মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসকে ইলিশের ভরা মৌসুম ধরা হয়। তবে গতকাল সেই মৌসুম শেষ হয়েছে। এ সময় বাজারে ইলিশ পাওয়া গেলেও দাম কমছে না। উল্টো, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি দাম ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেড়েছে।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে ইলিশের দাম প্রায় ২০ শতাংশ বেড়েছে। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত জুনে প্রতি কেজি ইলিশের দাম ৬০০ থেকে ২২০০ টাকা ছিল। জুলাইয়ে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৯০০ থেকে ২ হাজার টাকায়। আগস্টে সরবরাহ বাড়ার কারণে দাম সামান্য কমে ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকায় হলেও, সেপ্টেম্বরে আবার বেড়ে ৯০০ থেকে ২২০০ টাকায় উন্নীত হয়।
বাজারে ঘুরে দেখা যায়, ৭০০–৮০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৮০০–১৯০০ টাকায়। কয়েক দিন আগে দাম ছিল ১৬০০–১৭০০ টাকা। ৯০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার টাকায়, সোয়া কেজি ওজনের ২৪০০–২৫০০ টাকায় এবং ১ কেজি ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৩০০০–৩২০০ টাকায়।
কারওয়ান বাজারের ইলিশ ব্যবসায়ী মো. রফিক বলেন, “ইলিশের দাম এমনিতেই বেশি। এবার পূজার চাহিদাও আছে, কিন্তু সরবরাহ বাড়েনি। বরিশাল ও চাঁদপুরের আড়তদাররা দাম বাড়ানোর ফলে বাজারে প্রভাব পড়েছে। নদীতে জাল ফেলে জেলেরা কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাচ্ছে না।” তবে বাজার সংশ্লিষ্টরা এই দাবিকে অযৌক্তিক মনে করছেন।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, “যেমন রিকশার ভাড়া বাড়ে অজুহাত দেখিয়ে রোদ-বৃষ্টি হলে, তেমনি সরকারি তদারকি না থাকায় মাছ ব্যবসায়ীরাও দাম বাড়াতে সরবরাহ ঘাটতির অজুহাত দেখাচ্ছে।”
এদিকে, বিটিটিসি ইলিশের দাম বৃদ্ধির জন্য ১১টি কারণ চিহ্নিত করেছে। এতে উল্লেখ আছে—চাহিদা ও সরবরাহের ভারসাম্যহীনতা, মজুত ও সিন্ডিকেট, জ্বালানি ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধি, মাছ ধরার খরচ বৃদ্ধি, নদীর নাব্য সংকট ও পরিবেশগত সমস্যা, অবৈধ জালের ব্যবহার, দাদন, বিকল্প কর্মসংস্থান, নিষিদ্ধ সময়ে মাছ ধরা, মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য এবং রপ্তানির চাপ।

