ইসলামী ব্যাংকের শরীয়াহ কমিটিতে সদস্য হতে হলে এবার থেকে থাকতে হবে নির্দিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতা। এত দিন শুধুমাত্র পরিচিত ইসলামী ব্যক্তিত্ব হলেই চলত, তবে নতুন নির্দেশনায় বাংলাদেশ ব্যাংক পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে—শুধু খ্যাতি নয়, প্রয়োজন নির্ভরযোগ্য শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা।
গতকাল রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করে। এতে বলা হয়েছে, শরীয়াহ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য হতে হলে ইসলামিক ফিকহ, উসুলুল ফিকহ, ইসলামিক ইকোনমিকস বা ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি থাকতে হবে। শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি ইসলামী ব্যাংকিং ও অর্থনীতিতে গবেষণা, প্রকাশনা বা বাস্তব অভিজ্ঞতাকেও বিশেষ যোগ্যতা হিসেবে ধরা হবে। অর্থাৎ, শুধু ডিগ্রি থাকলেই হবে না—প্রমাণ করতে হবে কাজের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি ইসলামী ব্যাংকে সর্বনিম্ন ৩ জন ও সর্বোচ্চ ৫ জন শরীয়াহ কমিটির সদস্য থাকতে পারবেন। এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ তিনটি ব্যাংকের শরীয়াহ কমিটিতে কাজ করার সুযোগ পাবেন। তবে টানা ছয় বছর দায়িত্ব পালনের পর অন্তত দুই বছরের বিরতি নিতে হবে। আগে শরীয়াহ কমিটির ভূমিকা সীমিত ছিল কেবল পরামর্শে। এখন থেকে তারা শুধু পরামর্শ দেবেন না, বরং ব্যাংকের শরীয়াহভিত্তিক কার্যক্রমে সমস্যা দেখলে সংশোধনের নির্দেশও দিতে পারবেন। নির্দেশনা মানা না হলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে ব্যাখ্যা দিতে হবে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে।
বাংলাদেশে বর্তমানে ১০টি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ব্যাংক ও কয়েকটি সাধারণ ব্যাংকের ইসলামী শাখা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসব ব্যাংকে শরীয়াহ কমিটি নিশ্চিত করে যে ব্যাংকিং কার্যক্রম শরীয়াহ অনুযায়ী চলছে কি না। নতুন কোনো ব্যাংকিং পণ্য চালু করার ক্ষেত্রেও তাদের অনুমোদন জরুরি। এত দিন এই কমিটিতে সদস্য হওয়ার জন্য কোনো শিক্ষাগত বাধ্যবাধকতা ছিল না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের দাবি, নতুন নিয়ম কার্যকর হলে ইসলামী ব্যাংকিং খাত হবে আরও স্বচ্ছ ও দক্ষ। এতে গ্রাহকের আস্থা বাড়বে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের ইসলামী ব্যাংকিং আরও গ্রহণযোগ্যতা পাবে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আগামী ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে নতুন নিয়ম কার্যকর হবে। এর আগে সব ব্যাংককে তাদের শরীয়াহ কমিটি পুনর্গঠন করে নতুন শর্তে মানিয়ে নিতে হবে।

