বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনায় ১৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। মামলাটির বিচারকাজ শিগগির শুরু হবে।
ঘটনাটি ঘটে চলতি বছরের ৫ মার্চ। ওই দিন শেয়ার কেলেঙ্কারি ও দুর্নীতির অভিযোগে বাধ্যতামূলক অবসরের আদেশ প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে কমিশনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা চেয়ারম্যানকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. সামিউল হক শিপন জানান, ‘‘ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ১৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছি।’’ তিনি আরও বলেন, এজাহারে ১৬ জনের নাম থাকলেও অতিরিক্ত একজন, উপপরিচালক মো. নানু ভূঁইয়ার সম্পৃক্ততার প্রমাণ মেলায় তাঁকেও চার্জশিটভুক্ত করা হয়েছে।
আসামি সাইফুর রহমানের আইনজীবী গোলাম কিবরিয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘‘সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়াই চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, আমার মক্কেল ঘটনাস্থলে ছিলেন না। আমরা আইনি লড়াই চালিয়ে যাব।’’
শেরেবাংলা নগর থানার জিআর শাখার কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানান, ২৭ নভেম্বর আদালতে চার্জশিট উপস্থাপন করা হবে। মামলার ১৬ জন আসামি আত্মসমর্পণ করে জামিনে আছেন।
চার্জশিটে বলা হয়, ৫ মার্চ সকাল সাড়ে ১১টায় বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে কমিশনের সভা চলাকালে সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম ও রেজাউল করিম, পরিচালক আবু রায়হান মো. মোহতাছিন বিল্লাসহ ১৭ কর্মকর্তা জোরপূর্বক সভাকক্ষে প্রবেশ করে চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। তারা কমিশনের মূল ফটকে তালা দেন, সিসি ক্যামেরা, ওয়াইফাই, লিফট ও বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করেন।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, আসামিরা অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন এবং এসির রিমোট চেয়ারম্যানের দিকে ছুড়ে মারেন। তারা চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব মো. জাহাঙ্গীর হোসেনকে লাঞ্ছিত করেন এবং সাইফুর রহমানের অবসরের আদেশ বাতিলসহ বিভাগীয় পদক্ষেপ প্রত্যাহারের দাবি জানান।
তদন্তে জানা যায়, বিএসইসির এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০২৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর কমিশন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে। এর ভিত্তিতে কিছু কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয় এবং সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে শেয়ারবাজার লুটপাট ও অবৈধ সম্পদ গড়ার অভিযোগে ব্যাংক হিসাব জব্দ ও পাসপোর্ট বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ ঘটনার পর বিএসইসি চেয়ারম্যানের গানম্যান মো. আশিকুর রহমান বাদী হয়ে ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরবর্তীতে তদন্তে মোট ১৭ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।

