উল্লাহ খান বলেন, শুধু কয়েকটি প্রতিষ্ঠান নয়, পুরো ইকোসিস্টেমকে ক্যাশলেস করতে হবে। ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এমডি আবুল কাশেম মো. শিরিন বলেন, ক্ষুদ্র মার্চেন্টদের জন্য দু’এক বছরের জন্য চার্জ ফ্রি লেনদেনের সুযোগ দেওয়া উচিত।
পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, “পয়েন্ট অব সেলসের মার্চেন্ট খরচ যদি প্রায় শূন্যের সমান, অর্থাৎ ৯০ শতাংশ কম থাকে, তাহলে কেন কিউআর কোড ব্যবহার করার খরচ ১ টাকা ১৫ পয়সা হবে? ব্যাংকগুলো তাদের কর্পোরেট সামাজিক দায়িত্ব থেকে এই ব্যয় বহন করতে পারে।”
ইসলামী ব্যাংকের এমডি ওমর ফারুক খাঁন বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে ডিজিটাল পেমেন্টে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। সোনালী ব্যাংকের এমডি শওকত আলী খান যোগ করেন, সোনালী ব্যাংক ডিজিটাইজেশনে অনেক এগিয়েছে। ব্যাংকের অ্যাপসহ সব ধরনের লেনদেন এখন সহজভাবে করা যাচ্ছে।

