জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক পুলিশ প্রধানসহ আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বুধবার ২০ নভেম্বর, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এই নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে আসামিদের কারাগারে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ১৯ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।
আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। প্রসিকিউশনের আবেদনের ভিত্তিতে আসামিদের হাজির করতে ট্রাইব্যুনাল নির্দেশ দেয়। এর আগে ২৭ অক্টোবর, বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আবেদনে সাড়া দিয়ে তাদের ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত করার আদেশ দেন।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান, ঢাকা জেলার সাবেক পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল কাফি, মিরপুর ডিএমপির সাবেক ডিসি মো. জসিম উদ্দিন মোল্লা, ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুর ইসলাম, যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান, গুলশান থানার সাবেক ওসি মাজহারুল হক এবং ঢাকা উত্তর ডিবির সাবেক পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন।
এই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে সংঘটিত জুলাই-আগস্টের গণহত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা তৎকালীন পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করেছেন।
ট্রাইব্যুনালের আদেশ ও ভবিষ্যৎ কার্যক্রম-
বিচারকরা আসামিদের কারাগারে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন এবং আগামী এক মাসের মধ্যে মামলার তদন্ত সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রসিকিউশনের পক্ষে দাবি করা হয়েছে, এই মামলায় পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত ও সাক্ষ্য-প্রমাণ রয়েছে, যা তদন্ত শেষে উপস্থাপন করা হবে।
আসামিদের মধ্যে যারা গ্রেফতার হয়েছেন, তাদের ইতোমধ্যে প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে হাজির করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলার অগ্রগতি বাংলাদেশে বিচার বিভাগের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হতে পারে। এটি দেশটির যুদ্ধাপরাধ বিচার কার্যক্রমে আরও একটি নজির স্থাপন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শুনানি ও তদন্তের পরবর্তী ধাপ সম্পর্কে বিস্তারিত আপডেটের জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।