Close Menu
Citizens VoiceCitizens Voice
    Facebook X (Twitter) Instagram YouTube LinkedIn WhatsApp Telegram
    Citizens VoiceCitizens Voice Sun, Sep 28, 2025
    • প্রথমপাতা
    • অর্থনীতি
    • বানিজ্য
    • ব্যাংক
    • পুঁজিবাজার
    • বিমা
    • কর্পোরেট
    • বাংলাদেশ
    • আন্তর্জাতিক
    • আইন
    • অপরাধ
    • মতামত
    • অন্যান্য
      • খেলা
      • প্রযুক্তি
      • বিনোদন
      • সাহিত্য
      • ভিডিও
    Citizens VoiceCitizens Voice
    Home » দীর্ঘমেয়াদী ঋণ খেলাপির ফাঁদে ব্যাংকিং ব্যবস্থা
    অর্থনীতি

    দীর্ঘমেয়াদী ঋণ খেলাপির ফাঁদে ব্যাংকিং ব্যবস্থা

    কাজি হেলালSeptember 28, 2025
    Facebook Twitter Email Telegram WhatsApp Copy Link
    খেলাপি ঋণে
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Telegram WhatsApp Email Copy Link

    দীর্ঘমেয়াদী খেলাপি ঋণের ফাঁদে বাংলাদেশ ব্যাংকিং ব্যবস্থা মারাত্মক সংকটে পড়েছে। খেলাপি ঋণের পরিমাণ দিন দিন বাড়তে থাকায় ব্যাংকগুলোর আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার সক্ষমতা দুর্বল হচ্ছে, নতুন ঋণ বিতরণে বাঁধা তৈরি হচ্ছে এবং পুরো অর্থনীতিতেই এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজন কাঠামোগত সংস্কার, খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধারে কঠোর আইন প্রয়োগ, স্বচ্ছ ঋণ অনুমোদন নীতি এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত সুশাসন।

    বাংলাদেশের ব্যাংক খাত আজ এক গভীর সংকটের মুখোমুখি। বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ এখন উন্নয়নের হাতিয়ার না হয়ে উল্টো খেলাপির বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতি বছরই ব্যাংকগুলোর ব্যালান্সশিটে নন-পারফর্মিং লোনের অঙ্ক বেড়ে যাচ্ছে, যার একটি বড় অংশ দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্পভিত্তিক ঋণ। শিল্প ও অবকাঠামো উন্নয়নের নামে নেওয়া অনেক ঋণ সময়মতো ফেরত আসছে না; বরং পুনঃতফসিলের জালে আটকে থেকে ব্যাংকের মূলধন ক্ষয় করছে। এর ফলে একদিকে ব্যাংকগুলোর আর্থিক স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়ছে, অন্যদিকে সাধারণ আমানতকারীর আস্থা নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে।

    অর্থনীতিবিদদের মতে, ব্যাংকগুলো যখন দীর্ঘ মেয়াদে ঋণ দেয়, তখন খেলাপির ঝুঁকি বহুগুণে বেড়ে যায়। খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়তে থাকলে ব্যাংকগুলো নতুন ঋণ বিতরণে অক্ষম হয়ে পড়ে, ফলে বিনিয়োগ কমে যায় এবং অর্থনীতিতে এক ধরনের দুষ্টচক্র তৈরি হয়। এতে শুধু ব্যাংক খাত নয়, পুরো অর্থনীতি গভীর চাপের মুখে পড়ে।

    আন্তর্জাতিক অর্থনীতির ধাক্কা, অভ্যন্তরীণ শিল্পের দুর্বলতা, অনিয়ম ও শিথিল তদারকি, সব মিলিয়ে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ আজ এক “দ্বিমুখী অস্ত্র”। এটি যেমন উন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে, তেমনি বাড়িয়ে দিতে পারে খেলাপির দুঃস্বপ্ন। বর্তমান পরিস্থিতি তাই শুধু ব্যাংক খাত নয়, গোটা অর্থনীতির জন্যই এক গুরুতর সতর্কবার্তা।

    বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ক্রমেই অস্বাভাবিক হারে বেড়ে চলেছে। জানা গেছে, ২০২৪ সালের জুনে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা, যা এই বছরের জুলাই ২০২৫ নাগাদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩ লাখ ১৯ হাজার ৩৭ কোটি টাকা। এটি শুধু একটি উদ্বেগজনক চিত্রই নয়, বরং গোটা ব্যাংকিং ব্যবস্থার জন্য এক গুরুতর সংকেত।

    সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো। এতে দেখা যায়, গত জুন শেষে সোনালী, রূপালী, জনতা, অগ্রণী, বেসিক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে (বিডিবিএল) আগের প্রন্তিকের চেয়ে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা বেড়ে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৯ হাজার ১৪০ কোটি টাকা। যা এসব ব্যাংকের বিতরণকৃত মোট ঋণের প্রায় ৪৫ শতাংশ। আর এর ৫৭ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৮৫ হাজার কোটি টাকা শীর্ষ ২০ খেলাপির দখলে। আন্তর্জাতিক নিয়মে মোট ঋণের ৫ শতাংশ পর্যন্ত খেলাপি গ্রহণযোগ্য। গত মার্চ শেষে এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ৪৬ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা।

    এসব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) সঙ্গে বৈঠক করে খেলাপি ঋণ ক্রমে বাড়তে থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি খেলাপি ঋণ আদায় বাড়াতে কার্যকর পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষের বৈঠকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেকসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে ব্রিফ করা হয়নি। তবে বৈঠক সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের বরাত দিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পাশাপাশি মূলধন ঘাটতি, ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদ, প্রভিশন ঘাটতিসহ বিভিন্ন সূচক উল্লেখ করে বৈঠকে একটি উপস্থাপনা দেওয়া হয়।

    এর বাইরে বেসরকারি খাতের বেশ কয়েকটি ব্যাংক যেমন: ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক এর মধ্যেও খেলাপি ঋণের চাপ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে।

    সম্প্রতি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) প্রকাশিত “ননপারফর্মিং লোনস ওয়াচ ইন এশিয়া ২০২৫” প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে বর্তমানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২০ দশমিক ২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে, যা আগের বছরের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেশি। এই আন্তর্জাতিক সংস্থার বিশ্লেষণও স্পষ্ট করছে যে, দেশের ব্যাংক খাত এখন এক ভয়াবহ ঝুঁকির মুখে।

    অর্থনীতিবিদদের মতে, খেলাপি ঋণের এমন ভয়াবহ বৃদ্ধির পেছনে দায়ী শিথিল নিয়মকানুন, রাজনৈতিক প্রভাব এবং ব্যাংক পরিচালনায় অব্যবস্থাপনা। যদি দ্রুত কার্যকর সংস্কার না আনা হয়, তবে ব্যাংক খাত অর্থনীতির শক্তি হওয়ার বদলে উল্টো এক বড় বোঝায় পরিণত হবে।

    খেলাপি ঋণের ফাঁদে পড়ার কারণ: বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ দীর্ঘদিন ধরেই একটি বড় সংকট। বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদী ঋণের ক্ষেত্রে এই সমস্যা আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। ব্যাংকগুলো অনেক সময় ১২ থেকে ১৫ বছর কিংবা তারও বেশি মেয়াদের ঋণ প্রদান করে থাকে। কিন্তু এত দীর্ঘ মেয়াদের ঋণ ব্যবস্থাপনা ও ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ কঠিন হওয়ায় এগুলো সহজেই খেলাপিতে পরিণত হচ্ছে।

    ব্যাংক খাতে দুর্বল সুশাসনও খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং অস্বচ্ছ ঋণ অনুমোদন প্রক্রিয়া প্রায়ই এমন ঋণ বিতরণ করে, যা প্রকৃতপক্ষে ফেরত আসার সম্ভাবনা খুব কম। এর ফলে ব্যাংকগুলো যখন খেলাপি ঋণ আদায় করতে পারে না, তখন আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতেও সমস্যায় পড়ে। এতে ব্যাংকের তারল্য সংকট তৈরি হয় এবং নতুন ঋণ বিতরণ ব্যাহত হয়।

    আমানতকারীর আস্থা হ্রাসও একটি বড় সমস্যা। খেলাপি ঋণ বাড়তে থাকলে সাধারণ মানুষ ব্যাংকের প্রতি আস্থা হারায়। তারা মনে করে, তাদের সঞ্চিত অর্থ নিরাপদ নয়। ফলে ব্যাংকগুলোর তহবিল সংগ্রহের খরচ বেড়ে যায়, সুদহার বাড়াতে হয় এবং সামগ্রিক মুনাফা কমে আসে।

    দীর্ঘমেয়াদী ঋণ কেন খেলাপিতে পরিণত হচ্ছে তার আরও কিছু কাঠামোগত কারণ রয়েছে। অনেক সময় আর্থিক সংস্থাগুলো ঋণ দেওয়ার আগে যথাযথভাবে ঝুঁকি মূল্যায়ন করে না। বড় ঋণের ক্ষেত্রে নগদ প্রবাহ ও প্রকল্পের টেকসইতা যাচাই না করা হলে ভবিষ্যতে তা খেলাপির দিকে ঠেলে দেয়। আবার দেখা যায় বড় কর্পোরেট গ্রাহকরা একই সঙ্গে একাধিক ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করেন। তারা সঠিকভাবে আর্থিক ব্যবস্থাপনা করতে ব্যর্থ হলে ব্যাপক আকারে খেলাপি ঋণ জমা হয়।

    বিশ্ব অর্থনীতির ধাক্কা এবং রপ্তানি খাতের অস্থিরতাও দীর্ঘমেয়াদী ঋণ শোধে প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে টেক্সটাইল ও রেডিমেড গার্মেন্টস শিল্পে বৈশ্বিক চাহিদা ও দামের ওঠানামার কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান সময়মতো ঋণ শোধ করতে পারছে না। এর বাইরে খেলাপি ঋণকে সাময়িকভাবে কম দেখানোর জন্য ঋণ পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠন করা হলেও তা মূল সমস্যার সমাধান করে না, বরং দীর্ঘমেয়াদে ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তোলে।

    সবশেষে আইনি দুর্বলতার ফলে দীর্ঘসূত্রিতাও একটি বড় প্রতিবন্ধকতা। খেলাপি ঋণ আদায়ে কার্যকর ও দ্রুত আইনি ব্যবস্থা না থাকায় ব্যাংকগুলো বিপুল অর্থ ফেরত পেতে ব্যর্থ হচ্ছে। আদালতে হাজার হাজার মামলা বছরের পর বছর ঝুলে থাকায় খেলাপি ঋণের টাকা আটকে যাচ্ছে এবং ব্যাংক খাতের সংকট আরও গভীর হচ্ছে। ফলস্বরূপ দীর্ঘমেয়াদী খেলাপি ঋণ শুধু ব্যাংকিং ব্যবস্থার স্থিতিশীলতাকেই নয়, দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিকেও মারাত্মক ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে।

    দীর্ঘমেয়াদী খেলাপি ঋণের প্রভাব: খেলাপি ঋণের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা শুধু ব্যাংক খাতেই নয়, গোটা অর্থনীতিতেই অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে। ব্যাংকগুলো যখন খেলাপি ঋণের চাপে পড়ে, তখন তাদের মূলধন সংকুচিত হয় এবং আর্থিক খাতের ওপর আস্থা নড়বড়ে হয়ে যায়। এর ফলে নতুন ঋণ বিতরণে অনীহা দেখা দেয়, যা সরাসরি বিনিয়োগকে হ্রাস করে। বিনিয়োগ কমে গেলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয় এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিও ব্যাহত হয়।

    বর্তমান সময়ে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার সংকট ও আমদানি ব্যয়ের চাপের সঙ্গে যুক্ত হয়ে খেলাপি ঋণ অর্থনীতির জন্য এক জটিল পরিস্থিতি তৈরি করেছে। ব্যবসায়ীরা স্বাভাবিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছেন না; পুঁজিবাজারেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। দীর্ঘমেয়াদে এই প্রবণতা দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

    ফলে খেলাপি ঋণের এই ফাঁদ শুধু ব্যাংকের ব্যালান্সশিটের সমস্যায় সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি একে একে বিনিয়োগ, উৎপাদন, কর্মসংস্থান ও সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে চাপে ফেলে দিচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে আরও বড় আর্থিক ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

    ফাঁদ থেকে মুক্তির উপায়: বাংলাদেশের ব্যাংক খাতকে খেলাপি ঋণের গভীর সংকট থেকে উদ্ধার করতে হলে প্রথমেই প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদী কাঠামোগত সংস্কার। ব্যাংকগুলোতে স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ছাড়া এই সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। ঋণ অনুমোদন থেকে শুরু করে পুনরুদ্ধার পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে কঠোর নীতি, জবাবদিহি এবং তদারকি নিশ্চিত করতে হবে।

    যাঁরা ঋণের অপব্যবহার করেছেন বা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ঋণ নিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া অপরিহার্য। দীর্ঘদিন ধরে আদালতে ঝুলে থাকা হাজারো মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি এবং ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিলে ভবিষ্যতের জন্য একটি শক্ত বার্তা যাবে। একই সঙ্গে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত একটি স্বচ্ছ ঋণ নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে, যাতে প্রকৃত যোগ্য উদ্যোক্তারা ঋণ পান এবং অপব্যবহারকারীরা বাদ পড়েন।

    খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধারের জন্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বিশেষায়িত সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি (Asset Management Company) গঠন করা যেতে পারে। এই ধরনের প্রতিষ্ঠান ব্যাংকগুলোর অনাদায়ী ঋণ কিনে নিয়ে তা আলাদা ব্যবস্থাপনায় পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করতে পারে। পাশাপাশি খেলাপি ঋণের সংজ্ঞা সময়োপযোগী করা দরকার, যাতে ঋণখেলাপিদের সহজ সুযোগ দিয়ে পুনঃতফসিল বা ‘রিশিডিউলিং’-এর আড়ালে সমস্যাকে লুকানো না যায়।

    সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো রাজনৈতিক সদিচ্ছা। খেলাপি ঋণ সমস্যার মূলে যে রাজনৈতিক প্রভাব, তা কাটিয়ে উঠতে না পারলে কোনো সংস্কারই স্থায়ী সমাধান আনতে পারবে না। নীতিনির্ধারকদের দৃঢ় অবস্থান ও সৎ প্রয়াস ছাড়া ব্যাংক খাতের স্থিতিশীলতা ফেরানো সম্ভব নয়। ফলে বলা যায় কাঠামোগত সংস্কার, স্বচ্ছ নীতি, কঠোর আইন প্রয়োগ এবং দৃঢ় রাজনৈতিক সদিচ্ছার সমন্বয়েই ব্যাংক খাতকে খেলাপি ঋণের ফাঁদ থেকে মুক্ত করা সম্ভব।

    বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত আজ দীর্ঘমেয়াদী ঋণ খেলাপির ফাঁদে জর্জরিত, যা কেবল আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর স্থিতিশীলতাকেই নয়, পুরো অর্থনীতিকেই ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। ঋণ আদায়ে দুর্বলতা, রাজনৈতিক প্রভাব, অস্বচ্ছ নীতিমালা ও আইনি জটিলতা এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই অবস্থায় কাঠামোগত সংস্কার, কঠোর আইন প্রয়োগ, স্বচ্ছ ঋণ অনুমোদন ব্যবস্থা এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া কোনো স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। ব্যাংকিং খাতে আস্থা ফিরিয়ে আনা কেবল অর্থনীতির প্রাণশক্তি টিকিয়ে রাখার জন্যই নয়, বরং আমানতকারী ও বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষার জন্যও অপরিহার্য। এখনই যদি সাহসী ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া না হয়, তবে খেলাপি ঋণ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে শিকলবন্দী করে ফেলবে।

    Share. Facebook Twitter LinkedIn Email Telegram WhatsApp Copy Link

    সম্পর্কিত সংবাদ

    অর্থনীতি

    ভাই–বোনের টাকায় করমুক্তি, শ্বশুরবাড়ির টাকায় কর বাধ্যতামূলক

    September 28, 2025
    বাংলাদেশ

    আবাসন বিপ্লবের সফল পথপ্রদর্শক আহমেদ আকবর

    September 28, 2025
    অর্থনীতি

    ব্যবসায়ীরা ই-রিটার্ন ব্যবহার করে কর দিতে এগিয়ে আসুন

    September 28, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    সর্বাধিক পঠিত

    ক্রেতারা ভারত-চীন ছাড়ছে, বাংলাদেশ পাচ্ছে অর্ডার

    অর্থনীতি August 15, 2025

    সব ব্যবসায়ী ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপী নয়

    মতামত January 13, 2025

    বরিশালের উন্নয়ন বঞ্চনা: শিল্প, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতে নেই অগ্রগতি

    মতামত April 22, 2025

    টেকসই বিনিয়োগে শীর্ষে থাকতে চায় পূবালী ব্যাংক

    অর্থনীতি August 15, 2025
    সংযুক্ত থাকুন
    • Facebook
    • Twitter
    • Instagram
    • YouTube
    • Telegram

    EMAIL US

    contact@citizensvoicebd.com

    FOLLOW US

    Facebook YouTube X (Twitter) LinkedIn
    • About Us
    • Contact Us
    • Privacy Policy
    • Comment Policy
    • Advertisement
    • About Us
    • Contact Us
    • Privacy Policy
    • Comment Policy
    • Advertisement

    WhatsAppp

    01339-517418

    Copyright © 2025 Citizens Voice All rights reserved

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.