সরকার পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করবে জিটুজি বা সরকার থেকে সরকার পদ্ধতিতে। এই আমদানির লক্ষ্য ২০২৬ সালের জন্য। একই সঙ্গে এক কোটি ই-পাসপোর্ট কাঁচামাল ও ৫৭ লাখ ই-পাসপোর্ট বুকলেট সরাসরি ক্রয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের ৩৪তম বৈঠকে এই দুই প্রস্তাব অনুমোদন হয়েছে। বৈঠকে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়েছেন কমিটির সভাপতি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। কমিটি জানিয়েছে, রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজন ও জনস্বার্থে দরপত্র ছাড়াই জ্বালানি তেল আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে সরকার সৌদি আরব, মরক্কো ও রাশিয়া থেকে মোট ১ লাখ ১৫ হাজার টন সার কিনবে। এতে ব্যয় হবে ৬৬৪ কোটি ৪০ লাখ ৯৮ হাজার ৪৪০ টাকা। এর মধ্যে ৩০ হাজার টন ইউরিয়া, ৪০ হাজার টন ডিএপি ও ৩৫ হাজার টন এমওপি সার রয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ও মিয়ানমার থেকে ১ লাখ টন চাল কেনা হবে। এ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৪৬ কোটি ২৩ লাখ ৮ হাজার ৫৭০ টাকা। ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের ৪২তম বৈঠকে এই অনুমোদন এসেছে। একই বৈঠকে বরগুনায় ১০ হাজার টন ধারণক্ষমতার বাফার গোডাউন নির্মাণের প্রস্তাবও অনুমোদন হয়েছে।
অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত কমিটির সূত্রে জানা যায়, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ জিটুজি চুক্তির মাধ্যমে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ২০২৬ সালের (জানুয়ারি–ডিসেম্বর) জন্য তেল আমদানির প্রস্তাব দেয়। কমিটি প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করে নীতিগত অনুমোদনের সুপারিশ করেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন’ প্রকল্পের আওতায় ১ কোটি ই-পাসপোর্ট কাঁচামাল এবং ৫৭ লাখ ই-পাসপোর্ট বুকলেট ও প্রশিক্ষণ প্যাকেজ সরাসরি ক্রয়ের প্রস্তাব দেয়। কমিটি এ প্রস্তাবটিও অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করেছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে মরক্কোর ওসিপি নিউট্রিক্রপস থেকে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার ক্রয় অনুমোদন পেয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) আমদানির দায়িত্ব নেবে। ব্যয় হবে ৩৬০ কোটি ১ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা। প্রতি টনের দাম ধরা হয়েছে ৭৩৫.৩৩ ডলার। রাশিয়ার জেএসসি ফরেন ইকোনমিক করপোরেশন থেকে ৩৫ হাজার টন এমওপি সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫২ কোটি ৬২ লাখ টাকা। প্রতি টনের দাম ৩৫৬.২৫ ডলার। সৌদি আরবের স্যাবিক অ্যাগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ৩০ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানি করা হবে। এর ব্যয় ১৫১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। প্রতি টন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪১৩.৩৩ ডলার।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে ২০২৫–২৬ অর্থবছরে ৫০ হাজার টন নন-বাসমতী সেদ্ধ চাল কেনা হবে দুবাইয়ের মেসার্স ক্রিডেন্টওয়ান এফজেডসিও থেকে। এর ব্যয় হবে ২১৬ কোটি ৯০ লাখ ৪৭ হাজার ৭০ টাকা। প্রতি টনের দাম পড়বে ৩৫৫.৯৯ ডলার। মিয়ানমার থেকে ৫০ হাজার টন আতপ চাল জিটুজি পদ্ধতিতে আমদানি করা হবে। এর ব্যয় ২২৯ কোটি ৩২ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ টাকা। প্রতি টনের দাম ৩৭৬.৫০ ডলার।
ক্রয় কমিটি আরও অনুমোদন দিয়েছে ‘৩৪টি বাফার গুদাম নির্মাণ (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্পের বরগুনা সাইটের ১০ হাজার টন ধারণক্ষমতার গোডাউনের নির্মাণ কাজ। এটি এম/এস এমবিএল-আরইএল (জেভি), ঢাকা বাস্তবায়ন করবে। ব্যয় ধরা হয়েছে ৫১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।

