এপ্রিল থেকে আগস্ট এই পাঁচ মাসে ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য আমদানি প্রায় ৪ শতাংশ বেড়ে ৪৩৩ কোটি ৮২ লাখ ডলারে পৌঁছেছে। অপরদিকে, একই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পণ্য রফতানি কমেছে ৬ শতাংশ, যার অর্থমূল্য দাঁড়িয়েছে ৭৬ কোটি ৭৬ লাখ ডলার। ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য বিভাগের প্রকাশিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসের পরিসংখ্যানে এই তথ্য উঠে এসেছে।
গত অর্থবছরের একই সময়ে ভারত থেকে পণ্যের আমদানি ছিল ৪১৭ কোটি ৫৩ লাখ ডলার, যা বর্তমান বছরে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি প্রমাণ করে। বাংলাদেশ থেকে ভারতে পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে গত অর্থবছরের তুলনায় এই কমতির ফলে বাণিজ্যের ঘাটতি বেড়েছে, যা দেশের বাণিজ্যিক অবস্থানের জন্য উদ্বেগের বিষয়।
ভারত থেকে আমদানি করা প্রধান পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে তুলা, সিরিয়াল ও খাদ্যশস্য, পাশাপাশি খনিজ ও জ্বালানি পণ্যও রয়েছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ থেকে ভারতে রফতানির প্রধান পণ্য হিসেবে রয়েছে তৈরি পোশাক।
দুই দেশের বাণিজ্যসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে এ তারতম্য স্বাভাবিক। ভারতের পণ্য রফতানির পরিমাণ বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশি। বাংলাদেশ কাঁচামরিচ, পেঁয়াজ এবং চালের মতো নিত্যপণ্য আমদানি করতে বাধ্য হয় এবং এ কারণে বাণিজ্য ঘাটতি থেকেই যায়।
ইন্ডিয়া বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির কোষাধ্যক্ষ দেওয়ান সুলতান আহমেদ বলেছেন ‘ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি সব সময় থাকবে। তবে আমাদের রফতানি বর্তমানে ১ বিলিয়ন ডলারের ওপরে চলে এসেছে, যা দুই বছর আগের তুলনায় ভালো।’ তিনি আরও বলেন ‘আমাদের অর্থনীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং টেক্সটাইল শিল্পের জন্য ভারতের তুলার ওপর নির্ভরতা রয়েছে।’
ভারতীয় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দুই দেশের মধ্যে মোট পণ্য বাণিজ্যের অর্থমূল্য দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৯১ কোটি ৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার, যেখানে ভারত থেকে বাংলাদেশে আমদানি হয়েছে ১ হাজার ১০৬ কোটি ৫৮ লাখ ৭০ হাজার ডলার এবং রফতানি হয়েছে ১৮৪ কোটি ৪৭ লাখ ৬০ হাজার ডলারের পণ্য।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পণ্যের রফতানির মাসভিত্তিক পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এপ্রিল মাসে রফতানি কমেছে ১৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ। মে মাসে কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও জুনে আবার নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। জুলাই ও আগস্টে রফতানি পরিসংখ্যানও উদ্বেগজনক কারণ আগস্টে রফতানি কমেছে ৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
এ ধরনের পরিস্থিতি বাংলাদেশের বাণিজ্য খাতের জন্য চ্যালেঞ্জের বিষয় হলেও সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী যে চলতি অর্থবছরে রফতানির গতি আরও বাড়বে যদি অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করা যায়।