দেশে দীর্ঘদিন ধরে জমি দখল ও বেদখল সংক্রান্ত জটিলতায় ভোগা প্রকৃত মালিকদের জন্য এসেছে আশার খবর। সরকার নতুন ভূমি আইন পাস করেছে, যার আওতায় এখন মাত্র সাত দিনের মধ্যেই জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে বেদখল জমি উদ্ধার করা যাবে।
নতুন এই আইন কার্যকর হলে আর দীর্ঘ আদালত প্রক্রিয়ার ঝামেলায় পড়তে হবে না। জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকেই জমির মালিকরা সহজে তাদের দখল ফিরে পেতে পারবেন। জানা গেছে, ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রশাসন ও আদালত একযোগে আইনটি বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছে।
দ্রুত সমাধানের নতুন প্রক্রিয়া:
আইনের ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তির জমি জবরদখল হলে এবং তার কাছে মালিকানার বৈধ দলিল থাকলে, তিনি সরাসরি ডিসি অফিসে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন পাওয়ার পর একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিষয়টি তদন্ত করবেন। তদন্ত শেষে সাত দিনের মধ্যেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে মালিককে তার জমির দখল ফিরিয়ে দেওয়া হবে। তবে তদন্ত প্রক্রিয়া জটিল হলে তিন মাসের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। দোষ প্রমাণিত হলে অবৈধ দখলদারদের দুই থেকে সাত বছর কারাদণ্ডের বিধানও রাখা হয়েছে।
আদালতের বিকল্প ব্যবস্থা:
নতুন আইনে বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট শ্রেণির জমি-বিরোধে এখন আর আদালতে মামলা করার প্রয়োজন হবে না। পরিবর্তে সরাসরি ডিসি অফিসে আবেদন করে সমাধান পাওয়া যাবে। এছাড়া, বাটোয়ারা (সম্পত্তি ভাগ-বণ্টন) সংক্রান্ত বিরোধে এখন থেকে লিগ্যাল এইড সেন্টার-এর মাধ্যমে বিনা খরচে সমাধান সম্ভব হবে। এতে ভাই-বোন বা ওয়ারিশদের মধ্যে জমি ভাগাভাগির বিরোধ দ্রুত নিষ্পত্তি করা যাবে।
আইনের অপব্যবহার ঠেকাতে সরকার সতর্কতা জারি করেছে। ভুয়া মালিক বা জাল কাগজপত্র ব্যবহার করে কেউ যদি জমি দখল নিতে চায়, তবে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই নতুন আইন বাস্তবায়িত হলে ভূমি দখল, দীর্ঘস্থায়ী মামলা ও প্রভাবশালীদের অনিয়মে জমি দখলের প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে। তাদের মতে, প্রকৃত মালিকরা এখন থেকে আইনগত প্রক্রিয়া মেনে দ্রুত সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের সুযোগ পাবেন—এটাই এই আইনের সবচেয়ে বড় সাফল্য।

