সুইডেনের অন্যতম ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ গ্যাং লিডার ইসমাইল আবদোকে তুরস্কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৩৫ বছর বয়সী এই ব্যক্তি ‘দ্য স্ট্রবেরি’ নামে পরিচিত এবং সুইডিশ অপরাধী চক্র ‘রুম্বা’র নেতা।
সুইডিশ কৌঁসুলির কার্যালয় জানায়, তুরস্ক-সুইডেনের দ্বৈত নাগরিক আবদোর বিরুদ্ধে বহুদিন ধরেই মাদক ও সহিংসতার অভিযোগ রয়েছে। ইন্টারপোল তার বিরুদ্ধে ‘রেড নোটিস’ জারি করেছিল। বিদেশ থেকে সুইডেনে গ্যাং কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম টিআরটি জানায়, এক অভিযানে আবদোসহ ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে এক টনেরও বেশি মাদক। অভিযান কোথায় হয়েছে, তা জানানো হয়নি। আরও ২১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৪ জন বিদেশে অবস্থান করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনজন আগে থেকেই পুলিশ হেফাজতে এবং চারজন পলাতক। এ অভিযানে তুর্কি কর্তৃপক্ষ প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ ডলারের সম্পদ জব্দ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ২০টি গাড়ি, একাধিক ব্যাংক হিসাব ও ৫১টি স্থাবর সম্পত্তি।
সুইডিশ পুলিশ আবদোর নাম প্রকাশ না করলেও জানিয়েছে, বহুদিন ধরে মাদক পাচার ও সহিংসতার উসকানির সঙ্গে যুক্ত একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আবদোর সঙ্গে সুইডেনের গ্যাং সহিংসতার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। একসময়কার ঘনিষ্ঠ বন্ধু রাওয়া মাজিদ এখন প্রতিদ্বন্দ্বী গ্যাং ‘ফক্সট্রট’-এর নেতা। এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চলমান সংঘর্ষে অনেক প্রাণহানি ঘটেছে। ২০২৩ সালে স্টকহোমের উপসালায় নিজ বাড়িতে আবদোর মা খুন হন। ওই ঘটনার পর সংঘর্ষ আরও তীব্র হয়।
সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে সরকার সেনাবাহিনী নামানোর সিদ্ধান্ত নেয়। নির্বাচনের আগে গ্যাং সহিংসতা ঠেকানোর অঙ্গীকার করে ক্ষমতায় আসে সুইডেনের মধ্য-ডানপন্থি জোট সরকার। আবদোর গ্রেপ্তারে তারা বড় ধরনের সাফল্য দেখছে। তবে চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। আবদো তুরস্কের নাগরিক হওয়ায় তাকে সুইডেনে প্রত্যার্পণ সহজ হবে না। এর আগে ২০২৩ সালে তুরস্কের পুলিশ এক ট্রাফিক স্টপে আবদোকে গ্রেপ্তার করে। পরে জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয়, যদিও তখনও তার নামে ‘রেড নোটিস’ জারি ছিল। ওই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানায় সুইডিশ কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, গত বছর সুইডেনের নিরাপত্তা সংস্থা সাপো অভিযোগ করে জানায়, ইরান সুইডিশ গ্যাং সদস্যদের দিয়ে ইসরায়েলি ও ইহুদি স্বার্থ সংশ্লিষ্ট স্থানে হামলা চালানোর চেষ্টা করছে। অক্টোবর মাসে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোর ইসরায়েলি প্রযুক্তি কোম্পানি এলবিট সিস্টেমসের কার্যালয়ের বাইরে গুলি ছোড়ে। লক্ষ্য ছিল সুইডেন ও ডেনমার্কে অবস্থিত ইসরায়েলি দূতাবাসও। সুইডিশ পুলিশের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রায় ১৪ হাজার লোক সরাসরি গ্যাং অপরাধে জড়িত, এবং আরও ৪৮ হাজারের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।