মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীদের টানা আন্দোলনের মুখে অবশেষে পুরনো (ব্যবহৃত) ফোন আমদানির বিষয়ে নরম অবস্থান নিয়েছে সরকার। জানানো হয়েছে—কিছু নির্দিষ্ট মডেলের পুরনো ফোন বিদেশ থেকে আনার অনুমতি দেওয়া হবে, তবে কোন মডেলগুলো আমদানি করা যাবে তা সরকারই ঠিক করবে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিদ্ধান্তটি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মোবাইল ফোন আমদানিতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে কত পুরোনো ফোন আনা হবে এবং কোন কোন মডেল অনুমোদিত হবে, তা ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাবে। আমদানিকারকদেরও এসব বিষয়ে সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করতে হবে। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে পরের দিন লিখিতভাবে বিষয়টি জানাতে বলা হয়েছে।
মন্ত্রণালয় জানায়, মোবাইল ফোন আমদানিতে যে শুল্ক কাঠামো রয়েছে, সেটি পুনর্নির্ধারণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এ প্রক্রিয়ায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ মধ্যস্থতার দায়িত্ব পালন করবে। আমদানিকারক ও স্থানীয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো যৌথভাবে নিজেদের মতামত সরকারকে লিখিতভাবে দেবে।
ঘোষণাটি এসেছে এনইআইআর (ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার) ব্যবস্থা চালুর বিরোধিতা করে ‘আনঅফিসিয়াল ফোন’ ব্যবসায়ীদের ধারাবাহিক আন্দোলনের প্রেক্ষিতে। গত কয়েক দিন ধরে ব্যবসায়ীরা এনইআইআর বাতিলের দাবিতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে আসছিলেন।
বুধবার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে বিটিআরসি, এনবিআর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের নিয়ে বহুপক্ষীয় বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়—অবৈধ বা অনিবন্ধিত ফোনগুলো আগামী ১৫ মার্চ পর্যন্ত নিবন্ধনের সুযোগ দেওয়া হবে। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, ১৬ ডিসেম্বর থেকেই এনইআইআর কার্যকর হবে।
বৈঠক শেষে মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশের (এমবিসিবি) সভাপতি মোহাম্মদ আসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের শর্ত মেনে তারা পুরনো ফোন আমদানির অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”
পুরনো ফোন আমদানিতে কর আরোপ হবে কি না—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “ট্যাক্স তো সরকার নেবেই। আমরা শুধু বলেছি কর যেন সহনীয় হয়।”
নতুন ফোন আমদানির কর কাঠামো নিয়েও আলোচনা হয়েছে। মোহাম্মদ আসলাম বলেন, “৫৭ শতাংশ কর দিয়ে বিদেশ থেকে ফোন এনে দেশে বিক্রি করা যায় না। এতে স্থানীয় উৎপাদনকারীর সঙ্গে প্রতিযোগিতাও সম্ভব নয়। তাই আমরা চাইছি ট্যাক্সটা যেন যুক্তিসঙ্গত হয়, বাজার যেন স্থিতিশীল থাকে এবং সাধারণ মানুষ যেন সাশ্রয়ী দামে ফোন কিনতে পারে।”

