ভারতীয় উপমহাদেশে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার সূচনা হয়েছিল লর্ড রিপনের হাত ধরে। জর্জ ফ্রেডেরিক স্যামুয়েল রবিনসন নামে জন্ম নেয়া এই ব্রিটিশ প্রশাসক ১৮৮০ থেকে ১৮৮৪ সাল পর্যন্ত ভারতের ভাইসরয়ের দায়িত্বে ছিলেন। তিনিই স্থানীয় সরকার আইন ১৮৮২ প্রবর্তন করেন, যার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ভারতবর্ষে মিউনিসিপ্যালিটি ও স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয়।
লর্ড রিপনের উদ্যোগে এই ব্যবস্থা ধীরে ধীরে বিকশিত হতে থাকে। পরবর্তী ব্রিটিশ ও পাকিস্তান শাসনামলেও স্থানীয় সরকারের কাঠামো বিভিন্ন রূপে টিকে থাকে। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের সংবিধানেও স্থানীয় শাসন ব্যবস্থার ধারা অব্যাহত রাখা হয়। তবে ১৯৭৪ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে ১১, ৫৯ ও ৬০ অনুচ্ছেদ বাতিল করা হয়, যার ফলে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা কার্যত বিলুপ্ত হয়।
পরে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে এই অনুচ্ছেদগুলো পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। এর পর তৎকালীন সরকার তৃণমূল পর্যায়ে বিচার ও প্রশাসনের সুবিধা পৌঁছে দিতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আইন প্রণয়ন করে। ১৯৭৬ সালে ‘দ্য ভিলেজ কোর্ট অর্ডিন্যান্স’ এবং ১৯৭৭ সালে ‘পৌরসভা অর্ডিন্যান্স’ পাস হয়। এই দুটি আইন পরবর্তীতে বাতিল করে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয় ‘গ্রাম আদালত আইন, ২০০৬’ এবং ‘স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯’ দ্বারা।
অন্যায় পক্ষ সবসময়ই শক্তিশালী আর ন্যায় পক্ষ তুলনামূলক দুর্বল—এটাই সমাজের চিরন্তন বাস্তবতা। বিচার চাইতে গিয়ে ন্যায়প্রার্থীরা আর্থিক সংকটে পড়ে অনেক সময় মামলা দীর্ঘদিন চালাতে পারতেন না। এই সুযোগই কাজে লাগাত অসাধু লোকেরা। ব্রিটিশ শাসনামলে বিচার ব্যবস্থার অকার্যকারিতা ও জটিলতার কারণে অনেকেই সে পথ এড়িয়ে যেতেন। তুলনামূলকভাবে কম খরচে ও দ্রুত ন্যায়বিচারের আশায় তারা স্থানীয় সালিশ বিচারকের শরণাপন্ন হতেন। ব্রিটিশ সরকার যেহেতু শোষণনীতির ভিত্তিতে শাসন কাঠামো গড়ে তুলেছিল, তাই বিচার ব্যবস্থাও গঠিত হয়েছিল তাদের সুবিধামতো। তারা সচেতনভাবেই বিচার প্রশাসনকে ‘শুভংকরের ফাঁকি’র মতো করে সাজিয়েছিল। তবু নৈতিকতার কিছু ছাপ রাখতে ঘুষ গ্রহণের বিরুদ্ধে আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল।
এই প্রেক্ষাপটে গ্রামীণ সালিশ প্রথাকে আইনি কাঠামোর আওতায় আনতে ২০০৬ সালে পাস হয় ‘গ্রাম আদালত আইন, ২০০৬’। বিশেষ করে গ্রামের দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ছোটখাটো দেওয়ানি ও ফৌজদারি বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে এ আদালত গঠন করা হয়। আইনের উদ্দেশ্য ছিল আনুষ্ঠানিক বিচারব্যবস্থার জটিলতা ও সময়ক্ষেপণ দূর করে স্থানীয় সালিশ প্রক্রিয়াকে কার্যকর করা। যদিও এখনো এই লক্ষ্য পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি, বিশেষজ্ঞরা একে বিকল্প আনুষ্ঠানিক বিচারব্যবস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে আসছেন।
আইনটি পরে ২০১৩ ও ২০১৮ সালে সংশোধনের মাধ্যমে হালনাগাদ করা হয়। এ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি বা পক্ষ কোনো বিরোধ মীমাংসার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করলে চেয়ারম্যান নির্ধারিত নিয়মে গ্রাম আদালত গঠন করেন। ইউনিয়ন পরিষদকে সংশ্লিষ্ট বিধি-বিধান মেনে এবং আদালতের কাছে জবাবদিহির আওতায় থেকেই এ আদালত পরিচালনা করতে হয়।
গ্রাম আদালত কার্যকর না হওয়ার পেছনে প্রধান কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রশাসনিক অমনোযোগিতা, অসহযোগিতা ও কখনো সরাসরি প্রতিবন্ধকতা। আইনি কাঠামোর আওতায় পরিচালিত হওয়ায় এর সিদ্ধান্ত ও নথিপত্রের আইনি ভিত্তি থাকে। ফলে পক্ষগুলোর মধ্যে কেউ যদি মিথ্যা তথ্য দেয়, তা প্রকাশ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় অনেকে গ্রাম আদালতে যেতে অনীহা প্রকাশ করেন। অন্যদিকে, নির্ধারিত ফি জমা ও রেকর্ড সংরক্ষণের জটিলতাও ইউনিয়ন পরিষদকে নিরুৎসাহিত করে। এজন্য অনেক ইউনিয়ন পরিষদ এখনো ঐতিহ্যবাহী সালিশ পদ্ধতিকেই বেশি গ্রহণযোগ্য মনে করে। ফলে গ্রামীণ সমাজে সালিশ সংস্কৃতি এখনো জনপ্রিয় ও কার্যত অপ্রতিরোধ্য।
তবে গ্রাম আদালতের কার্যক্রমে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের উপস্থিতি অনেক সময় ভুক্তভোগীদের সত্য বলার সাহস কেড়ে নেয়। প্রশাসনিক সংযোগ, রাজনৈতিক প্রভাব, পেশিশক্তি ও দুর্নীতির কারণে অনেক ক্ষেত্রে রায় পক্ষপাতদুষ্ট হয়। স্থানীয়দের মতে, এমনকি আনুষ্ঠানিক আদালত রায় ঘোষণা করার পরও তা বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে প্রশ্ন থেকে যায়—সংস্কার ও সংশোধনের পরও গ্রাম আদালত কি সত্যিই সেই মানুষগুলোর জন্য কার্যকর হচ্ছে, যাদের এটি সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন?
মাঠপর্যায়ের গবেষণায় দেখা গেছে, বিকেন্দ্রীকরণের ফলে ইউনিয়ন পরিষদের সচিবদের ওপর কাজের চাপ বাড়লেও গ্রাম আদালতের সেবা প্রদানে তাদের পর্যাপ্ত দক্ষতা ও সক্ষমতার অভাব রয়েছে। গ্রাম আদালতের মূল লক্ষ্য ছিল ন্যায়-অন্যায় নির্ধারণ করে বিরোধের আপসমূলক সমাধান নিশ্চিত করা, কিন্তু স্থানীয় সরকার সংস্থার অমনোযোগিতা, অসহযোগিতা ও দুর্নীতির কারণে এ আদালত কার্যকরভাবে কাজ করতে পারছে না। সরকারের অনমনীয় বা নির্বিকার ভূমিকার কারণে প্রাথমিক পর্যায়ের এই বিচার প্রক্রিয়া অনেকাংশে স্থবির হয়ে আছে। ফলে মানুষ আদালত ও থানার জটিলতা ও দীর্ঘ প্রক্রিয়ার কারণে অনুমোদনবিহীন গ্রাম্য সালিশ বিচারের দিকে বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাধারণ মানুষ আদালত, থানা ও বিভিন্ন দালালদের অপপ্রভাব থেকে মুক্তি পাচ্ছে।
তবে গ্রাম আদালত সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ নীতির সঙ্গে এর সামঞ্জস্য নেই। আইনটি বাতিল হলে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থার মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি হবে। এতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার পাশাপাশি মানুষের নিরাপত্তা ও ন্যায্য সালিশ প্রক্রিয়া বজায় রাখা সম্ভব হবে। গ্রাম আদালত জনসাধারণের মধ্যে নিয়মিত শুনানি আয়োজন ও প্রচারণায় ব্যর্থ হয়েছে। বিশেষ করে, কোনো চেয়ারম্যান যদি বিরোধের পক্ষের সঙ্গে পারিবারিক বা ব্যবসায়িক সম্পর্ক রাখেন, তাহলে সেই অবস্থায় প্রত্যাখ্যানের নিয়মগুলো স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা জরুরি। স্থানীয় বিচার ব্যবস্থার রূপান্তর ন্যায়বিচার ও অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধির কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে। বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির (এডিআর) প্রক্রিয়া বা ঐতিহ্যবাহী সালিশ গ্রামীণ এলাকায় ন্যায্যতা ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
ঐতিহ্যবাহী সালিশ বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থার মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করতে পারে। এর মাধ্যমে ন্যায়বিচার এবং মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি কার্যকর ও সুষ্ঠু সালিশ প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা সম্ভব। ন্যায্যতার স্বার্থে নীতিনির্ধারকদের উচিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কর্তৃত্ব সীমিত করা। পাশাপাশি প্রত্যাখ্যানের নিয়ম, অধিবেশনের জনসাধারণে ঘোষণা, এবং একজন প্যানেলিস্টকে বাদ দেয়ার ক্ষেত্রে পক্ষগুলোর অধিকার নিশ্চিত করা জরুরি।

পক্ষপুষ্ট জনপ্রতিনিধি, বিচারিক জ্ঞানের অভাব এবং লালসালুতে আবৃত বিচার কাঠামোর কারণে সাধারণ বিচারপ্রার্থীরা গ্রাম আদালতে ভীতি বোধ করেন। এই সীমাবদ্ধতা গ্রাম আদালতের কার্যকারিতায় প্রশ্ন তুলে। তাই গ্রাম আদালত আইন বাতিল করে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) পদ্ধতিকে প্রাধান্য দেওয়াই এখন সময়ের দাবি। এডিআর দ্রুত, সুলভ ও সহজ সমাধান প্রদান করে, আদালতের মামলার চাপ কমায় এবং উভয় পক্ষের জন্য লাভজনক পরিস্থিতি তৈরি করতে সাহায্য করে।
সর্বোপরি, আইন সংস্কার ও আপস-মীমাংসার এখতিয়ার সম্প্রসারণ, অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের সঙ্গে মিলিয়ে মামলাকারীদের সময় ও অর্থ সাশ্রয় করবে। ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিটি ওয়ার্ডে আপস-মীমাংসা কেন্দ্র স্থাপন করলে ভুক্তভোগীরা কেবল নিজের ওয়ার্ডের সালিশকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন। উপজেলা আদালত ও গ্রামের সালিশ ব্যবস্থাকে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে সমন্বয় করা গেলে গ্রামাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী সালিশ সংস্কৃতিকে নতুন আঙ্গিকে পুনর্গঠন করা সম্ভব।
দেওয়ানি কার্যবিধি, ১৯০৮-এর ৮৯- এ ধারার অনুযায়ী আদালতের মামলা সালিশ বিচারে নিষ্পত্তি করা অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হয়। আপস-নিষ্পত্তিকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার জন্য বিচারকের সিদ্ধান্ত দক্ষতায় দ্বিগুণ পয়েন্ট সংযুক্ত করা হয়। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী পাড়া-প্রতিবেশীর উপস্থিতিতে কারো সহায়তা ছাড়া পক্ষগুলোকে সরাসরি বক্তব্য রাখতে হয়, ফলে কেউ সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য দেয়ার সাহস পায় না। সাক্ষীর ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য।
সালিশ বিচার মূলত উইন-উইন ব্যবস্থা, বন্ধুসুলভ মনোভাবের ভিত্তিতে সামাজিক মীমাংসা নিশ্চিত করে। এখানে বিচারকরা শুধু সাজা দেন না, বরং মনস্তাত্ত্বিক ও সামাজিক দূরত্ব দূর করার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করেন। আইনজীবী বা তৃতীয় মাধ্যমে দীর্ঘসূত্রতার সুযোগ নেই। গ্রামে সালিশ, উপজেলায় আদালত—এইভাবে স্থানীয় জনগণের সুবিধার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। সালিশের মাধ্যমে আপস-মীমাংসা সাধারণত পক্ষদের নিজ পরিবেশে হয়, তাই সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় রাখা সম্ভব হয়।
সালিশকারীরা কেবল জবানবন্দি, জবাব ও সাক্ষীর ওপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নেন না। প্রয়োজনে তারা বিশ্বস্ত তৃতীয় পক্ষের অভিমতও গ্রহণ করেন। ফলে তদন্ত পদ্ধতির জটিলতা দূর হয় এবং বিচারে দীর্ঘসূত্রতা অসম্ভব হয়ে যায়। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে বিচারকরা তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয় মূল্যায়ন করেন। প্রতিটি রায়ে বন্ধুসুলভ দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হয়। কোনো পক্ষ অসন্তুষ্ট হলে তাৎক্ষণিক পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ থাকে। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী সালিশ বিচার প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সকল বাধা-বিপত্তি মোকাবেলা করে অপ্রতিরোধ্য গতিতে সমাজসেবায় নিয়োজিত।
‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০’-এর ২০১৩ সালের সংশোধনী অনুযায়ী ২১ক ধারা প্রতিস্থাপন করে স্থানীয় লিগ্যাল এইড অফিসারদের বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে অর্থাৎ, আইনের অধীনে কোনো আদালত বা ট্রাইব্যুনাল যদি কোনো বিষয় প্রেরণ করে, যা স্থানীয় এলাকার অধিক্ষেত্রে পড়ে, তা লিগ্যাল এইড অফিসার বিকল্প পদ্ধতিতে নিষ্পত্তি করতে পারবেন। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতিকে আইনি স্বীকৃতি ও কার্যকর ক্ষমতা প্রদান করেছে।
বৃহৎ পরিসরে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে লিগ্যাল এইড অফিসারের কার্যক্রমকে বিচারিক কর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। একজন লিগ্যাল এইড অফিসার সাধারণত সিনিয়র সহকারী জজ বা সহকারী জজ পদমর্যাদার বিচারক হিসেবে কাজ করেন। তিনি বিচার বিভাগের এখতিয়ারভুক্ত আপসযোগ্য বিষয়গুলো তত্ত্বাবধানে সফলভাবে নিষ্পত্তি করছেন।
স্থানীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিরা—যেমন শিক্ষক, চিকিৎসক বা স্থানীয় প্রতিনিধি—‘লিগ্যাল এইড অ্যান্ড মেডিয়েশন সার্ভিসেস অধিদপ্তর’-এর অধীনে প্রশিক্ষণ নিয়ে সার্টিফায়েড মেডিয়েটর হিসেবে ভূমিকা রাখবেন। স্থানীয় সরকার এই আপস-মীমাংসা কেন্দ্রগুলোর কার্যক্রম উৎসাহিত করবে। স্থানীয় পর্যায়ে আপস-মীমাংসা সফল হলে চূড়ান্ত অনুমোদন উপজেলা লিগ্যাল এইড অফিসার প্রদান করবেন।
যদি কোনো পক্ষ স্থানীয় মেডিয়েটরের মাধ্যমে মীমাংসা করতে অনিচ্ছুক হন, তাহলে উপজেলা বা জেলা লিগ্যাল এইড অফিসারের তত্ত্বাবধানে পুনরায় রেডিয়েশন করার সুযোগ থাকবে। স্থানীয় মেডিয়েশন ব্যর্থ হলে, উপজেলা লিগ্যাল এইড অফিসার পুনরায় রেডিয়েশনের চেষ্টা করবেন। এরপরও ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট পক্ষ মামলা দায়ের করতে পারবেন। এভাবে শুধু মামলাযোগ্য বিষয়গুলোই প্রাতিষ্ঠানিক আদালতে যাবে। বিপরীতক্রমে, আদালতও লিগ্যাল এইড অফিসারের কাছে মামলা আপস-মীমাংসার জন্য প্রেরণ করতে পারবেন।
সূত্র: ড. মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম: অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; ভিজিটিং প্রফেসর, অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ ও হার্ভার্ড ও সদস্য, স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন ২০২৪।

