কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ‘জন্মস্থান’ হিসেবে পরিচিত ঐতিহাসিক রোজ গার্ডেন কেনার নামে রাষ্ট্রের ৩৩২ কোটি টাকার ক্ষতির অভিযোগে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে এ ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
অভিযোগ পাওয়ার পর দুদক প্রথমে তথ্য যাচাই-বাছাই করে। প্রাথমিক পর্যায়ের সেই অভিযানে সংগৃহীত তথ্য ও নথির ভিত্তিতেই এখন আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধান শুরু করেছে কমিশন।
দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আক্তারুল ইসলাম বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচার প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, অনুসন্ধানে যাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঐতিহাসিক গুরুত্বের এই বাড়িটি নির্মাণ করেন হৃষিকেশ দাস। তিনি ১৯৩১ সালে প্রায় ২২ বিঘা জমির ওপর এখানকার বাগানবাড়িটি তৈরি করেন। পাঁচ বছর পর ১৯৩৬ সালে তিনি বাড়িটি বিক্রি করেন ঢাকার বই ব্যবসায়ী খান বাহাদুর মৌলভী কাজী আবদুর রশীদের কাছে। কাজী আবদুর রশীদ পরবর্তীতে সেখানে প্রভিন্সিয়াল লাইব্রেরি স্থাপন করেন।
১৯৪৯ সালের ২৩ জুন এই রোজ গার্ডেনেই প্রতিষ্ঠিত হয় পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ। পরে ১৯৫৫ সালে নাম থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে দলের নতুন নাম হয় ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ’।
পুরাকীর্তি হিসেবে সংরক্ষিত এই বাড়িটি ২০১৮ সালে কিনে নেয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। সরকারের হিসাব অনুযায়ী, ক্রয়মূল্য ছিল ৩৩১ কোটি ৭০ লাখ দুই হাজার ৯০০ টাকা। তবে এ প্রক্রিয়ায় বড় অঙ্কের অর্থ দুর্নীতির মাধ্যমে সরানো হয়েছে বলে দুদক অভিযোগ পায়।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রোজ গার্ডেন কেনাকাটায় দুর্নীতি প্রসঙ্গ আবার সামনে আসে এবং দুদক আনুষ্ঠানিকভাবে অনুসন্ধানে নামে।

