যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনরায় বিজয়ের প্রভাব পড়েছে বৈশ্বিক আর্থিক বাজারে। বিশেষত, এই রাজনৈতিক পালাবদল সবচেয়ে বেশি সুবিধা এনে দিয়েছে ইলন মাস্ককে। সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ট্রাম্পের বিজয়ের প্রেক্ষাপটে মাত্র এক রাতেই মাস্কের সম্পদ বেড়েছে প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়, মাস্কের সম্পদ বৃদ্ধির পেছনে অন্যতম ভূমিকা রেখেছে টেসলা। ট্রাম্পের বিজয়ের পরপরই বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা এই প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দাম হু হু করে বাড়তে শুরু করে, যার ফলে মাস্কের সম্পদে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়। সূত্র মতে, শুধুমাত্র টেসলার শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধিতেই মাস্কের সম্পদ বেড়েছে ৪১১ মিলিয়ন ডলার।
অবশ্য ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণার পেছনে ইলন মাস্কের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। রিপাবলিকান শিবিরে প্রচারণা চালানোর জন্য মাস্ক প্রায় ১১৯ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেন, যা নির্বাচনে ট্রাম্পের পক্ষে একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সহায়তা হিসেবে কাজ করে। মাস্কের এই বিপুল অনুদান তার অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রতিফলন হিসেবেও দেখা যেতে পারে। ট্রাম্পের বিজয়ে তার সম্পদ যে এই পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে, তা হয়তো মাস্ক নিজেই আঁচ করতে পেরেছিলেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এই নতুন ১৫ বিলিয়ন ডলার দিয়ে মাস্ক বিশ্বের সব মানুষের কাছে এক ডলার করে বিতরণ করলেও তার হাতে থেকে যাবে পর্যাপ্ত অর্থ। সেই অর্থ দিয়ে তিনি চাইলে বাস্কেটবল কিংবদন্তি মাইকেল জর্ডানের পুরো সম্পত্তি কিনে নিতে পারেন, যা আনুমানিক ৩ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া মাস্ক যদি তার কোম্পানি টেসলার নতুন সাইবারট্রাক কিনতে চান, তাহলে এই বিপুল অর্থ দিয়ে তিনি প্রায় এক লাখ ৮২ হাজার সাইবারট্রাক কিনতে পারবেন। স্পোর্টসের প্রতি আগ্রহ থাকলে এই অর্থ দিয়ে ডালাস কাউবয়েসের মতো বিখ্যাত ফুটবল দলও কিনে নিতে পারেন, যার বাজার মূল্য ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
মাস্কের মোট সম্পদের পরিমাণ সম্পর্কে সিএনএন জানায়, বর্তমানে তার মোট সম্পদ ২৫০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। যদিও এই বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক, মাস্ক নিজের উদ্ভাবনী কাজের জন্যও পরিচিত। ২০২১ সালে তিনি উল্লেখ করেছিলেন যে, বছরে প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলার কর প্রদান করেন, যা তার বিপুল সম্পদের দিকটি তুলে ধরে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনরায় বিজয় এবং ইলন মাস্কের অর্থনৈতিক সুবিধা পাওয়ার এই উদাহরণটি প্রযুক্তি ও রাজনীতির পারস্পরিক সম্পর্কের আরও একটি দৃষ্টান্ত। একদিকে রাজনীতি ও অর্থনীতি যেমন একে অপরের পরিপূরক, তেমনি এই মিথস্ক্রিয়া বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তিদের সম্পদের উত্থান-পতনকেও প্রভাবিত করছে।