পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের রপ্তানির বিপরীতে নগদ প্রণোদনার জন্য এক হাজার কোটি টাকা ছাড় দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এ ছাড়ের পাশাপাশি রেমিট্যান্সে ২.৫ শতাংশ প্রণোদনার জন্যও এক হাজার কোটি টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত দুটি চিঠি হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয় বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে এ অর্থ ছাড় নিশ্চিত করবে।
রপ্তানি প্রণোদনা সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়েছে, রপ্তানিমুখী দেশীয় বস্ত্র, হিমায়িত চিংড়ি ও অন্যান্য মাছ, চামড়াজাত দ্রব্যসহ অনুমোদিত অন্যান্য খাতের পণ্য রপ্তানির জন্য প্রণোদনা দেওয়া হবে। একই সঙ্গে তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে এক শতাংশ হারে বিশেষ নগদ সহায়তা রয়েছে। এসব প্রণোদনার প্রথম কিস্তিতে এক হাজার কোটি টাকা ছাড় করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের বাজেটে রপ্তানি প্রণোদনার জন্য মোট ৯ হাজার ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সাধারণত চার কিস্তিতে এই অর্থ ছাড় করা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে অর্থ বিতরণ করবে। যথাযথ প্রক্রিয়া শেষে শেষ পর্যন্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে রপ্তানিকারকরা প্রণোদনা পাবেন।
বাংলাদেশ ২০২৬ সালের নভেম্বরে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হয়ে যাবে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও)-এর নিয়ম অনুযায়ী এলডিসি থেকে উত্তরণের পর কোনো রকম রপ্তানি প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা দেওয়া যাবে না। তাই সরকার প্রাথমিকভাবে ২০২৬ সালের জুলাই থেকে রপ্তানি প্রণোদনা ধীরে ধীরে প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
কিন্তু পরবর্তীতে তিন কারণে প্রত্যাহারের সময়সীমা পাঁচ মাস পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে– যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কারোপ, স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য রপ্তানিতে ভারতের বিধিনিষেধ, এবং গত বছরের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর শিল্প খাতে অস্থিরতা। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ৪৩ খাতে রপ্তানি প্রণোদনা ও নগদ সহায়তা আগের মতোই বহাল রাখা হয়েছে। জাহাজীকরণ পণ্যের ক্ষেত্রে প্রণোদনার হার পণ্যভেদে ০.৩০ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ।
প্রবাসীদের বৈধভাবে রেমিট্যান্স দেশে পাঠানোর জন্য সরকার ২.৫ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেয়। চলতি বাজেটে বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে প্রথম কিস্তির এক হাজার কোটি টাকা ছাড় করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এ প্রণোদনা বিতরণ করবে।
গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিদেশ থেকে প্রবাসীরা রেকর্ড ৩০.৩৩ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠিয়েছিলেন। সরকারের দেওয়া ২.৫ শতাংশ প্রণোদনা সেই রেমিট্যান্সের জন্য প্রযোজ্য। চলতি অর্থবছর প্রবাসী আয় ভালোভাবে শুরু হয়েছে। জুলাই মাসে প্রবাসী আয়ে ২৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে।

