টানা দুই মাস রপ্তানিতে ভাটা থাকলেও বাংলাদেশের সামগ্রিক রপ্তানি আয় ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। চলতি অর্থবছরের (২০২৫–২৬) প্রথম প্রান্তিক বা জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর—তিন মাস মিলিয়ে প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৬৪ শতাংশে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)-এর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসে তৈরি পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৩৬২ কোটি ৭৬ লাখ ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ কোটি ৫৩ লাখ ডলার বা ৪ দশমিক ৬১ শতাংশ কম। গত বছর সেপ্টেম্বরে আয় ছিল প্রায় ৩৮০ কোটি ২৯ লাখ ডলার।
তবে একক মাসে আয় কমলেও প্রথম তিন মাসের সামগ্রিক চিত্র উল্টো ইতিবাচক।
জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৩১ কোটি ৩৯ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬৫ কোটি ৭৬ লাখ ডলার বেশি।
পোশাক খাত এখনো শীর্ষে
সবচেয়ে বেশি আয় এসেছে তৈরি পোশাক খাত থেকে। সেপ্টেম্বরে পোশাক রপ্তানি থেকে আয় হয় ২৮৩ কোটি ৯৭ লাখ ৫০ হাজার ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ কম।
তবে তিন মাসের হিসাবে এই খাতের রপ্তানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৯৭ কোটি ৪ লাখ ডলারে, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ৯৫১ কোটি ৪৫ লাখ ডলার।
অন্য খাতের মিশ্র চিত্র
- কৃষিপণ্যে রপ্তানি কমেছে ২ দশমিক ৩৭ শতাংশ,
- পাট ও পাটজাত পণ্যে ১ দশমিক ০৪ শতাংশ,
- গৃহস্থালির পণ্যে শূন্য দশমিক ৫৪ শতাংশ।
অন্যদিকে প্রিন্টেড ম্যাটেরিয়ালস, ইঞ্জিনিয়ারিং ও চামড়া খাতের আয় বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে।
- প্রিন্টেড ম্যাটেরিয়ালসে প্রবৃদ্ধি ৫৭ দশমিক ৫০ শতাংশ,
- ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যে ৩৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ,
- চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যে ৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
জুলাইয়ে ছিল সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি
অর্থবছরের প্রথম দুই মাস (জুলাই–আগস্ট) রপ্তানি আয় বেড়েছিল ১০ দশমিক ৬১ শতাংশ, মোট আয় ছিল ৮ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলার।
আগস্টে আয় দাঁড়ায় ৩ দশমিক ৯২ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ কম।
তবে জুলাইয়ে রপ্তানি আয় ছিল ২৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
সেই মাসে রপ্তানি হয়েছিল ৪৭৭ কোটি ডলার, যা আগের বছরের জুলাইয়ের তুলনায় প্রায় ২৫ শতাংশ বেশি।
সেপ্টেম্বরে সামান্য পতন থাকলেও সামগ্রিকভাবে রপ্তানি খাত আবারও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। পোশাক রপ্তানি এখনো মূল চালিকাশক্তি, যদিও অন্যান্য খাতেও ধীরে ধীরে প্রবৃদ্ধির ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে।

