চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের আট কর্মকর্তাকে বন্ড সুবিধার অপব্যবহারের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, কনটেইনারপ্রতি ঘুষ নিয়ে প্রাপ্যতার বাইরে বিপুল পরিমাণ কাপড় খালাস দেওয়া হয়েছে। এতে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত সাভারের হেমায়েতপুরের এনএইচ অ্যাপারেলস লিমিটেডকে ঘিরে। প্রতিষ্ঠানটির বন্ড সুবিধায় আমদানির অনুমতি ছিল ১১৩ টন কাপড়ের। অথচ তারা আমদানি করেছে প্রায় ১ হাজার ১১৩ টন। এর মধ্যে প্রাপ্যতার বাইরে ৮২১ টনের বেশি কাপড় খালাস নেওয়া হয়। অভিযোগ অনুযায়ী, এ সময় দুজন রাজস্ব কর্মকর্তা ও ছয়জন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা কাগজপত্র যাচাই না করে কনটেইনারপ্রতি ২ লাখ টাকা ঘুষ নেন।
বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন—রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মজিদুল হক ও মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এবং সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আবু রায়হান সিদ্দিকী, মো. রেজওয়ান উল কবীর, মো. সাইফুদ্দিন, মো. রুবেল আলম, হালিমা সাদিহা রিতা ও আতিক উল্লাহ।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ শফি উদ্দিন স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়, এনএইচ অ্যাপারেলস ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৫ সালের মে পর্যন্ত ৯১টি বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে। এর মধ্যে ৭৪টি বিল অব এন্ট্রির মাধ্যমে প্রাপ্যতার বাইরে ৮ লাখ ২০ হাজার কেজির বেশি কাপড় খালাস দেওয়া হয়েছে।
নথি ঘেঁটে দেখা গেছে, শুল্কায়নকালে প্রাপ্যতার সঠিক হিসাব করা হয়নি। এতে সরকারের বিপুল রাজস্ব ক্ষতির ঝুঁকি তৈরি হয়। তদন্তে উঠে এসেছে, সাবটিম-১৪–এর দায়িত্বে থাকা আট কর্মকর্তা তাঁদের দায়িত্বে অবহেলা করেছেন। যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮-এর বিধি ২(খ) ও ৩(খ)-এ বর্ণিত অপরাধ এবং বিধি ৪ অনুযায়ী এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে বিধি ১২(১) অনুযায়ী তাঁদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
আদেশে বলা হয়েছে, বরখাস্ত থাকা অবস্থায় কর্মকর্তাদের নিয়মিত জনপ্রশাসন শাখায় হাজিরা দিতে হবে। অনুমতি ছাড়া তাঁরা অফিসে অনুপস্থিত থাকতে পারবেন না। নিয়ম অনুযায়ী তাঁরা খোরপোশ ভাতা পাবেন। যদিও আদেশে সরাসরি ঘুষের কথা উল্লেখ করা হয়নি, কাস্টমসের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রাপ্যতার বাইরে এত কাপড় খালাসের পেছনে ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।

