যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক সভার ফাঁকে বৈঠকে বাংলাদেশের অনুকূলে আইএমএফ থেকে অতিরিক্ত ঋণ সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি। আইএমএফের নির্বাহী কমিটির বৈঠকে এবিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ডিসেম্বরের শুরুতে ওয়াশিংটনে আইএমএফের সদর দফতরে এই বৈঠক হতে পারে।
সূত্রের মতে, নতুন সরকার ক্ষমতায় এসে পূর্ববর্তী সরকারের রেখে যাওয়া ডলার সংকট মোকাবেলায় চলমান ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ কর্মসূচির অধীনে আরও ৩ বিলিয়ন ডলার বাড়ানোর জন্য আইএমএফকে চিঠি দেয়, আইএমএফ একমত হয়। সেপ্টেম্বরে আইএমএফের একটি মিশন বাংলাদেশ সফর করে। এ সময় তারা দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক চিত্র মূল্যায়ন করেন এবং ঋণ শর্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন। আইএমএফ এক বিবৃতিতে বলেছে, ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক বৈঠকে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হবে। তারপর আইএমএফ সরকারকে অতিরিক্ত ঋণ সহায়তা দিতে প্রস্তুত হবে।
শনিবার ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক বৈঠক শেষ হয়েছে। রোববার আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বৈঠক শেষ হয়। বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর, অর্থ সচিব, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব প্রমুখ।
বৈঠকে বাংলাদেশের জন্য অতিরিক্ত ঋণ সহায়তার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরা হয়। এটি আইএমএফের জন্য কিছু নতুন সংস্কারেরও আহ্বান জানিয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সরকার সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। এগুলো সময় লাগবে।
এইপ্রেক্ষিতে আইএমএফের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই বিষয়ে এখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। তারা আইএমএফ নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে বাংলাদেশ সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন। যাতে বাংলাদেশের অতিরিক্ত সহায়তার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরবেন। কার্যনির্বাহী পরিষদই তখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। নভেম্বরের শেষ বা ডিসেম্বরের শুরুতে কার্যনির্বাহী পরিষদের বৈঠকে বাংলাদেশের ইস্যুটি উপস্থাপন করা হবে বলে জানা যায়।
সূত্র আরো জানায়, সংস্থাটির কার্যনির্বাহী পরিষদের বৈঠকে আইএমএফ ঋণ সহায়তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। বার্ষিক সভায় একটি দেশকে কীভাবে ঋণ সহায়তা দেওয়া হবে তা নিয়ে একটি নির্দেশিকা তৈরি করা হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে নির্বাহী পরিষদ পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবে।
ইতিপূর্বে,
২০২২ সালে অর্থনৈতিক সংকটের মুখে বাংলাদেশ সরকার আইএমএফের কাছে ঋণ সহায়তা চায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশকে ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে আইএমএফ। প্রথম কিস্তিটি সেই বছরের ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকেই প্রদান করা হয়। তবে, জুন মাসে তৃতীয় ধাপের ১১৫ মিলিয়ন ডলার মওকুফ করা হয়। এখন পর্যন্ত তিন কিস্তিতে বাংলাদেশ আইএমএফ থেকে মোট ২৩০ কোটি ৭০ লাখ ডলার ঋণ পেয়েছে।