২০২৪ সালে ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজারে প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার অবৈধ লেনদেন হয়েছে। গত কয়েক বছরে ডিজিটাল কারেন্সি ব্যবহার করে অপরাধের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। এসব লেনদেনে র্যানসমওয়্যার পেমেন্ট, প্রতারণা এবং অন্যান্য অপরাধী কার্যকলাপের ঘটনা ছিল। ব্লকচেইন ডাটা প্ল্যাটফর্ম চেইনঅ্যালিসিসের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়।
চেইনঅ্যালিসিস জানায়, গত বছর অপরাধীদের ক্রিপ্টোকারেন্সি অ্যাকাউন্টে বড় অঙ্কের টাকা জমা পড়েছে। এই কারণে ২০২৪ সালকে ডিজিটাল অপরাধের একটি সফল বছর বলা হচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিটকয়েন এবং ইথেরিয়ামের মতো ক্রিপ্টোকারেন্সিতে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি দেখছেন অপরাধীরা। এসব কারেন্সি কোনো একক কর্তৃপক্ষ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয় এবং এসবের শনাক্তকরণও কঠিন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ৪০ বিলিয়ন ডলার অবৈধ লেনদেনের পরিমাণ সাইবার অপরাধ মোকাবিলায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। যদিও ক্রিপ্টোকারেন্সি শিল্পে স্বচ্ছতা এবং নিরাপত্তা বাড়ানোর প্রচেষ্টা চলছে। তবুও অপরাধীরা নতুন উপায়ে সিস্টেমটিকে কাজে লাগাচ্ছে। এর ফলে এটি আর্থিক নিরাপত্তার জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চেইনঅ্যালিসিস জানায়, সময়ের সঙ্গে আরও তথ্য আসার কারণে ২০২৪ সালের অবৈধ লেনদেনের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। ফলে এই পরিমাণ ৪ হাজার কোটি ডলার থেকে বেড়ে ৫ হাজার কোটি ডলারও ছাড়াতে পারে। তবে এই হিসাব শুধু ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পর্কিত অপরাধের। নন-ক্রিপ্টো অপরাধের অর্থ এই পরিসংখ্যানে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। যদি নন-ক্রিপ্টো অপরাধ থেকেও অর্থ যোগ করা হয়। তবে অপরাধের পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে।
২০২৩ সালে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার করে অপরাধমূলক কার্যকলাপে যুক্ত মোট অর্থ ছিল ৪ হাজার ৬১০ কোটি ডলার। ওই বছর মোট লেনদেনের মধ্যে অপরাধমূলক লেনদেন ছিল দশমিক ৬১ শতাংশ। কিন্তু ২০২৪ সালে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে দশমিক ১৪ শতাংশে।
চেইনঅ্যালিসিস বলছে, সাইবার অপরাধীরা এখন বিটকয়েনের বদলে স্টেবলকয়েনস ব্যবহার করছে। বিটকয়েন দীর্ঘদিন ধরে র্যানসমওয়্যার আক্রমণে সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিল। তবে গত বছর এটি কমে ২০ শতাংশে চলে গেছে। স্টেবলকয়েনস এখন ৬৩ শতাংশ অবৈধ লেনদেনের জন্য দায়ী। স্টেবলকয়েনস এমন ধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সি যা ফিয়াট মুদ্রার সঙ্গে যুক্ত থাকে এবং এর মূল্য ওঠানামা করে না। এটি অপরাধীদের জন্য আরও সহজ এবং নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠেছে।
এই তথ্যগুলি থেকে পরিষ্কার যে, ক্রিপ্টোকারেন্সি সেক্টরে অপরাধ বাড়ছে। এটি সাইবার নিরাপত্তা এবং আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।