বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের হিসাবরক্ষক মো. রেজোয়ান হোসেন মাতুব্বর মাত্র ২৩ হাজার টাকার বেতনে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। আজ তিনি কোটি কোটি টাকার মালিক।
স্থানীয়দের দাবি, চাকরির মাশুলে তিনি কয়েক বছরের মধ্যে নাম ও বেনামে গড়ে তুলেছেন কয়েকটি বিলাসবহুল বাড়ি। স্থানীয় সূত্র জানায়, তার মোট সম্পদের পরিমাণ ৬ থেকে ৭ কোটি টাকা। ১৯৮৯ সালে এমএলএসএস পদে সুইপারের চাকরিতে যোগ দেন রেজোয়ান। দীর্ঘ কর্মজীবনে পদোন্নতি পেয়ে ২০১৮ সালে হিসাবরক্ষকের দায়িত্ব পান। তবে ৮ বছর ধরে একই প্রতিষ্ঠানে থেকে তিনি রাজনৈতিক ছত্রছায়া ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিপুল সম্পদ অর্জন করেছেন।
স্থানীয়রা বলছেন, পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ কাঠা জমিতে তিনি বহুতল ভবন নির্মাণ করেছেন এবং তা ভাড়া দিয়েছেন। ৭ নম্বর ওয়ার্ডে স্ত্রী কহিনূর বেগমের নামে নতুন বাড়ি কেনা হয়েছে। ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ছেলে নাইম মাতুব্বর ও ছোট মেয়ে মুনমুনের নামে দুটি আলিশান বাড়ি রয়েছে। এছাড়া নামে-বেনামে বিভিন্ন জায়গায় জমি কিনেছেন তিনি।
রেজোয়ানের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের পেনশন ও অন্যান্য কাগজপত্র ছাড়তে বিপুল পরিমাণ ঘুষ নেওয়ার। হাসপাতালের আসবাবপত্র ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করার কথাও জানা গেছে। স্থানীয়রা বলছেন, রেজোয়ান হোসেন মাতুব্বর আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায়নি। সম্প্রতি স্থানীয় সাংবাদিকরা তার দুর্নীতির বিষয়ে প্রশ্ন করতে গেলে তিনি হাসপাতালের কক্ষে তার মেয়ে পাঠিয়ে মোব তৈরি করে সাংবাদিকদের হেনস্তা করেছেন। এমনকি কিছু সাংবাদিকের নামে মিথ্যা মামলা দাখিলের অভিযোগও রয়েছে।
ভুক্তভোগী শুভঙ্কর শিকদার অভিযোগ করেন, ‘আমার মা মিনা রানী ঠাকুর ২০২০ সালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনি ছিলেন সিনিয়র স্টাফ নার্স। মায়ের পেনশনের টাকা তুলতে গেলে রেজোয়ান হোসেন মাতুব্বর আমার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকারও বেশি ঘুষ নেন। বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি।’

