তালিকাভুক্ত যমুনা ব্যাংক পিএলসির ৮০০ কোটি টাকার বন্ডে সম্মতি দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গতকাল এক চিঠির মাধ্যমে অনুমোদন দেয় সংস্থাটি। পরে এক মূল্যসংবেদনশীল তথ্যের মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়েছে যমুনা ব্যাংক।
তথ্যানুসারে, বন্ডটির নাম ‘যমুনা ব্যাংক সাব-অর্ডিনেটেড বন্ড–৫’। এটি নন–কনভার্টিবল, আনসিকিউরড, ফুললি রিডিমেবল ও ফ্লোটিং রেট সুবিধাসম্পন্ন। প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে ব্যাংকটি ১৬ হাজার ইউনিট ইস্যু করবে। প্রতি ইউনিটের অভিহিত ও ইস্যু মূল্য ৫ লাখ টাকা। রেফারেন্স রেটের সঙ্গে কুপন মার্জিন যোগ করে কুপন রেট নির্ধারিত হবে। এ বন্ড থেকে তোলা অর্থে মূলধনভিত্তি শক্তিশালী করবে ব্যাংকটি। এর আগে বিএসইসির ৯৭৪তম কমিশন সভায় বন্ডটি অনুমোদন করা হয়।
আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি–জুন) ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩ টাকা ৩১ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে তা ছিল ৩ টাকা ২৮ পয়সা (পুনর্মূল্যায়িত)। দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল–জুন) ইপিএস দাঁড়ায় ১ টাকা ৪০ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ১ টাকা ৫৩ পয়সা (পুনর্মূল্যায়িত)। ৩০ জুন ২০২৫ শেষে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৪ টাকা ৫৮ পয়সায়।
সর্বশেষ ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২৪ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ২৪ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে ব্যাংকটি। এর মধ্যে ১৭ দশমিক ৫০ শতাংশ নগদ এবং ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ। ওই বছরে ইপিএস হয় ৩ টাকা ১৭ পয়সা, আগের বছর যা ছিল ২ টাকা ৬৮ পয়সা। একই সময়ে এনএভিপিএস দাঁড়ায় ২৪ টাকা ৬১ পয়সায়।
এর আগের ২০২৩ সালে ব্যাংকটি ১৭ দশমিক ৫০ শতাংশ নগদ ও ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছে। সে সময় ইপিএস ছিল ২ টাকা ৯১ পয়সা, আগের বছরে তা ছিল ১ টাকা ৯৫ পয়সা (পুনর্মূল্যায়িত)। ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ শেষে এনএভিপিএস দাঁড়ায় ২৪ টাকা ৬৭ পয়সায়। ২০২২ সালেও ব্যাংকটি একই হারে (১৭ দশমিক ৫০ শতাংশ নগদ ও ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ স্টক) লভ্যাংশ দিয়েছে। এর আগে ২০২১ ও ২০২০ সালে শেয়ারহোল্ডাররা পেয়েছেন ১৭ দশমিক ৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ।
ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (সিআরএবি) সর্বশেষ মূল্যায়নে যমুনা ব্যাংকের ঋণমান দীর্ঘমেয়াদে ‘ডাবল এ ওয়ান’ এবং স্বল্পমেয়াদে ‘এসটি ওয়ান’ বলে জানিয়েছে। ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্যের ভিত্তিতে এ রেটিং প্রকাশ করা হয়।
২০০৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় যমুনা ব্যাংক। ব্যাংকটির অনুমোদিত মূলধন ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, পরিশোধিত মূলধন ৯৩৯ কোটি ৩৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং রিজার্ভে রয়েছে ১ হাজার ২৩১ কোটি ৬২ লাখ টাকা। বর্তমানে মোট শেয়ার সংখ্যা ৯৩ কোটি ৯৩ লাখ ৩৭ হাজার ৬৩০। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকরা ধারণ করছেন ৪০ দশমিক ৯৮ শতাংশ শেয়ার। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে দশমিক ২৫ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ধরে রেখেছেন বাকি ৫৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ শেয়ার।