চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে পুরনো টার্মিনাল জেনারেল কার্গো বার্থ (জিসিবি) উন্নয়ন ও দীর্ঘমেয়াদি পরিচালনার জন্য দেশীয় বার্থ অপারেটররা বিনিয়োগ প্রস্তাব দিয়েছে। প্রাথমিক সমীক্ষার ভিত্তিতে গতকাল বন্দর কর্তৃপক্ষকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনা হস্তান্তর করা হয়েছে।
বোর্টসোয়া বা বার্থ অপারেটরস, শিপহ্যান্ডলিং অপারেটরস অ্যান্ড টার্মিনাল অপারেটরস ওনারস অ্যাসোসিয়েশন একটি কনসোর্টিয়াম গঠন করে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে দেশী-বিদেশী অর্থায়ন নিয়ে টার্মিনালের উন্নয়ন ও পরিচালনার দায়িত্ব নিতে চায়। সংগঠনের সভাপতি ফজলে একরাম চৌধুরী প্রস্তাবনা বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম মনিরুজ্জামানের কাছে হস্তান্তর করেন। এ সময় জিসিবির জেটি পরিচালনাকারী অপারেটররাও উপস্থিত ছিলেন।
বার্থ অপারেটরদের পক্ষে প্রাথমিক সমীক্ষা পরিচালনা করেছে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বিডিআরএস লিমিটেড। সমীক্ষায় বলা হয়েছে, জিসিবিতে ১৯৫৪ সালে ছয়টি জেটি নির্মাণ করা হয়। বাকি ছয়টি জেটি পুনর্নির্মাণ করা হয় ১৯৭৯ সালে। সব জেটিই তাদের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল অতিক্রম করেছে। তাই ধাপে ধাপে পুনর্নির্মাণ ও আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন করে টার্মিনালটি ২৫-৩০ বছরের জন্য পরিচালনা করার পরিকল্পনা রয়েছে।
সমীক্ষা অনুযায়ী, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে কনসোর্টিয়াম গঠন করে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ আনা হবে। প্রাথমিকভাবে টার্মিনাল উন্নয়নে ৬২৭ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৭ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বর্তমানে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের মাধ্যমে জিসিবির ১২টি জেটি ১২টি বার্থ অপারেটর প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে। এর মধ্যে ছয়টি কনটেইনার ও ছয়টি সাধারণ পণ্য ওঠানো-নামানোর কাজে ব্যবহার হয়। ২০০৭ সাল থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ও ২০১০ সাল থেকে দরপত্রের মাধ্যমে জেটিগুলো পরিচালিত হচ্ছে। দেশীয় অপারেটরদের মতে, বন্দরের পুরোপুরি বিদেশী নিয়ন্ত্রণে গেলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, মুনাফা বণ্টন ও শ্রমবাজারে চাপ সৃষ্টি হতে পারে। কনসোর্টিয়াম গঠন করলে এ ভারসাম্য রক্ষা করা সহজ হবে।
বোর্টসোয়া সভাপতি ফজলে একরাম চৌধুরী বলেন, ‘জিসিবির সব জেটিই তাদের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল অতিক্রম করেছে। টার্মিনাল পরিচালনায় আমাদের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে। দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ নিশ্চিত করে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে আধুনিক কনসেপ্টে টার্মিনাল উন্নয়ন করতে চাই। এতে দেশের অর্থ দেশেই থাকবে।’

