কর আদায় ব্যবসার প্রবৃদ্ধির ওপর নির্ভর করে। ব্যবসায়ীরা আয় করলে কর আসবেই। তাই করদাতাদের ওপর চাপ বা ভয় দেখিয়ে নয় বরং তাদের সহায়তা করে কর আদায় বাড়াতে হবে—রাজস্ব কর্মকর্তাদের এমন পরামর্শ দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো (বিএসডব্লিউ) প্রকল্পের ‘মাইলফল উদযাপন’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ব্যবসা ও বেসরকারি খাতের উন্নয়ন ছাড়া এগোনো যাবে না। অনেকেই দেশের কম ট্যাক্স-টু-জিডিপি অনুপাত নিয়ে সমালোচনা করেন। কিন্তু ব্যবসা যদি সমৃদ্ধ না হয়, কর সংগ্রহও সম্ভব নয়।
ডিজিটাল সেবা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ
ডিজিটালাইজেশনে কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেবা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিএসডব্লিউ শুধু রাজস্ব আদায় নয় বরং জনগণকে সেবা দেওয়ার একটি প্ল্যাটফর্ম। এর মাধ্যমে একটি নতুন পথ তৈরি হচ্ছে। অন্য সংস্থাগুলোও এই যাত্রায় যুক্ত হবে এবং দেশের মানুষের জন্য ডিজিটাল সেবা নিশ্চিত করবে।
আমদানি ও রপ্তানি প্রক্রিয়া সহজ করতে চলতি বছরের ২ জানুয়ারি বিএসডব্লিউ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। এরপর ২ জুলাই থেকে ১৯টি সংস্থার শুল্কবিষয়ক সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট (সিএলপি) কেবল এ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়।
এখন পর্যন্ত মোট ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৪৯১টি সিএলপি বিএসডব্লিউ এর মাধ্যমে অনলাইনে ইস্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৮৪ শতাংশ আবেদন এক ঘণ্টার মধ্যে এবং ৯৫ শতাংশ আবেদন একদিনের মধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
করদাতাদের সম্মাননা
অনুষ্ঠানে পাঁচ করদাতাকে ই-রিটার্ন ‘চ্যাম্পিয়ন’ ঘোষণা করা হয়। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো—সোনালী ব্যাংক পিএলসি, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড, ব্র্যাক, ব্যুরো বাংলাদেশ এবং রেনেটা পিএলসি। এ প্রতিষ্ঠানগুলো বিগত করবর্ষে তাদের সর্বাধিক কর্মীর আয়কর রিটার্ন অনলাইনে দাখিল করেছে। অনুষ্ঠানে তাদের প্রতিনিধিদের হাতে সম্মাননা স্মারকও তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।

