বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, “যেকোনো ধরনের পলিসি বাস্তবায়ন করলেও মূল্যস্ফীতি এক বছরের আগে কোনো দেশেই কমে না।” রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত তৃতীয় বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্মেলনে সোমবার (১১ নভেম্বর) এ মন্তব্য করেন তিনি। গভর্নর আশ্বস্ত করেছেন, বাংলাদেশে কোনো দুর্ভিক্ষের সম্ভাবনা নেই এবং দেশের প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। মূল্যস্ফীতি কমাতে প্রয়োজনীয় সময় উল্লেখ করে তিনি জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আরও আট মাস সময় প্রয়োজন।
ড. মনসুর বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ শুধু মুদ্রানীতির ওপর নির্ভর করছে না। পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে এলসি খোলা এবং শুল্ক শিথিলের মতো পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে দ্রব্যমূল্য কমাতে শুল্ক হ্রাসসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। “আমরা আশা করছি মূল্যস্ফীতি ৫ থেকে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হবো,” বলেন তিনি। গত তিন মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক টাকার মুদ্রাস্ফীতি ঘটায়নি বলে জানিয়েছেন গভর্নর।
ব্যাংক খাতের সংকট প্রসঙ্গে ড. মনসুর বলেন, “গত কিছু সময়ে ব্যাংক খাত ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। তবে এই সংকটের সমাধান দ্রুত হবে না।” এক ব্যাংকের ২৭ হাজার কোটি টাকার সম্পদ থেকে একটি পরিবার প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকা নিয়েছে বলে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, “আমার হাতে কোনো ম্যাজিক নেই, তবে আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, কোনো ব্যাংক বন্ধ হবে না।” দুর্বল ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে এবং পরিস্থিতির উন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে।
বেক্সিমকোতে রিসিভার নিয়োগ প্রসঙ্গে ড. মনসুর বলেন, “বেক্সিমকোর কার্যক্রম সচল রাখতেই রিসিভার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।” পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনতে বাংলাদেশ সরকার দ্বিপাক্ষিক চুক্তিসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং এ ক্ষেত্রে ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের এই বক্তব্য দেশের অর্থনৈতিক সংকট ও ব্যাংক খাতের সমস্যাগুলো সমাধানে সরকারের পদক্ষেপকে নির্দেশ করে।