প্রফেসর ফিরোজুল হক চৌধুরী, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটিশ নাগরিক। চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার কচুয়াই ইউনিয়নের বাসিন্দা তিনি। বয়স ৮৫ বছর। দীর্ঘদিন যুক্তরাজ্যে বসবাস করলেও দেশে আসা–যাওয়ার কারণে ব্যাংক লেনদেন চালু রেখেছিলেন।
২০১৫ সালে তিনি ইস্টার্ন ব্যাংকের নোয়াখালী চৌমুহনী শাখায় একটি সঞ্চয়ী হিসাব খোলেন। এরপর থেকে নিয়মিত টাকা জমা দেন। বিদেশ থেকেও পাঠাতেন অর্থ। বিভিন্ন সময়ে তার অ্যাকাউন্টে জমা হয় প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকা। চার বছরের মধ্যে একাধিক শাখা থেকে টাকা জমা ও উত্তোলনের কাজও করেন কিন্তু ২০১৬ সালের পর থেকে শারীরিক অসুস্থতায় দেশে আসতে পারেননি। ২০২৩ সালে একবার দেশে এসে একমাস অবস্থান করে যুক্তরাজ্যে ফিরে যান। এরপরই ঘটতে শুরু করে একের পর এক সন্দেহজনক লেনদেন।
ফিরোজুল হকের অজান্তে তার অ্যাকাউন্ট থেকে ধাপে ধাপে তুলে নেওয়া হয় সাড়ে ৭ কোটি টাকা। বেশিরভাগ অর্থ তোলা হয় চেকের মাধ্যমে। অভিযোগ উঠেছে, এসব চেকে ফিরোজুলের স্বাক্ষর ছিল না। আরও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, হিসাব খোলার সময় দেওয়া ফোন নম্বর যাচাই ছাড়াই ব্যাংক কীভাবে চেকগুলো ক্লিয়ার করল। এ ঘটনায় ব্যাংকের ভূমিকা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। নিরাপত্তা ও গ্রাহক সুরক্ষা ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফাতেমা বেগম নামে এক নারীর সঙ্গে ইস্টার্ন ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা যোগসাজশ করে এই অর্থ হাতিয়ে নেন। ফিরোজুল হকের ছেলে, বৃটিশ নাগরিক রিচার্ড চৌধুরী প্রতারণার নথি তুলে ধরেন। এতে স্পষ্ট হয়, ইস্টার্ন ব্যাংকের চট্টগ্রামের জুবিলি রোড শাখা থেকে ধারাবাহিক ভুয়া লেনদেন হয়। প্রমাণ মেলে ব্যাংক কর্মকর্তাদের সরাসরি সম্পৃক্ততারও।
নথি অনুযায়ী, ফিরোজুল হকের ইস্টার্ন ব্যাংক হিসাব নম্বর ০১১১৪৬০০৮৫৩০৯ থেকে ভুয়া স্বাক্ষরযুক্ত চেক ব্যবহার করে টাকা উত্তোলন করা হয়। অন্তত ১০টি শাখা থেকে এসব লেনদেন সম্পন্ন হয়। এরপর টাকাগুলো ফাতেমা বেগমের ব্যাংক হিসাব নম্বর ০০৩১০২০০২৭২৬৫–এ জমা দেওয়া হয়। দ্বিতীয় ধাপে ফাতেমার ছেলে সাকিব ইমাম চৌধুরী ও তার স্ত্রী সামিয়া সৈয়দের জয়েন্ট হিসাব ০০৩১৪৫০৫১২৮১৬–এ স্থানান্তরিত হয় বিপুল পরিমাণ অর্থ। পরে সাকিব তার হিসাব থেকে আবার সামিয়া সৈয়দের ব্যক্তিগত একাউন্টে অর্থ সরিয়ে দেন।
প্রতারণার শিকার হন ফিরোজুল শুধু ইস্টার্ন ব্যাংকে নয়। একই কৌশলে তার সিটি ব্যাংক হিসাব থেকে ৫৬ লাখ টাকা এবং অগ্রণী ব্যাংক থেকে আরও ১০ লাখ টাকা তুলে নেয় এই চক্র। ঘটনাটি ব্যাংক খাতের নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরীণ তদারকির বড় ঘাটতি তুলে ধরেছে। একই সঙ্গে কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার তথ্য ব্যাংক ব্যবস্থাপনা ও গ্রাহক আস্থার ওপর বড় প্রশ্ন তৈরি করছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, অ্যাকাউন্ট খোলার সময় তিনি তার ছোট বোন ফাতেমা বেগমকে নমিনি করেছিলেন। সুযোগটি কাজে লাগিয়ে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় দীর্ঘ আট বছরে বিপুল অর্থ তুলে নেন ফাতেমা।
অ্যাকাউন্ট খোলার সময় ফিরোজুল যে ফোন নম্বর দিয়েছিলেন, সেটি ছিল তার বন্ধু প্রখ্যাত নিউরো সার্জন ডা. এল এ কাদরীর। নিয়ম অনুযায়ী ব্যাংকের উচিত ছিল প্রতিটি লেনদেনের আগে সেই নম্বরে যোগাযোগ করা কিন্তু ইস্টার্ন ব্যাংক তা করেনি। বরং চেকের পেছনে লেখা একটি অচেনা নম্বরে ফোন করে যাচাই দেখিয়ে টাকা ছাড় করা হয়েছে বলে দাবি করে ব্যাংক। ২০১৫ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সময়ে ফাতেমা বেগম ধাপে ধাপে ফিরোজুলের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৭ কোটি টাকা তুলে নেন। মানবজমিনের হাতে থাকা নথিতে অন্তত ছয়টি চেকের নম্বরসহ এ তথ্যের প্রমাণ মিলেছে। এই ঘটনায় ব্যাংকের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও গ্রাহক যাচাই প্রক্রিয়া নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত তদারকি না থাকায় ব্যাংক প্রতারণার মতো ঘটনা সহজেই ঘটছে।
নথি অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি চেকের মাধ্যমে ফিরোজুল হকের জুবিলি রোড শাখার হিসাব নম্বর ০১১১৪৬০০৮৫৩০৯ থেকে ফাতেমা বেগমের ব্যাংক হিসাব ০০৩১০২০০২৭২৬৫–এ স্থানান্তর করা হয় ১ কোটি টাকা। একই কায়দায় ২০২০ সালের ১০ জুন তার নিজের অ্যাকাউন্টে সরিয়ে নেন আরও ৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এরপর ২০২৩ সালের ৮ জানুয়ারি ফিরোজুলের হিসাব থেকে ফাতেমার ছেলে সাকিব ইমাম চৌধুরীর ০০৩১৪৫০৫১২৮১৬ নম্বরে পাঠানো হয় ৩১ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
এ ছাড়া ফিরোজুলের অ্যাকাউন্ট থেকে বিভিন্ন সময়ে এফডিআরও করা হয়। ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি ২ কোটি টাকা, ২০১৯ সালের ৪ ও ১২ ফেব্রুয়ারি আরও ২ কোটি টাকা এফডিআর করা হয়। এসব এফডিআরের সুদের টাকা নিয়মিত জমা হতে থাকে সাকিব ইমাম চৌধুরীর ব্যাংক হিসাবে। ২০১৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর আরও ৯৪ লাখ টাকার একটি এফডিআর করা হয়। লেনদেনের বাইরে নগদ উত্তোলনও হয় একাধিকবার। ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর তোলা হয় ৫০ লাখ টাকা। আবার ২০১৮ সালের ১৫ জুন, ২০২০ সালের ১২ আগস্ট ও ২০২১ সালের ৬ মে চেকের মাধ্যমে মোট ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়। সব মিলিয়ে ২০১৫ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সময়ে ফিরোজুল হকের অ্যাকাউন্ট থেকে পর্যায়ক্রমে প্রায় ৭ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় এই চক্র। সম্প্রতি ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে ইস্টার্ন ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখায় আইনি নোটিশ পাঠিয়ে অর্থ ফেরত দাবি করা হয়েছে। তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এখনও কোনো জবাব দেয়নি।
বৃটিশ নাগরিক ও চট্টগ্রামের পটিয়ার কচুয়াই ইউনিয়নের বাসিন্দা অধ্যাপক ফিরোজুল হক চৌধুরী ২০২৩ সালে যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টারে নিজ বাসায় বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। মৃত্যুর পর বাংলাদেশে একটি চক্র তার স্থাবর–অস্থাবর সম্পত্তি দখলের পাঁয়তারা শুরু করে। প্রথমে তারা দাবি করে, ফিরোজুল হক ম্যানচেস্টারের একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। এ দাবির ভিত্তিতে এক বৃটিশ ডাক্তারের নামে জাল মৃত্যু সনদ তৈরি করা হয়। পরে ওই নকল সনদ ব্যবহার করে ফিরোজুল হকের ছেলে পরিচয়ে রেফাতুল কাদের চৌধুরী পটিয়ার কচুয়াই ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মৃত্যুসনদ সংগ্রহ করেন। এ কাজে সহায়তা করেন ইউপি চেয়ারম্যান এসএম ইনজামুল হক। তিনি বিধিবহির্ভূতভাবে সনদটি ইস্যু করেন।
এই ভুয়া সনদের মাধ্যমে ফিরোজুল হকের পটিয়ায় থাকা শতভাগ জমি দখল করে নেয় চক্রটি। তবে ঘটনা ধামাচাপা থাকেনি। ফিরোজুল হকের প্রকৃত ছেলে, বৃটিশ নাগরিক রিচার্ড চৌধুরী ব্রিটিশ হাইকমিশনের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ইউএনও তদন্ত শুরু করেন। দীর্ঘ অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়, মৃত্যু সনদটি জাল এবং প্রতারণার মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়েছে। তদন্ত শেষে এই চক্রের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
অধ্যাপক ফিরোজুল হক চৌধুরীর সম্পত্তির বৈধ উত্তরাধিকারী তার স্ত্রী মার্গারেট চৌধুরী, ছেলে রিচার্ড চৌধুরী ও মেয়ে সেলিনা ডুন চৌধুরী। এর বাইরে অন্য কেউ ফিরোজুলের সম্পত্তির দাবিদার নন বলে দাবি করেছেন তার ছেলে রিচার্ড চৌধুরী। বাবার মৃত্যুর পর থেকে বহুমুখী প্রতারণার বিষয়টি সামনে আসতে থাকে। রিচার্ড চৌধুরী বিষয়টি জানিয়ে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার, জেলা প্রশাসক, পটিয়ার ইউএনও, বাংলাদেশ লন্ডন হাইকমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসিতে একাধিক চিঠি দেন। তবে কোথাও থেকে কার্যকর প্রতিকার পাননি।
পরে বাংলাদেশের যুক্তরাজ্য হাইকমিশন থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি চিঠি পাঠানো হয়। তদন্ত শেষে বাংলাদেশ ব্যাংক ইস্টার্ন ব্যাংকের জালিয়াতির প্রমাণ পায়। এরপর ব্যাংকটিকে বিষয়টি সুরাহা করতে নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিন্তু ইস্টার্ন ব্যাংক ওই নির্দেশ কার্যকর করেনি। বরং ফিরোজুল হকের খোয়া যাওয়া প্রায় ৭ কোটি টাকার দায় নিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং তার ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করে রাখে। এ ঘটনায় ব্যাংক খাতের জবাবদিহি ও গ্রাহক সুরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা আবারও প্রকাশ পেয়েছে।
অভিযুক্ত সাকিব ইমাম চৌধুরীর নামে শতকোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। বিভিন্ন ব্যাংকে তার এবং পরিবারের সদস্যদের নামে খোলা একাধিক হিসাবে এসব লেনদেন সম্পন্ন হয়। নথি অনুযায়ী, সিটি ব্যাংকের সাকিব অ্যান্ড ব্রাদার্স হিসাব নম্বর ১৭৮১৯১০০০০২৪৬ ও সাকিব ইমাম চৌধুরী অ্যান্ড ফাতেমা বেগম হিসাব নম্বর ২৯৩১৪৯২৫৬৮০০১–এ লেনদেন হয়েছে প্রায় ৩০ কোটি টাকা।
ইস্টার্ন ব্যাংকে সাকিব অ্যান্ড ব্রাদার্স হিসাব নম্বর ৩১০৭০৫২১৫২১২৯৭–এ লেনদেন হয়েছে ২৫ কোটি টাকা। একই ব্যাংকে সাকিব ইমাম চৌধুরী অ্যান্ড সামিয়া সৈয়দ জয়েন্ট হিসাব নম্বর ৩১৪৫০৫১২৮১৬–এ হয়েছে ২৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এছাড়া স্মরণিকা কমিউনিটি সেন্টার হিসাব নম্বর ৩১৫০৫১৬০৫৭–এ ৫০ লাখ টাকা এবং ফাতেমা বেগম এর হিসাব নম্বর ২১১৪৪০০৬৯০৪৭–এ লেনদেন হয়েছে ২ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
ওয়ান ব্যাংকের সাকিব অ্যান্ড ব্রাদার্স হিসাব নম্বর ৩১০২০০১২৫২২–এ জমা হয়েছে ৫ কোটি টাকা। এনআরবিসি ব্যাংকের সাকিব অ্যান্ড ব্রাদার্স হিসাব নম্বর ১০৫৬১১০০০০০৯৫৬–এ লেনদেন হয়েছে ১ কোটি টাকা। ব্র্যাক ব্যাংকে সাকিব অ্যান্ড ব্রাদার্সের তিনটি হিসাবে (৪১৫০৯৮৩, ৪১৫৬৭৮১ ও ৫১৬৫৫১১) লেনদেন হয়েছে প্রায় ১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ইউসিবি ব্যাংকের সাকিব অ্যান্ড ব্রাদার্স হিসাব নম্বর ১৫৮২১০১০০০০০২৯৫০–এ জমা হয়েছে ৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
প্রাইম ব্যাংকের ফাতেমা বেগম হিসাব নম্বর ২১৭১২১১০০৮১৫৪–এ জমা হয় ২ কোটি টাকা। এছাড়া ইস্টার্ন ব্যাংকে ফাতেমা বেগমের তিনটি হিসাবে (৩১০২০০২৭২৬৫, ৫৪৮৭০০০১৩৮৪, ৪১৪৫০৩৭০৮৭৬) লেনদেন হয়েছে যথাক্রমে ১১ কোটি ৮৬ লাখ ৯৫ হাজার, ১৭ লাখ ৮৬ হাজার ও ৩ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে সাকিব ইমাম চৌধুরী ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ১২৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকার লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
ফিরোজুল হকের ছেলে রিচার্ড চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, সাকিব ইমাম চৌধুরী ও তার মা ফাতেমা বেগম প্রতারণার মাধ্যমে তার বাবার বাংলাদেশে থাকা সম্পত্তি দখল করেছেন। শুধু তাই নয়, ব্যাংকের সঙ্গে যোগসাজশ করে তারা ফিরোজুল হকের হিসাবে থাকা প্রায় ৭ কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন।
তিনি জানান, “আমার বাবার ব্যাংক থেকে অন্য কেউ টাকা তুলে নিতে পারে—এটা নজিরবিহীন। ২০২৩ সালে বাবা বাংলাদেশ সফরে গেলে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। তখন বিল পরিশোধ করতে গিয়ে আমরা দেখি হিসাব থেকে টাকা উধাও। পরে বৃটেনে ফিরে বাবার শারীরিক অবস্থা খারাপ হয় এবং একই বছর তিনি মারা যান। মৃত্যুর পরও তারা নকল সনদ তৈরি করে বাবার সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করে। আমি হাইকমিশনের সহায়তায় বিষয়টি ঠেকাই। এখন মামলা চলমান রয়েছে। আমি এই প্রতারণার বিচার চাই।”
অন্যদিকে অভিযুক্ত সাকিব ইমাম চৌধুরী অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন, ফিরোজুল হকের হিসাবে কখনো ১০ কোটি টাকা ছিল না, বরং সেখানে মাত্র ৩ কোটি টাকা ছিল এবং সেটিও তার বড় ভাইয়ের। সাকিব বলেন, “আমি কখনো ফিরোজুল হকের হিসাব থেকে টাকা তুলি নাই। তবে আমার হিসাবে ৩১ লাখ টাকা পাঠানো হয়েছিল। আমার মা ফাতেমা বেগম ছিলেন ওই হিসাবের নমিনি ও পাওয়ার অব অ্যাটর্নি। তাই তিনি টাকা তুলতে পারেন, তবে কত টাকা তুলেছেন তা আমি জানি না। আমার হিসাবে ফাতেমা বেগমের কোনো টাকা আসেনি।”
নিজের ব্যাংক হিসাবে শতকোটি টাকার লেনদেনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ব্যাখ্যা দেন, “আমি গাড়ি আমদানির ব্যবসায় জড়িত। তাই লেনদেন হয়েছে। তবে ১২৩ কোটি টাকার মতো অঙ্ক কখনো হয়নি।” ফিরোজুল হকের ভুয়া মৃত্যুসনদ তৈরি করে সম্পত্তি দখলের অভিযোগও তিনি প্রত্যাখ্যান করেন।